যুযুধান: বুধবার থেকে শুরু দ্বিতীয় টেস্ট। তার আগে সোমবার লর্ডসে প্রস্তুতিতে লাবুশেন-স্মিথ। আলোচনায় ডুবে স্টোকস ও ম্যাকালাম। রয়টার্স ।
লর্ডসে অ্যাশেজ় সিরিজ়ের দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগেই ‘আক্রমণ’ শুরু করল অস্ট্রেলিয়া। সেই আক্রমণ এল মার্নাস লাবুশেনের তরফ থেকে। অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটসম্যানের হুঙ্কার: লর্ডসে বাজ়বল ক্রিকেট খেলতে গেলে সমস্যায় পড়বে ইংল্যান্ড।
প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেও হেরে যায় অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দর্শনের কাছে। যার পরে কাঠগড়ায় উঠেছিল ইংল্যান্ডের বাজ়বল ক্রিকেট। কিন্তু কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম বা দলের অন্য ক্রিকেটাররা একটা কথাই বলে চলেছেন। লর্ডসেও একই রকম আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে নামবেন তাঁরা। লাবুশেন মনে করেন, এতে তাঁদের টেস্ট জয়ের সুযোগ আরও বেড়ে যাবে। লাবুশেন তুলে এনেছেন প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে জো রুটের আউট হওয়ার প্রসঙ্গ।
প্রথম ইনিংসে দুরন্ত শতরান করেছিলেন রুট। দ্বিতীয় ইনিংসে শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তা নেন তিনি। রিভার্স স্কুপের মতো শটও খেলতে দেখা যায় তাঁকে। সোমবার লাবুশেন বলেছেন, ‘‘রুট ওই ভাবে ব্যাট করায় আমরা ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়ে যাই। দ্বিতীয় ইনিংসে রুটের ব্যাটিংটা একটা উদাহরণ হিসেবে দিচ্ছি। রুট চাইলে ওই সময় আমাদের ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে দিতে পারত।’’ যোগ করেন, ‘‘অবিশ্বাস্য একটা ইনিংস খেলছিল রুট। কিন্তু ও ৪৬ রান করে ফিরে যায়। ও যদি ৮০ রান করে দিত, তা হলে হয়তো আমাদের তিনশোর উপরে রান তাড়া করতে হত। সে ক্ষেত্রে কাজটা কঠিন হয়ে যেত।’’ এর পরেই আসল তিরটা ছুড়েছেন লাবুশেন। বলেছেন, ‘‘ওরা ওই ভাবে খেলছে বলে আমাদেরসুবিধে হয়ে যাচ্ছে।’’
লর্ডসের পিচে গতি এবং বাউন্স এজবাস্টনের চেয়ে বেশি থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার সমাজমাধ্যমে পিচের যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বাইশ গজে যথেষ্ট ঘাস আছে। তবে বুধবার থেকে টেস্ট শুরুর আগে সেই ঘাস কতটা থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
ইংল্যান্ডের মানসিকতা নিয়ে যে রকম প্রশ্ন আছে, সে রকম প্রশ্ন আছে লাবুশেনের নিজের ব্যাটিং নিয়েও। তিনি আর স্টিভ স্মিথ প্রথম টেস্টে ব্যর্থ হয়েছেন। দু’জনে দু’ইনিংসে মোট করেছেন ৩৫ রান। লাবুশেন স্বীকার করেছেন, তাঁরা নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী খেলতে পারছেন না। লাবুশেনের কথায়, ‘‘নিজেদের মান অনুযায়ী একেবারেই খেলতে পারছি না আমরা। ব্যাটিংয়ের দিক দিয়ে বলব, উসমান খোয়াজা অসাধারণ খেলেছে। অ্যালেক্স ক্যারিও খুব ভাল ব্যাট করেছে। কিন্তু বাকিরা অনেক উন্নতি করতে চাইবে।’’
প্রথম টেস্টে মিচেল স্টার্ককে বাইরে রেখে খেলতে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। তিন পেসার ছিলেন প্যাট কামিন্স, জশ হেজ়লউড এবং স্কট বোলান্ড। কিন্তু লর্ডসে বাঁ-হাতি পেসার স্টার্ককে ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এক প্রাক্তন পেসার। তিনি জেসন গিলেসপি। নিজের কলামে গিলেসপি লিখেছেন, ‘‘সাধারণত, জয়ী দলে কোনও পরিবর্তন করা হয় না। কিন্তু সাত সপ্তাহের মধ্যে পাঁচটা টেস্ট হচ্ছে এই অ্যাশেজ়ে। যে কারণে বোলারদেরও বিশ্রাম দেওয়া প্রয়োজন।’’ গিলেসপি আরও লিখেছেন, ‘‘অনেকে মনে করেন, স্টার্ক প্রচুর রান দেয়। কিন্তু তিন জন ফিল্ডার বাউন্ডারিতে রেখে যদি স্টার্ককে আক্রমণে নিয়ে আসা হয়, তা হলে সেই কৌশল সফল হবে। স্টার্কের বল যে রকম সুইং করে বাইরের দিকে যায়, সে রকম ভিতরের দিকেও আসে। ও থাকলে উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।’’
ইংল্যান্ড কী করবে? লর্ডসে কি স্পিনার-অলরাউন্ডার মইন আলিকে খেলানো হবে? এজবাস্টন টেস্টে মইন আঙুলে চোট পাওয়ায় তাঁর বল করতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এ দিন অবশ্য ইংল্যান্ডের সহ-অধিনায়ক অলি পোপ জানিয়েছেন, মইন সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। পোপ বলেছেন, ‘‘মইন অনেকটাই সুস্থ হয়ে গিয়েছে। আশা করি, ওর খেলতে সমস্যা হবে না।’’ কিন্তু লর্ডসে কি স্পিনার খেলবেন? পোপের জবাব, ‘‘উইকেট কী রকম, তার উপরে সব কিছু নির্ভর করবে। তবে মাথায় রাখতে হবে, জ্যাক লিচ অতীতে কিন্তু লর্ডসে ভালই বল করেছে।’’