ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস। ছবি: রয়টার্স
অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে হারলেও ইংল্যান্ডের ‘বাজ়বল’ ক্রিকেট প্রশংসিত হয়েছে। আগ্রাসী ঘরানার ক্রিকেট মন কেড়ে নিয়েছে সকলেরই। হারলেও ইংল্যান্ড যে এই রণনীতি থেকে সরে আসবে না, তা ইতিমধ্যেই পরিষ্কার। বেন স্টোকসের নেতৃত্বাধীন এই ঘরানার ক্রিকেটের সঙ্গে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসেরও মিল রয়েছে। এর মূল মন্ত্রই হল সব রকম পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়া, যা তাদের প্রতিপক্ষের থেকে এগিয়ে রাখে। পাশাপাশি দলের প্রত্যেকের অবদানও সাফল্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
টেস্ট ক্রিকেটকে অন্য ভাবে দর্শকদের সামনে উপস্থাপিত করেছে ইংল্যান্ড। স্টেডিয়ামে বসে টেস্ট দেখতে আর দর্শকদের বিরক্তি লাগে না। আর তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েন না। বরং প্রতি মুহূর্তে কোনও না কোনও নাটকীয়তা, কোনও উত্তেজক মুহূর্ত তৈরি হয়ে যায়। ইংল্যান্ড চাইছে সেটাই। দর্শকদের মনোরঞ্জন দিতে। একই সঙ্গে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে বিপক্ষকে চমকে দিতে। তবে এক জন-দু’জন ক্রিকেটারের উপর নির্ভর করে এই সাফল্য আসে না। ইংল্যান্ড এই বিষয়েও বাকিদের টেক্কা দিচ্ছে। দলের প্রত্যেকে কোনও না কোনও ভাবে অবদান রাখছেন।
গত বার আইপিএল জিতেছে ধোনির নেতৃত্বাধীন চেন্নাই। সেই দলের দিকে তাকালেও একই জিনিস দেখা যাবে। হয়তো খুব মনোরঞ্জন করা ক্রিকেট খেলতে পারেনি তারা। কিন্তু বিপক্ষের মাঠে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া, দলের ক্রিকেটারদের থেকে সেরাটা বার করে নেওয়া, এ সব ক্ষেত্রে ধোনির কোনও তুলনা নেই। সেই একই কাজ করে দেখাচ্ছেন স্টোকসও।
এই বিষয়টি নিয়েই টুইটারে দীর্ঘ পোস্টে ডিভিলিয়ার্স লিখেছেন, “প্রথম টেস্টের আগে এক বারের জন্যেও বার্মিংহামের আবহাওয়ার দিকে তাকাইনি। যে ভাবে ইংল্যান্ড খেলেছে সেটাতেই সব বোঝা গিয়েছে। বাজ়বল বা যে নামেই আপনারা এই ক্রিকেটকে ডাকুন না কেন, আমি এটাকে চালাকচতুর ক্রিকেট হিসাবেই দেখব। ক্রিকেটবিশ্বের সেরা দলগুলি এ ভাবেই সব রকম পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে এমন ভাবে খেলতে শুরু করে, যা জয়ের ব্যাপারে তাদের প্রতিপক্ষের থেকে এগিয়ে রাখে। প্রথম ইনিংসে ডিক্লেয়ার করার মতো সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়াই হোক বা ঘন ঘন রিভার্স সুইপ খেলা।”
ডিভিলিয়ার্স আরও লিখেছেন, “এই ধরনের ক্রিকেট খেলে প্রভাব ফেলার একমাত্র উপায় হল দলের সবার থেকে কোনও না কোনও অবদান পাওয়া। দলে কোনও খেয়োখেয়ি থাকবে না, স্রেফ পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে কেউ জায়গা পাবে না। দলের হয়ে যে সেরাটা দিতে পারবে সেই জায়গা পাবে। এখন ইংল্যান্ড সেই কাজই করছে। আইপিএলে ঠিক একই কাজ করতে দেখেছি ধোনির নেতৃত্বাধীন চেন্নাই দলকে।”
ধোনির সাফল্য ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। বাজ়বল তত্ত্বও সাফল্য পেয়েছে। এই ঘরানার ক্রিকেট দীর্ঘায়িত হবে কি না, তা সময়ই বলবে।