সমর্থন: বিরাটের টানে নাতিকে নিয়ে ইডেনে ঠাকুমা। —নিজস্ব চিত্র।
সব নদীই যেমন সাগরে মেশে, দুপুর থেকে তেমনই বইছিল জনস্রোত। সেই ভিড়ের রং নীল। ড্রোন ক্যামেরায় ধরলে মনে হত, নীল রঙের নদীই যেন বয়ে চলেছে মহানগরের রাজপথ ধরে। যে মহাসমুদ্রে গিয়ে রবিবার এই নীল জার্সির জনস্রোত আছড়ে পড়ল, সেই ইতিহাসের ইডেনে বিরাট কোহলি মিলিয়ে দিলেন সব প্রজন্মকে। মুছে দিলেন তারকা ও আমজনতার বেড়া।
তিলমাত্র জায়গা না থাকা ইডেনে প্রায় নব্বই শতাংশ দর্শকের গায়েই ছিল ‘বিরাট ১৮’ লেখা নীল জার্সি! দেখে মনে হচ্ছিল, ‘কিং কোহলি’র এই দরবারে ভক্তদের স্লোগান ‘আমরা সবাই রাজা’। খেলার মাঝামাঝিই ক্লাব হাউসে দেখা গেল মহানগরেরই আর এক তারকা ক্রীড়াবিদ, টেনিস-কিংবদন্তি লিয়েন্ডার পেজকে। বললেন, ‘‘কোহলির ৪৯তম শতরান দেখতেই এসেছি। এটা অসাধারণ ব্যাপার যে, কোহলি নিজের জন্মদিনে কলকাতাকে এই শতরান উপহার দিলেন। সকলের কাছে এমন ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার।’’
শুধু টেনিস তারকা কেন, অভিনেতা, নানা দলের রাজনীতিবিদ, অন্য নানা ক্ষেত্রের তারকা— উপস্থিত সবাইকে এক সূত্রে গেঁথে দেন বিরাট। খেলার শুরুর দিকে চার হলেই সামনের তরুণ-তরুণীদের উঠে দাঁড়ানো দেখে বিরক্ত হচ্ছিলেন পিছনের আসনের বৃদ্ধ। আক্ষেপ করছিলেন, ‘‘আইপিএল খেলা দেখার মেজাজটাই নষ্ট করে দিয়েছে।’’ বিরাটের শতরানের পরে সেই বৃদ্ধই জড়িয়ে ধরলেন ওই তরুণকে। তরুণও প্রত্যুত্তরে বললেন, ‘‘জেঠু,
আবেগটাই আসল!’’
আবেগের টানেই তো ১৫ বছরের কিশোর অদ্বয় হাত ধরে নিয়ে এসেছিল ঠাকুমা লীনা গুপ্তকে। ম্যাচ শেষে জাতীয় পতাকা ধরে নাতির সঙ্গে ছবি তুলে লীনা বললেন, ‘‘টিভিতে আইপিএল খুব দেখি। আজ বিরাটের সেঞ্চুরি দেখব বলে নাতিকে বললাম নিয়ে আসতে।’’ অদ্বয় বলল, ‘‘ভয় লাগছিল, ঠিকঠাক আসতে পারব তো! ইতিহাসের টানে চলে এলাম।
আসা সার্থক।’’