শাহরুখ খান। — ফাইল চিত্র।
আইপিএলের নিলামে কলকাতা নাইট রাইডার্সের থেকে প্রত্যাশা ছিল অনেক কিছুরই। তবে দিনের শেষে সব প্রত্যাশা পূরণে যে তারা সফল হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না। আইপিএলের নিলামের শেষে তাই পাওয়া, না-পাওয়া থেকে গেল কেকেআরের ক্রিকেটপ্রেমীদের। যে দল হল, তাতে অনেক জায়গায় প্রত্যাশামতো ক্রিকেটার পাওয়া গেল না। মিচেল স্টার্কের পিছনে কলকাতা এতটাই টাকা খরচ করে ফেলল যে বাকি ভাল দেশীয় ক্রিকেটার নেওয়া গেল না।
নিলামের প্রথম ক্রিকেটারের পিছনেই ছুটেছিল কলকাতা। রভম্যান পাওয়েলকে নিয়ে শুরু হয়েছিল কাড়াকাড়ি। না পাওয়া গেলে অনেকেই ভেবেছিলেন কেকেআর আক্রমণাত্মক ভাবে এগোবে। কোথায় কী! সময় গড়াল, কেকেআর নিস্তেজ হয়ে পড়ল। প্যাট কামিন্স, হর্ষল পটেল, ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গ পর পর বেরিয়ে গেলেন। বিশেষত বোলিং বিভাগ শক্তিশালী করতে হর্ষলকে দরকার ছিল। তার জন্য বিডই করল না কেকেআর।
ঘুম ভাঙল স্টার্কের নাম আসায়। প্রথম থেকে বিডিং শুরু করেনি তারা। প্রায় ১০ কোটির কাছাকাছি স্টার্কের দাম পৌঁছনোর পরে কেকেআরের ‘খেলা’ শুরু হল। শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে গুজরাতের থেকে স্টার্ককে ছিনিয়ে নিল কেকেআর। ২৪.৭৫ কোটি দাম আজ পর্যন্ত কোনও ক্রিকেটারের ওঠেনি। সে দিক থেকে মঙ্গলবার নিলামে ইতিহাস তৈরি করল কলকাতা। সমস্যা হল অন্য জায়গায়। একটা ক্রিকেটারের জন্য এত অর্থ খরচ হয়ে গেল যে বাকিদের দিকে হাত বাড়াতে পারছিল না তারা। মাঝে রমনদীপ সিংহকে নিয়ে সর্বনিম্ন ক্রিকেটারের ‘কোটা’ পূরণ হল।
মাঝের একটা সময় কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীরা কার্যত ঘুমিয়েই পড়েছিলেন। একের পর এক ক্রিকেটার নিলামে উঠছিল তখন। কিন্তু কারও প্রতিই গৌতম গম্ভীর, বেঙ্কি মাইসোরেরা আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না। আবার কেকেআরের ঘুম ভাঙল শেষ বেলা। মণীশ পাণ্ডে ‘ঘরে’ ফিরলেন। এ ছাড়া মুজিব উর রহমান, গাস অ্যাটকিনসন, সাকিব হুসেনকে নেওয়া হল। তাতেও বাকি থাকল দু’টি জায়গা।
নিলামে কলকাতার প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে স্টার্ক। বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার তিনি। কিন্তু অনেকেই বলছেন, স্টার্কের দামটা বড্ড বেশি হয়ে গিয়েছে। তবে কেকেআরের বোলিং বিভাগের মুখ হতে পারেন তিনি। তবে দলে ভাল কোনও ভারতীয় পেসার নেই। হর্ষিত রানা, বৈভব অরোরারা ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেললেও, আইপিএলের মতো মঞ্চে এখনও যথেষ্ট পরীক্ষিত নন। বোলিংয়ে আরেকটা প্রাপ্তি মুজিব। সুনীল নারাইনের বিকল্প হিসাবে নিয়ে রাখা হল তাঁকে।
ব্যাটিং বিভাগে মিডল অর্ডার মজবুত করতে শেরফানে রাদারফোর্ডকে নেওয়া হল। কিন্তু বিদেশি হওয়ায় ক’টি ম্যাচে সুযোগ পাবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। মণীশ পাণ্ডেকে নেওয়া হয়েছে মিডল অর্ডারের কথা ভেবেই। গৌতম গম্ভীরের পছন্দের ক্রিকেটার তিনি। ফলে নিয়মিত খেলানো হতে পারে। কিন্তু শ্রেয়স আয়ার, নীতীশ রানা, রিঙ্কু সিংহদের মাঝে সুযোগ পাওয়া যাবে কি? বিকল্প উইকেটকিপার হিসাবে কেএস ভরতকে ভেবে রাখা হয়েছে।
কেকেআরের বড় অপ্রাপ্তির জায়গা অলরাউন্ডার। আন্দ্রে রাসেল, বেঙ্কটেশ আয়ার এবং অনুকূল রায় ছাড়া কেউ নেই। নিলামে রাচিন রবীন্দ্র, ড্যারিল মিচেল, শাহরুখ খান, হর্ষল পটেল, জেরাল্ড কোয়েৎজির মতো অলরাউন্ডার ছিলেন। কারও দিকেই ঝাঁপায়নি তাঁরা। আইপিএলে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম থাকার কারণেই কি অলরাউন্ডার নেওয়াতে এত অনীহা তাদের। সময়ই জবাব দেবে।