Ashes 2023

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না, অ্যাশেজ় শেষ হতেই মদ্যপান করা নিয়ে নাটক দুই দলের

সিরিজ় শেষে দুই দলের ক্রিকেটারদের সৌজন্যমূলক ড্রিঙ্কসের আয়োজনের করা হয়। কিন্তু সোমবার সেখানে গেলেন না বেন স্টোকসেরা। অস্ট্রেলিয়া দল অপেক্ষা করছিল তাঁদের জন্য। স্টোকসদের ডাকতেও গিয়েছিলেন স্টিভ স্মিথ। কিন্তু তাঁরা আসেননি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৩ ১১:৪৬
Share:

বেন স্টোকস। —ফাইল চিত্র।

অ্যাশেজ় সিরিজ় জুড়ে ছিল বিতর্ক। সিরিজ় শেষ হওয়ার পরেও তা পিছু ছাড়ল না। সিরিজ় শেষে প্রথা মেনে দুই দলের ক্রিকেটারদের একসঙ্গে মদ্যপানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সোমবার সেই অনুষ্ঠানে যায়নি বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড দল। অস্ট্রেলিয়া দল অপেক্ষা করছিল তাঁদের জন্য। স্টোকসদের ডাকতেও গিয়েছিলেন স্টিভ স্মিথ। কিন্তু তাঁরা আসেননি। পরে টুইট করে ইংল্যান্ডের না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন স্টোকস।

Advertisement

ওভালে উপস্থিত এক সাংবাদিক জানিয়েছেন যে, ইংল্যান্ড দল সিরিজ় শেষে ড্রিঙ্কস পার্টিতে যায়নি। অস্ট্রেলিয়া দল অনেক ক্ষণ ধরে অপেক্ষা করেছিল তাদের জন্য। স্মিথ বেশ কয়েক বার ইংরেজদের সাজঘরে গিয়ে তাদের ডেকেও এসেছে। কিন্তু ইংল্যান্ড দল দরজা বন্ধ করে রেখেছিল।

মঙ্গলবার স্টোকস ওই ঘটনার ব্যাখ্যা দেন। তিনি টুইটারে লেখেন, “আমাদের দলের দু’জনের শেষ ম্যাচ ছিল। তাই সাজঘরে আমাদের নিজেদের বেশ কিছু অনুষ্ঠান ছিল। সে সব মিটিয়ে ড্রেসিংরুম থেকে বার হতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছে। তাই সাজঘরে নয়, আমরা ঠিক করেছিলাম নাইট ক্লাবে অস্ট্রেলিয়ার দলের সঙ্গে দেখা করব।”

Advertisement

একটি অংশ আবার এর জন্য অস্ট্রেলিয়াকে দায়ী করছে। তাদের বক্তব্য, ইংল্যান্ডের দুই ক্রিকেটার অবসর নেওয়ার কারণে সাজঘর থেকে বেরোতে খানিকটা সময় লেগেছে তাদের। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সঙ্গে ড্রিঙ্কসে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিলেন ইংরেজ ক্রিকেটারেরা। কিন্তু স্মিথেরাই বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে চাননি। অ্যাশেজ় শেষে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয় সেটা নিয়ে।

গোটা সিরিজ় জুড়েই ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লড়াই চলে। কখনও লর্ডসের লং রুমে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সঙ্গে বাগ্‌যুদ্ধ চলে ইংরেজ সমর্থকদের, যা প্রায় হাতাহাতির পর্যায় পৌঁছে যায়। কখনও জনি বেয়ারস্টো ক্রিজ় ছেড়ে আগে বেরিয়ে আসায় তাঁকে আউট করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। সিরিজ় শেষেও সেই লড়াই থামল না।

অ্যাশেজের এই উত্তেজনা এমনি এমনি তৈরি হয়নি। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। যা কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক। খানিকটা শোকেরও। ১৮৮২ সালে ওভালে আয়োজিত টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম হেরেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেড স্পফোর্থের অনবদ্য বোলিংয়ের কাছে হারতে হয়েছিল ইংরেজদের। চতুর্থ ইনিংসে ৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। স্পফোর্থ ৪৪ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। ০-১ ব্যবধানে সিরিজ় হেরে গিয়েছিল। পরের দিন ইংল্যান্ডের সংবাদপত্র ‘দ্য স্পোর্টিং টাইমস্‌’ তাদের প্রতিবেদনে ক্রিকেট দলের তীব্র সমালোচনা করেছিল। লেখা হয়েছিল, ইংরেজ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রাখল ওভালের ২৯ অগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সাথে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংরেজ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া হয়েছে। এর পরের বছর সিরিজ় পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় যায় ইংল্যান্ড। সংবাদমাধ্যমের ব্যঙ্গ মনে রেখে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আইভো ব্লাই বলেছিলেন, তাঁরা অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন।

সে সময় কয়েক জন অস্ট্রেলীয় মহিলা ব্লাইকে আগের সিরিজ়ে পরাজয় নিয়ে পাল্টা ব্যঙ্গ করে ছাই ভর্তি একটি পাত্র দিয়েছিলেন। যাতে ছিল উইকেটের উপরে থাকা বেলের ছাই। তার পর থেকে দু’দেশের টেস্ট সিরিজ় ‘অ্যাশেজ’ বলে পরিচিত হয়। ব্লাই অবশ্য ছাইয়ের সেই আধারটি ব্যক্তিগত উপহার হিসাবে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। বিজয়ী দলকে ট্রফি হিসাবে তা দেওয়া হত না তখন। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী লর্ডসে এমসিসি জাদুঘরে সেই পাত্রটি দান করে দিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement