চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। —ফাইল চিত্র।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভাগ্য নির্ধারণ করতে আইসিসি-র সদস্যদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু সেটা পিছিয়ে দেওয়া হল। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সেই বৈঠক হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। সেই দিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কোথায় হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
ভারতীয় দল পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে রাজি নয়। কিন্তু এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান। তারা চাইছে পুরো প্রতিযোগিতাই সে দেশে হোক। কিন্তু ভারত রাজি না হওয়ায় হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করার চেষ্টা চলছে। পাকিস্তান যদিও হাইব্রিড মডেলে খেলা হলে কিছু শর্ত দিতে চায়। সেগুলি মানা হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
পিসিবির শর্ত, তারা হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করতে রাজি। তবে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারতে আইসিসির যে চারটি প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা, সেগুলিও হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০২৫ সালে মহিলাদের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের আয়োজক ভারত। ২০২৬ সালে ভারত এবং শ্রীলঙ্কা যৌথ ভাবে আয়োজন করবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক ভারত। আর ২০৩১ সালে এক দিনের বিশ্বকাপ বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ ভাবে আয়োজন করবে ভারত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া পিসিবি মান বাঁচাতে ভারতের উপর পাল্টা শর্ত চাপানোর চেষ্টা করছে। উল্লেখ্য, ভারতের এই অবস্থানের জন্য গত বছরের এশিয়া কাপও হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে বাধ্য হয়েছিল পিসিবি।
পাকিস্তানের দেওয়া শর্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন জটিলতা। বিসিসিআই কর্তারা পিসিবির দেওয়া শর্ত মানতে নারাজ। বিসিসিআইয়ের যুক্তি, ভারতে যে চারটি প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা, সেগুলি হাইব্রিড মডেলে আয়োজনের কোনও প্রশ্নই উঠতে পারে না। কারণ, ভারতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও সমস্যা নেই। সব দেশের দল নির্বিঘ্নে ভারত সফর করছে। কখনও কোনও দলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি। তা ছাড়া, ২০২৩ সালে এক দিনের বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে আসা পাকিস্তান ক্রিকেট দলকেও কোনও রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি। বাবর আজ়ম, মহম্মদ রিজ়ওয়ানেরা বিভিন্ন জায়গায় খেতে বা কেনাকাটা করতে গিয়েও সমস্যায় পড়েনি। তাই হাইব্রিড মডেলে প্রতিযোগিতা আয়োজনের কোনও যুক্তি নেই।
বিসিসিআই এবং পিসিবি দু’পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড়। নতুন করে কোনও পক্ষের তরফেই সুর নরমের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। বিষয়টা দু’দেশের ক্রিকেট বোর্ডের কাছে অনেকটা সম্মানের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতা প্রদর্শনের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। পরস্পরবিরোধী অবস্থানের প্রেক্ষিতে ঝুলে রয়েছে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভাগ্য।
গত শুক্রবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে আইসিসি বোর্ডের বৈঠক থাকলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। ১৫ মিনিটেই শেষ হয়ে যায় বৈঠক। ভারত এবং পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তাদের ভাবার জন্য সময় দিয়েছেন আইসিসি কর্তারা। দায়িত্ব নেওয়ার পর এখনও মন্তব্য করেননি জয়। তবে বিসিসিআই সচিব হিসাবে তাঁর দেওয়া যুক্তি সুবিধাজনক জায়গায় রেখেছে ভারতকে।