বিনোদ কাম্বলি। —ফাইল চিত্র।
শরীর ভাঙছে। আর্থিক ভাবেও নিজের শরীরের যত্ন নেওয়ার সামর্থ্য নেই। বিনোদ কাম্বলি চাইছেন কপিল দেবরা তাঁকে সাহায্য করুন। শরীর সুস্থ করতে আর্থিক সাহায্য চাইছেন সচিন তেন্ডুলকরের বন্ধু।
কাম্বলি জানিয়েছেন, তাঁর মূত্রনালিতে সংক্রমণ হয়েছে। এই কারণে মাসখানেক আগে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে এখন আগের থেকে ভাল আছেন বলেও জানিয়েছেন কাম্বলি। একটি ভিডিয়োয় কাম্বলিকে বলতে শোনা গিয়েছে, “আমি রিহ্যাবে যেতে রাজি। আমার কোনও ভয় নেই। কারণ জানি পরিবার আমার সঙ্গে রয়েছে।”
কিছু দিন আগে কাম্বলিকে দেখা গিয়েছিল কোচ রমাকান্ত আচরেকরের স্মৃতিসৌধ উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সচিনও। কাম্বলি আগে এসে মঞ্চের এক ধারে নির্দিষ্ট আসনে বসেছিলেন। কিছু ক্ষণ পরেই আসেন সচিন। মঞ্চে উঠেই তিনি দেখতে পান বন্ধু কাম্বলিকে। এগিয়ে যান তাঁর কাছে। কাম্বলির হাত ধরে বেশ কিছু ক্ষণ কথা বলেন সচিন। সে সময় দু’জনকেই হাসতে দেখা যায়। দু’জনের কথা বলার সময়ের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে কাম্বলির যে চেহারা দেখা গিয়েছে, তা দেখে অনেকেরই মনে হয়েছিল তিনি অসুস্থ, যা মেনে নিলেন কাম্বলি স্বয়ং।
কাম্বলির ওই অবস্থা দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেন সুনীল গাওস্কর। সচিনের এক বন্ধু জানিয়েছেন তাঁর সঙ্গে গাওস্কর যোগাযোগও করেছিলেন। কাম্বলি বলেন, “গাওস্করই প্রথম আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অজয় জাডেজা আমার খুব ভাল বন্ধু। ও আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। অনেকেই আমার খোঁজ নিয়েছে, কথা বলেছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও নিশ্চয়ই সাহায্য করবে। বোর্ডের তরফে অ্যাবে কুরুভিল্লা আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। আমার স্ত্রীর সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছে ও।”
কিছু দিন আগে কাম্বলিকে নিজের ছেলের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন গাওস্কর। তিনি বলেছিলেন, “১৯৮৩ সালে যে দল বিশ্বকাপ জিতেছিল, সেই দলের ক্রিকেটারেরা পরের প্রজন্মকে খুবই স্নেহ করে। আমার কাছে তো ওরা নাতির মতো। কেউ কেউ আমার ছেলের বয়সি। আমরা ওদের সকলের খেয়াল রাখি। বিশেষ করে যখন ভাগ্য ওদের সঙ্গ দেয় না। সাহায্য শব্দটা আমার পছন্দ নয়। আমাদের বিশ্বকাপজয়ী দল চায় ওদের খেয়াল রাখতে। আমরা কাম্বলির পাশে দাঁড়াতে চাই। কী ভাবে সেটা করা যায় দেখতে হবে। আমরা সেই সব ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়াতে চাই, যাদের ভাগ্য সঙ্গ দিচ্ছে না।”
কাম্বলি স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁর মদ্যপানের অভ্যাসই শারীরিক অসুস্থতার কারণ। তিনি বলেন, “আমি এখন মদ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। সিগারেটও খাই না। গত ছ’মাস ধরে আমি মদ, সিগারেট থেকে দূরে আছি। আমার সন্তানদের কথা ভেবে সব ছেড়ে দিয়েছি। আগে খেতাম, কিন্তু এখন আর খাই না।”
কাম্বলি জানিয়েছেন, এর আগে সচিন তাঁকে অনেক বার সাহায্য করেছেন। এক সময় কাম্বলি অভিযোগ করেছিলেন যে সচিন তাঁর পাশে থাকেননি। সেই কথা হতাশা থেকে বলেছিলেন বলে জানান কাম্বলি। তিনি বলেন, “আমরা ক্রিকেটার। আমাদের দুঃখ হয়। আউট হলে আমাদের কষ্ট হয়। সচিন আমার জন্য সব কিছু করেছে। ২০১৩ সালে আমার দুটো অস্ত্রোপচার হয়েছিল। সেই সময় আর্থিক ভাবে সাহায্য করেছিল সচিন। ও খেলার সময়ও আমাকে সাহায্য করত। কিন্তু এক সময় হতাশা থেকে আমি বলেছিলাম সচিন সাহায্য করেনি। আমি খুবই হতাশ ছিলাম। আমি ওর সঙ্গে কথা বলি। সচিন আমার ছেলেবেলার বন্ধু। ও এগিয়ে এসেছিল আমার কাছে।”