যুগলবন্দি: মনোজ-লক্ষ্মীর ছোঁয়ায় পাল্টে গিয়েছে দল। ফাইল চিত্র।
৩৩ বছর আগে যাঁর হাত ধরে বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা স্বাধীনতার পরে প্রথম রঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন, সেই সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশেষ সম্মান দিতে চলেছে সিএবি। ম্যাচ শুরুর আগে ইডেনের ঐতিহ্যবাহী ঘণ্টা বাজিয়ে ম্যাচের সূচনাকরবেন তিনি।
সিএবি-র এই উদ্যোগে খুশি বাংলা দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। তিনি বলছিলেন, ‘‘অত্যন্ত সম্মানিত। ৩৩ বছর পরে ইডেনে বাংলার সামনে ট্রফি জয়ের হাতছানি। সেই ম্যাচের সূচনা হতে চলেছে আমার হাত দিয়েই। এই বিশেষ সম্মান জানানোর জন্য সিএবিকে ধন্যবাদ।’’
চমক এখানেই শেষ নয়। রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে থাকছে ‘ডিসিশান রিভিউ সিস্টেম’ (ডিআরএস)। তবে আংশিক ডিআরএস নয়। আন্তর্জাতিক ম্যাচের মতোই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে ইডেনে।
অর্থাৎ আল্ট্রাএজ, বল ট্র্যাকিং সব কিছুই থাকছে ফাইনালে। আম্পায়ার ভুলবশত কোনও সিদ্ধান্ত নিলেও রিভিউ নিয়ে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেন দু’দলের অধিনায়কেরাই। ভারতীয় বোর্ড সূত্রে খবর, টেস্টের মতোই ইনিংস-প্রতি থাকছে তিনটি করে ডিআরএস।
রঞ্জি ট্রফির নকআউটে ডিআরএস না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁর নেওয়া একটি ক্যাচ নটআউট ঘোষণা করা হয়। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মনোজ। ফাইনালে ডিআরএস থাকায় স্বস্তি দুই শিবিরেই।
গত বার পর্যন্ত আংশিক ডিআরএস ব্যবহার করা হত রঞ্জি ট্রফিতে। বোর্ড থেকে জানানো হয়েছিল, রঞ্জি ট্রফিতে এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করার মতো পরিকাঠামো সব মাঠে নেই।
কিন্তু ফাইনাল এ বার ইডেনে। যেখানে একাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা হয়। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মাঠে তাই পূর্ণ ডিআরএস প্রযুক্তির ব্যবস্থা থাকলে যে কোনও অসুবিধে হবে না, মনে করেছে বোর্ড। ক্রিকেটারেরাও চাপমুক্ত ভাবেখেলতে পারবেন।
ফাইনাল উপভোগ করার জন্য দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে ইডেনের ‘বি’, ‘কে’, ‘সি’ ও ‘এল’ ব্লক। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রবেশ করে ম্যাচ উপভোগ করতে পারবেন বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা।
আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ফাইনালের প্রস্তুতি। তার আগে সোমবার ইডেনের বাইশ গজ দেখে এলেন কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল। তাঁর কথাতেই স্পষ্ট, পিচ দেখে খুশি বঙ্গ কোচ। বলছিলেন, ‘‘স্পোর্টিং উইকেট। বোলার-ব্যাটার সকলের জন্যই কিছু না কিছু আছে এই পিচে। হাল্কা ঘাস রাখা হয়েছে। প্রথম দু’দিন বল ভালই নড়াচড়া করবে।’’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আমাদের শক্তি পেস বিভাগ। ব্যাটিংয়েও শক্তি বেড়েছে। দলীয় সংহতি ভাল থাকলে দল ভাল খেলবেই। আমাদের ক্রিকেটারদের মধ্যে বোঝাপড়াই এত দূর পৌঁছে দিয়েছে। ফাইনালের আগে বিশেষ কিছু করা হচ্ছে না।’’
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আরও পাঁচটি ম্যাচের মতোই দেখা হচ্ছে এই ম্যাচকে। অতিরিক্ত কিছু করতে গেলে ছেলেরা চাপে পড়ে যেতে পারে। বাংলার ক্রিকেটের জন্য যা বড় ক্ষতি। সেটা হতে দেব না।’’
ফাইনালের পিচ যে হেতু পেসারদের বেশি সাহায্য করতে পারে, তাই ফাইনালের দলে একজন স্পিনারের পরিবর্তে পেসার অলরাউন্ডার খেলানোর পরিকল্পনা রয়েছে বাংলা দলের। ফলে আকাশ ঘটকের দলে ফেরার সম্ভাবনা বাড়ছে। দু’দিন অনুশীলনের পরেই পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেবেন কোচ ও অধিনায়ক।