এই স্টেডিয়ামের বাইরেই হয় বিস্ফোরণ, ভেতরে ইফতিকারের ঝড়। ফাইল ছবি
কোয়েটায় স্টেডিয়ামে অদূরে বিস্ফোরণ হওয়ার কারণে মাঝপথেই থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল ম্যাচ। সেই ম্যাচ আদৌ আর খেলা হবে কিনা, সেটা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছিল। খেলা তো হলই, কোয়েটার দর্শকরা সাক্ষী থাকলেন অভাবনীয় ঘটনার। দেখতে পেলেন ছয় বলে ছয় ছক্কা!
কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স বনাম পেশোয়ার জালমির প্রদর্শনী ম্যাচ ছিল। প্রথমে ব্যাট করে কোয়েটাই। সেই দলের হয়ে মারকুটে মেজাজে ছিলেন ব্যাটার ইফতিকার আহমেদ। ইনিংসের সর্বশেষ ওভার করতে আসেন পেশোয়ারের বোলার ওয়াহাব রিয়াজ। তাঁর ছ’টি বলেই ছক্কা মারেন ইফতিকার। ৫০ বলে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাঁর ঝোড়ো ইনিংসের সৌজন্যে পাঁচ উইকেটে ১৮৪ রান তোলে কোয়েটা।
শুরু থেকেই মারকুটে মেজাজে ব্যাট করছিলেন ইফতিকার। প্রথমে আমির জামিলের ওভারে পরপর বাউন্ডারি মারেন। দ্রুত সতীর্থ ব্যাটার খুশদিল শাহের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়ে নেন। খুশদিল ৩৬ রানে ফিরলেও ইফতিকার থামতে রাজি ছিলেন না। ১৮তম ওভারে জামালকে ফাইন লেগের উপর দিয়ে ছয় মারেন। ৪২ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন। পরের ৪৪ রান করতে নিয়েছেন মাত্র আট বল!
শুধু ব্যাট হাতে নয়, বল হাতেও কামাল করলেন তিনি। পেশোয়ারের হয়ে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে শুরু করা মহম্মদ হ্যারিসকে ফিরিয়ে দেন। তার পরে আউট করেন সাইম আয়ুবকে। শেষ দিকে ভাল বল করে নাসিম শাহ কোয়েটাকে জিতিয়ে দেন। বাবরও কিছু করতে পারেননি।
এই ম্যাচ ছিল ঘটনাবহুল। রবিবার দুপুরে কোয়েটায় বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণের কয়েক মাইল দূরেই চলছিল এই ম্যাচ। সেই ম্যাচ মাঝপথেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাবর এবং আফ্রিদিকে নিরাপদে সাজঘরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
কোয়েটার নবাব আকবর বুগতি স্টেডিয়ামে চলছিল পাকিস্তান সুপার লিগের এই প্রদর্শনী ম্যাচ। পুলিশ লাইন্স এলাকায় বিস্ফোরণের পরে ম্যাচ কিছু ক্ষণের জন্যে বন্ধ থাকে। ওই বিস্ফোরণে পাঁচ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেককেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বর্ষীয়ান এক পুলিশ আধিকারিক।
দীর্ঘ দিন ধরেই কোয়েটার বালুচ অঞ্চলের বাসিন্দারা দাবি তুলছিলেন সেই এলাকায় পিএসএলের ম্যাচ আয়োজন করার। সেই আব্দার মেনে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স এবং পেশওয়ার জালমির একটি প্রদর্শনী ম্যাচের ব্যবস্থা করেছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। ওই পুলিশ কর্তা বলেছেন, “বিস্ফোরণ হওয়ার পরেই সাবধানতা অবলম্বন করে ম্যাচ থামিয়ে দেওয়া হয় এবং ক্রিকেটারদের সাজঘরে ফিরিয়ে যাওয়া হয়। পরে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর ম্যাচ শুরু করা হয়।” এই ম্যাচ দেখার জন্য স্টেডিয়াম ঠাসা ছিল।