(বাঁদিক থেকে) মুথাইয়া মুরলীধরন এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার এক হোটেলে বৃহস্পতিবার নিজের জীবনীচিত্রের প্রচারে এসেছিলেন মুথাইয়া মুরলীধরন। সেখানেই তিনি বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বলেছিলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। মুখ ফসকে এক বার অশ্বিনকে ভারতের বিশ্বকাপ দলে ঢুকিয়েও দিয়েছিলেন। তখনও জানতেন না, তাঁর কথাই সত্যি হতে চলেছে। সন্ধ্যে ৭টা ৩৫ মিনিটে সমাজমাধ্যমে আইসিসি জানায়, অশ্বিনকে ভারতীয় দলে নেওয়া হয়েছে। বাদ অক্ষর পটেল।
৮০০টি টেস্ট উইকেটের মালিক কলকাতায় বসে যে স্পিনারকে বিশ্বের সেরা বলেছিলেন, সেই অশ্বিনকে বাদ দিয়েই বিশ্বকাপের দল বেছে ছিল ভারত। তিন বাঁহাতি স্পিনারকে নিয়ে গড়া বিশ্বকাপের দলে শেষ পর্যন্ত ঢুকে পড়লেন অশ্বিন। তার আগে মুরলী বলেন, “আমার মতে এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা অফস্পিনার অশ্বিন।” সেই সঙ্গে এ বারের বিশ্বকাপে কোন কোন স্পিনার ছাপ ফেলতে পারে বলতে গিয়ে মুরলী বলেন, “সব দলেই খুব ভাল ভাল স্পিনার রয়েছে। ভারতীয় দলে কুলদীপ যাদব রয়েছে। অশ্বিন খুব ভাল স্পিনার, কিন্তু ও দলে নেই। (রবীন্দ্র) জাডেজাও খুব ভাল। আর অক্ষর রয়েছে।”
যে স্পিনার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটারদের ত্রাস ছিলেন, ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যাঁর সম্পর্কে বলেন, “শ্রীলঙ্কা মানেই মুরলী। আবার উল্টোটাও সত্যি। মুরলী মানেও শ্রীলঙ্কা”, সেই তারকা স্পিনারের ব্যবহার সকলকে মোহিত করে দেওয়ার মতো। কথা দিলে কথা রাখেন তিনি। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর ১০ মিনিট সময় দেবেন বলেছিলেন। সেই কথা রাখেন। সকলের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তবে গেলেন তিনি। যাওয়ার আগে বেছে দিলেন এ বারের বিশ্বকাপের চার সেমিফাইনালিস্ট। মুরলী বলেন, “ঘরের মাঠে যে দল খেলে, বিশ্বকাপে সে তো সুবিধা পাবেই। ভারতকে তাই রাখতেই হবে। ইংল্যান্ড এখন খুব ভাল খেলছে। ওরাও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার ক্ষমতা রাখে। আর বিশ্বকাপে কখনও অস্ট্রেলিয়াকে বাতিল করে দেওয়া যায় না। এই তিন দলের সঙ্গে চতুর্থ দল কে হবে সেটাই দেখার। অনেক দলই ক্ষমতা রাখে। তবে শ্রীলঙ্কাকে সেমিফাইনালে উঠতে হলে অনেক পরিশ্রম করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার কলকাতার অনুষ্ঠানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং মুথাইয়া মুরলীধরন। —নিজস্ব চিত্র।
সৌরভ এবং মুরলী পাশাপাশি বসে নিজেদের ক্রিকেট জীবনের স্মৃতিচারণ করলেন। একে অপরকে খেলতে কতটা সমস্যা জানালেন। সৌরভ বলেন, “মুরলীর যত বয়স বেড়েছে, তত বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।” সে কথা মেনে নেন মুরলীও। তিনি বলেন, “যখন বয়স কম ছিল, তখন সৌরভ আমার বিরুদ্ধে প্রচুর রান করত। পরে যদিও আমি বুঝে গিয়েছিলাম ওর খেলার ধরন।”
মুরলীর জীবনচিত্র ‘৮০০’ ছবিটি মুক্তি পাবে ৬ অক্টোবর। সেই ছবির প্রচারে কলকাতায় উপস্থিত ছিলেন মুরলী চরিত্রে অভিনয় করা মধুর মিত্তল। তিনি বলেন, “এক দুর্ঘটনায় আমার ডানহাতে বেঁকে গিয়েছিল। মুরলীর চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে সেটাই আমার কাজে লাগল। আমি হাত সোজা করতে পারি না। এই বাঁকা হাতের জন্যই মুরলী স্যরের বল করার ভঙ্গি অনুকরণ করতে সুবিধা হয়েছে।” সৌরভের জীবনীচিত্রও খুব শিঘ্রই হবে বলে জানান মুরলি।