কী ভাবে বদল ম্যাকালামের ফাইল ছবি
গত পাঁচটি টেস্ট সিরিজের একটিতেও জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। সেখান থেকে ব্রেন্ডন ম্যাকালাম দায়িত্ব নেওয়ার পর এক সিরিজে ভোলবদল! এক টেস্ট বাকি থাকতেই সিরিজ পকেটে ইংল্যান্ডের। এ বার নিউজিল্যান্ডকে চুনকাম করার সুযোগ তাদের সামনে। জানা গিয়েছে, কেকেআরের দর্শনই ইংল্যান্ডে কাজে লাগিয়ে সফল হয়েছেন ম্যাকালাম। তার জন্য কখনও তাঁর প্রশংসা হয়েছে, কখনও তিনি সমালোচিত হয়েছেন।
কেকেআর ছাড়ার পরে তাঁর প্রশংসা করে অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার বলেছিলেন, “ম্যাকালাম এমন একজন মানুষ যে খেলোয়াড়দের প্রচুর স্বাধীনতা দেয়। এক জন খেলোয়াড়কে মাঠে তার স্বাভাবিক খেলা খেলতে দেয়। কোনও কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে না। ওর মতো এত শান্ত এবং গোছানো কোচ আর কাউকে দেখিনি। ম্যাচের সময়ও সাজঘরে বা ডাগআউটে শান্ত থাকতে পারে। ওর কাছ থেকে শেখার অনেক কিছু রয়েছে।’’
ম্যাকালামের প্রশংসা করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার আন্দ্রে রাসেলও। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘আমরা যখন খুব চাপের মধ্যে থাকতাম, তখনও ম্যাকালাম খুব শান্ত থাকত। ও ঠান্ডা মাথার দুর্দান্ত এক ব্যক্তিত্ব। এমন একজন কোচ যে আমাকে সব সময় নিজের মতো খেলার স্বাধীনতা দিয়েছে। যখনই কোনও বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছি, সব সময় বলার স্বাধীনতা দিয়েছে।’’
আবার ম্যাকালামের কোচিংয়ের সমালোচনা করেন পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার সলমন বাট। বলেন, “ম্যাকালামের বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। ও একটাই রাস্তা জানে। পিচ, মাঠ, কত রান তোলা যাবে, নির্দিষ্ট বিপক্ষের বিরুদ্ধে কী ভাবে খেলতে হবে এ সব কিছুই জানে না। ও শুধু বলে, খোলা মনে খেল, দ্রুত রান কর। মাঝে মাঝে মনে হয় কলকাতা ভয়ডরহীন ক্রিকেটের বদলে দায়িত্বজ্ঞানহীন ক্রিকেট খেলছে।”
তবে ইংল্যান্ড ক্রিকেটাররা যে ম্যাকালামের কোচিং দর্শনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন, এটা বোঝা যাচ্ছে তাঁদের খেলাতেই। দলের বোলার স্টুয়ার্ট ব্রডের মতে, আরও বেশি সাহসী হয়ে উঠেছেন তাঁরা। ম্যাকালাম দায়িত্ব নিয়ে দলকে ঝুঁকি নেওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছেন। ক্রিকেটাররাও তাই পিছপা হচ্ছেন না। ব্রডের কথায়, “ম্যাকালাম থাকায় সাজঘর এখন অনেক বেশি তরতাজা। প্রত্যেকের মধ্যে একটা ইতিবাচক মানসিকতা রয়েছে। সবাই সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করছে।”
আগের থেকে দলের মানসিকতায় কী বদলে ঘটেছে, সেটা বোঝাতে গিয়ে ব্রড তুলে ধরেছেন দ্বিতীয় টেস্টের প্রসঙ্গ, যেখানে সীমিত ওভারের ঢঙে ক্রিকেট খেলে জিতেছে ইংল্যান্ড। ব্রড বলেছেন, “মধ্যাহ্নভোজের সময় আমাদের চার উইকেট পড়ে গিয়েছিল। অন্য সময় হলে বলা হত ড্রয়ের দিকে এগোতে। ম্যাকালাম আলাদা। ও খালি বলবে, ‘ভয়কে আক্রমণ করো’, ‘ভয়ের দিকে এগিয়ে যাও’। তাই প্রত্যেকেই এই টেস্টে জয়ের লক্ষ্যে এগোচ্ছিল। কেউ মাথাতেও আনেনি যে আর একটা উইকেট পড়লেই ড্রয়ের দিকে এগোব।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।