Ashes 2023

অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্ট জিততে ইংল্যান্ডের দরকার ২২৪ রান, অস্ট্রেলিয়ার চাই ১০ উইকেট

অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন দাপট দেখাল ইংল্যান্ড। প্রথমে অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করলেন ইংল্যান্ডের বোলারেরা। পরে দলকে ভরসা দিলেন দলের দুই ওপেনার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৩ ০০:০৫
Share:

অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট করার পরে উল্লাস ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের। ছবি: রয়টার্স

বৃষ্টির কারণে ভেস্তে গেল ৬০ ওভারের খেলা। তার পরেও তৃতীয় দিন অস্ট্রেলিয়ার উপর চাপ বাড়াল ইংল্যান্ড। দিনের তৃতীয় সেশনে ব্যাট করতে নেমে সমস্যায় পড়লেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারেরা। ইংল্যান্ডের দুই পেসার ক্রিস ওকস, মার্ক উড ও স্টুয়ার্ট ব্রডের বোলিংয়ে একের পর এক উইকেট পড়ল। মাত্র ২১ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার বাকি ছয় উইকেট পড়ে গেল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল করেছে ইংল্যান্ড। অ্যাশেজ়ের তৃতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান বিনা উইকেটে ২৭। টেস্ট জিততে এখনও ২২৪ রান করতে হবে বেন স্টোকসদের। অন্য দিকে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ১০ উইকেট।

Advertisement

হেডিংলেতে তৃতীয় দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। সেই মতো খেলা শুরু হওয়ার আগেই বৃষ্টি শুরু হয়। প্রথমে মনে হয়েছিল, বেশি ক্ষণ বৃষ্টি হবে না। কিন্তু যত সময় গড়াল তত বৃষ্টির দাপট বাড়ল। তার ফলে প্রথমে মধ্যাহ্নভোজ ও তার পর চা বিরতি সময়ের আগেই নিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আম্পায়ারেরা।

দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে বৃষ্টি থামে। ফলে খেলা শুরু হয়। যদিও এক সেশনের বেশি খেলা হল না। তার মধ্যেই দাপট দেখালেন ইংল্যান্ডের পেসারেরা। দ্বিতীয় দিনের শেষে অপরাজিত ছিলেন ট্রাভিস হেড ও মিচেল মার্শ। প্রথম ইনিংসে শতরান করা মার্শ দ্বিতীয় ইনিংসে বড় রান করতে পারলেন না। ২৮ রান করে ওকসের বলে আউট হলেন তিনি। বল মার্শের গ্লাভসে লেগে উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোর কাছে যায়। ক্যাচ ছাড়েননি তিনি।

Advertisement

নিয়মিত ব্যবধানে উইকেটে হারাতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। অ্যালেক্স ক্যারে, মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স রান পাননি। ক্যারেকে আউট করেন ওকস। স্টার্ক ও কামিন্সের উইকেট নেন উড। আট উইকেট পড়ে যাওয়ায় দলের রানকে টেনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল হেডের। সেই কাজটাই করছিলেন তিনি। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছিলেন। দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করছিলেন। প্রতি ওভারে বড় শট মারছিলেন। অর্ধশতরান করেন তিনি। হেডকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন টড মারফি।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে ২০০ পার করান হেড। মারফি ১১ রান করে ব্রডের বলে আউট হলেও হেড থামেননি। উডের এক ওভারে জোড়া ছক্কা মারেন। শেষ পর্যন্ত ব্রডের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন হেড। তিনি করেন ৭৭ রান। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ হয় ২২৪ রানে। ইংল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনটি করে উইকেট নেন ব্রড এবং ওকস। দু’টি করে উইকেট নেন উড ও মইন আলি। ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৫১ রান।

তৃতীয় দিনের শেষে মাত্র পাঁচ ওভারেই জন্য ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। তার মধ্যে ইংল্যান্ডের উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম থেকেই স্টার্ক ও কামিন্স ঠিক জায়গায় বল রাখছিলেন। কয়েকটি বলে সমস্যাও হয় ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার বেন ডাকেট ও জ্যাক ক্রলির। কিন্তু নিজেদের উইকেট ধরে রাখেন তাঁরা। সেই সঙ্গে খারাপ বল পেলে শট খেলছিলেন। তৃতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান বিনা উইকেটে ২৭। এখনও দু’দিনের খেলা বাকি। হেডিংলে জিতে সিরিজ়ে ফিরতে ইংল্যান্ডের দরকার ২২৪ রান। অন্য দিকে প্রথম তিন দিন যে ভাবে উইকেট পড়েছে তাতে এই টেস্ট জিতে সিরিজ় জেতার সুযোগ রয়েছে অস্ট্রেলিয়ারও।

অ্যাশেজ়ের প্রথম দু’টি টেস্ট জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু কেন এই সিরিজ়কে অ্যাশেজ বলা হয়? অ্যাশেজ সিরিজ়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। যা কিছুটা ব্যাঙ্গাত্মক। খানিকটা শোকেরও। ১৮৮২ সালে ওভালে আয়োজিত টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম হেরেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেড স্পফোর্থের অনবদ্য বোলিংয়ের কাছে হারতে হয়েছিল ইংরেজদের। চতুর্থ ইনিংসে ৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। স্পফোর্থ ৪৪ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। ০-১ ব্যবধানে সিরিজ় হেরে গিয়েছিল। পরের দিন ইংল্যান্ডের সংবাদ পত্র ‘দ্য স্পোর্টিং টাইমস্‌’ তাদের প্রতিবেদনে ক্রিকেট দলের তীব্র সমালোচনা করেছিল। লেখা হয়েছিল, ইংরেজ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রাখল ওভালের ২৯ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সাথে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংরেজ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া হয়েছে। এর পরের বছর সিরিজ় পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় যায় ইংল্যান্ড। সংবাদমাধ্যমের ব্যঙ্গ মনে রেখে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আইভো ব্লাই বলেছিলেন, তাঁরা অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন।

সেই সময় কয়েকজন অস্ট্রেলীয় মহিলা ব্লাইকে আগের সিরিজ়ে পরাজয় নিয়ে পাল্টা ব্যঙ্গ করে ছাই ভর্তি একটি পাত্র দিয়েছিলেন। যাতে ছিল উইকেটের উপরে থাকা বেলের ছাই। তার পর থেকে দু’দেশের টেস্ট সিরিজ় ‘অ্যাশেজ’ বলে পরিচিত হয়। ব্লাই অবশ্য ছাইয়ের সেই আধারটি ব্যক্তিগত উপহার হিসাবে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। বিজয়ী দলকে ট্রফি হিসাবে তা দেওয়া হত না তখন। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী লর্ডসে এমসিসি জাদুঘরে সেই পাত্রটি দান করে দিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement