মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। —ফাইল চিত্র।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন তাঁর দুই প্রাক্তন ব্যবসায়িক সঙ্গী। কিন্তু সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করলেন ধোনির আইনজীবী। আদালত এই বিষয়ে কোনও অন্তর্বর্তিকালীন রায় দিতে রাজি নয়। এমনকি সংবাদমাধ্যম এবং সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের বিরুদ্ধেও মানহানির মামলা করা হয়েছিল। সেই বিষয়েও কোনও রায় দেয়নি আদালত।
মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, ধোনি যাতে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ বা মন্তব্য না করেন, তার জন্য স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। ধোনির আইনজীবী আদালতে এসে কাগজপত্র জমা দিয়ে দাবি করেন যে, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। রাঁচী কোর্টে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধোনির আইনজীবী। তিনি জানিয়েছেন, ধোনি অভিযোগের পক্ষে কোনও কাগজপত্র পাননি। আদালতের তরফে তিনি শুধু এই মামলার কথা জানতে পেরেছেন। দিল্লি হাই কোর্ট অভিযোগকারীদের তিন দিনের মধ্যে ধোনিকে সমস্ত কাগজপত্র দিতে নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলার শুনানি ৩ এপ্রিল হবে বলে জানিয়েছে কোর্ট।
ধোনির বিরুদ্ধে দুই অভিযোগকারী হলেন মিহির দিবাকর এবং তাঁর স্ত্রী সৌম্যা দাস। হাই কোর্টে অভিযোগ দায়ের করে তাঁরা ধোনির থেকে মানহানির জন্য ক্ষতিপূরণও দাবি করেছিলেন। পাশাপাশি, যে ভাবে বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তার বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করার আবেদন করেছিলেন তাঁরা।
কিছু দিন আগেই প্রাক্তন ব্যবসায়িক সহযোগীদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন ধোনি। মিহির এবং সৌম্যা জানিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। ধোনি যে অভিযোগ করেছিলেন তার কোনও সত্যতা নেই বলে দাবি করেছিলেন তাঁরা। এই কারণেই ধোনির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, জানুয়ারির প্রথম দিকে রাঁচীর আদালতে মিহির এবং সৌম্যার নামে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন ধোনি। আর্কা স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার কর্ণধার তাঁরা। ধোনির নাম ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল সংস্থাটি। ধোনি ২০১৭ সালে সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তি সই করেছিলেন। সংস্থাটির বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গ এবং ১৫ কোটি টাকার বেশি প্রতারণার অভিযোগ করেন ধোনি। চুক্তি সইয়ের পর দিবাকর কিছু আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ধোনির। চুক্তি অনুযায়ী ধোনিকে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি ফি এবং লাভের অংশ দেওয়ার কথা ছিল আর্কা স্পোর্টসের। সংস্থাটি সেই চুক্তি মতো টাকা দেয়নি বলে অভিযোগ।
জানা যায়, ধোনি প্রথমেই আদালতের দ্বারস্থ হননি। প্রথমে দিবাকর এবং সৌম্যার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। চুক্তির শর্ত কেন অমান্য করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। যথাযথ উত্তর না পাওয়ায়, ২০২১ সালের ১৫ অগস্ট, আর্কা স্পোর্টসকে নিজের নাম ব্যবহার করার অনুমতি প্রত্যাহার করে নেন চিঠি দিয়ে। তাতেও কাজ না হওয়ায় বেশ কয়েক বার আইনি চিঠিও দেন ধোনি। কিন্তু সংস্থাটির পক্ষ থেকে সদুত্তর না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।