পাকিস্তানের বিতর্কিত আম্পায়ার আসাদ রউফ প্রয়াত। ফাইল ছবি
প্রয়াত আসাদ রউফ। পাকিস্তানের প্রাক্তন আম্পায়ারের প্রয়াণের খবর জানিয়েছেন তাঁর ভাই তাহির। ৬৬ বছর বয়সে মৃত্যু হল তাঁর। পাকিস্তানের আম্পায়ার হিসেবে বিশ্বমঞ্চে যে ক’জন বিখ্যাত হয়েছেন, রউফ ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন। বুধবার রাতে লাহৌরে নিজের বাড়িতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। রউফের মৃত্যুর পরেই বিতর্কিত এক অধ্যায়ের অবসান হল।
পাকিস্তানের আম্পায়াররা অতীতে বার বার জড়িয়েছেন বিতর্কে। রউফও তার ব্যতিক্রম নন। ২০১৩ সালে আইপিএলে ম্যাচ গড়াপেটা বিতর্ক তাঁর আম্পায়ারিং জীবন শেষ করে দেয়। তার আগের বছরে মুম্বইয়ের এক মডেলকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নাম জড়ায়। আইপিএলের ওই ঘটনার পর আর আম্পায়ারিং করেননি রউফ। ২০১৬ সালে বিসিসিআই তাঁকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাসিত করে। কিছু মাস আগেই শিরোনামে আসেন তিনি। লাহৌরের লান্ডা বাজারে একটি দোকানে তাঁকে জুতো বিক্রি করতে দেখা যায়। পাশাপাশি পুরনো জামাকাপড় বিক্রিও করতেন। সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁর মৃত্যুর খবর এল।
২০০০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিং শুরু করেন রউফ। অভিষেক তার দু’বছর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে। ২০০৬ সালে আইসিসি-র এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাঁকে। তার পর পাকিস্তানের অন্যতম সেরা আম্পায়ার হয়ে ওঠেন। পাকিস্তানের আম্পায়ারদের খারাপ মান নিয়ে যে বিতর্ক ছিল, তা মুছে দিতে সক্ষম হন আলিম দার এবং রউফ। ১৩ বছরে সব ফরম্যাট মিলিয়ে মোট ২৩১টি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন।
আইপিএলের শুরু থেকে নিয়মিত ম্যাচ পরিচালনা করতেন। তবে ২০১৩ সালের সেই বিতর্কিত অধ্যায় রউফের আম্পায়ারিং জীবন শেষ করে দেয়। আইপিএলের ম্যাচ গড়াপেটায় সরাসরি তাঁর যোগাযোগ পাওয়া যায়। শোনা গিয়েছিল, জুয়াড়িদের কাছ থেকে দামি দামি উপহার নিয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রউফ। মুম্বই পুলিশের কালো তালিকাভুক্ত হন তিনি। তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে গ্রেফতার হননি। তার আগে রউফের নাম জড়ায় ওই মডেলের সঙ্গে।
কিছু দিন আগে জুতো বিক্রির ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর রউফ জানিয়েছিলেন, ক্রিকেটে তিনি আগ্রহ হারিয়েছেন। বলেছিলেন, “আমার কর্মচারীদের জন্য এই কাজ করি। ওদের সংসার যাতে চলে, সেটার চেষ্টা করি। কোনও লোভ নেই। অনেক টাকা দেখেছি জীবনে। আমার এক সন্তান বিশেষ ভাবে সক্ষম। আর এক জন সদ্য আমেরিকা থেকে পড়াশোনা করে ফিরেছে। ওদের নিয়েই সময় কেটে যায়। আমি যেটাই করি, সেটার শিখরে পৌঁছনোর চেষ্টা করি। ক্রিকেট খেলার সময়েও তার শিখরে পৌঁছে গিয়েছিলাম। আম্পায়ারিংয়ের সময়েও তাই। এখন দোকানদার হিসেবেও সবার উপরে পৌঁছতে চাই।” তাঁর মৃত্যুতে সেই স্বপ্ন অবশ্য অধরাই থেকে গেল।