কৌশিক। —ফাইল চিত্র।
এক যুগ আগে তিনি ছিলেন একটি সংস্থার কর্মচারি। রাতে সেই সংস্থার হয়ে কাজ করতেন। সকালে খেলতেন ক্রিকেট। ৩১ বছরের বাসুকি কৌশিক সংসার চালাতে এক সময়ে শুধু ক্রিকেট খেলার ঝুঁকি নিতে পারেননি। তবে এখন তিনি রঞ্জিতে কর্ণাটক দলের অন্যতম ভরসা।
ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলতে ভালবাসতেন কৌশিক। কিন্তু রেলের কোয়ার্টারে বড় হওয়া ছেলেটি শুধুই ক্রিকেট খেলবেন, সেটা ভাবতে পারেননি। কৌশিক বলেন, “মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আমি। সব সময় উপার্জনের জন্য একাধিক পরিকল্পনা রাখতে হয়।” মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার কৌশিক এক সময়ে কর্পোরেট সংস্থায় কাজ করতেন। আট বছর কাজ করেছেন। সেই সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছেন। কৌশিক বলেন, “কখনও শুধু ক্রিকেট খেলিনি। পড়াশোনার সময় ক্রিকেট খেলতে পারতাম না। পরীক্ষার সময় খেলা থাকত। তাই ক্লাব ক্রিকেট খেলতে যেতে পারতাম না। সেই কারণে কখনও রাজ্য দলে সুযোগ পেতাম না। কর্ণাটক প্রিমিয়ার লিগে খেলার সময় রাতের ডিউটি নিতাম। কর্পোরেট সংস্থায় চাকরি, খেলার জন্য ছুটি পাওয়া যায় না। শরীর খারাপ হয়ে যেত আমার এই ভাবে খেলে।”
সেই সব কঠিন সময় পেরিয়ে এসে রঞ্জিতে দাপট দেখাচ্ছেন কৌশিক। এর আগে দলীপ ট্রফিতেও নজর কেড়েছিলেন তিনি। কৌশিক বলেন, “কিছু জিনিস কপালে লেখা থাকে। আমাকে যদি বলা হয় যে আমি রঞ্জি খেলছি। বিশ্বাস করতেই কয়েক মুহূর্ত সময় লেগে যাবে। ২০১৪-২০২০ মরসুমে আমি সেরা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার বয়স তখন ২২-২৮ বছর। ওই কয়েক বছর আমি হারিয়ে ফেলেছি। ২০১৮-১৯ সালে তো দলে ঢোকাই কঠিন ছিল। সেই সময় কর্ণাটকের হয়ে বিনয় কুমার, অভিমন্যু মিঠুন এবং শ্রীনাথ অরবিন্দ খেলছিল। ওরা অবসর নেওয়ার পরেই আমরা সুযোগ পেয়েছি।”
কৌশিক মনে করেন চোটও কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছে তাঁর ক্রিকেট জীবন। ১৭ বছর বয়সে কোমরে চোট পেয়েছিলেন তিনি। ফলে গতি কমাতে হয় কর্ণাটকের পেসারকে। তাঁর বলের গতি ১৩০ কিলোমিটারে নেমে যায়। কৌশিক বলেন, “শেষ দু’বছর বিজয় হজারেতে কর্ণাটকের হয়ে সব থেকে বেশি উইকেট নিয়েছি আমি। গত রঞ্জিতে পাঁচ ম্যাচে ২৪ উইকেট নিয়েছি। দিনের শেষে তো সেটাই আসল।”
রঞ্জিতে কর্ণাটক প্রথম ম্যাচে পঞ্জাবকে হারিয়েছে ৭ উইকেটে। সেই ম্যাচে কৌশিক প্রথম ইনিংসে নে ৭ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে যদিও কোনও উইকেট পাননি। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে সহজে জেতার পর গুজরাতের বিরুদ্ধে খেলছে কর্ণাটক। সেই ম্যাচে গুজরাত শেষ ২৬৪ রানে। কৌশিক নিয়েছেন ৪ উইকেট। দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নামবে কর্ণাটক।