দায়িত্বে: লর্ডসে নতুন ইংল্যান্ড কোচ ম্যাকালাম।
কলকাতা নাইট রাইডার্স এখন অতীত। কোচিং জীবনের নতুন এক অধ্যায়ে পা রাখলেন ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। ইংল্যান্ড দলের নতুন গুরু জানিয়ে দিলেন, অধিনায়ক বেন স্টোকসকে নিয়ে তিনি নতুন এক দিগন্তের উন্মোচন করতে চান।
নিউজ়িল্যান্ড ক্রিকেট তঁর হাত ধরে বিশ্বমঞ্চে নতুন ভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছিল। তাঁর পরিচিত আগ্রাসী ক্রিকেট সংস্কৃতি রাতারাতি পাল্টে দিয়েছিল নিউজ়িল্যান্ড ক্রিকেটের মানসিকতা। সেই দর্শনে বিশ্বাস রেখে এ বার ম্যাকালাম পরিবর্তন আনতে চান ইংল্যান্ড ক্রিকেটেও।
স্কাই স্পোর্টস চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষৎকারে ম্যাকালাম বলেছেন, ‘‘সেই অর্থে যদি আমার কোচিং দর্শনের বিশ্লেষণ হয়ে থাকে, তা হলে হয়তো দেখা যাবে সেখানে সাবেক ক্রিকেটীয় ভাবনার ছোঁয়া কম রয়েছে। আমি মনে করে সেই বিষয়ের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জেতার জন্য বিশেষ কিছু কৌশল এবং যাদের নিয়ে লড়াই করতে হবে, সেই ক্রিকেটারদের মানসিকতাকে খুব ভাল করে বোঝা। ফলে শুরুতেই ড্রেসিংরুমে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে সকলে সেই আবহে স্বস্তি অনুভব করে এবং মাঠে নেমে নিজেদের সেরা ক্রিকেট উপহার দিয়ে দলকে গর্বিত করতে পারে।’’
এমন এক সময় ম্যাকালাম তাঁর কাজ শুরু করতে চলেছেন, যেখানে পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, শেষ ১৭ টেস্টে ইংল্যান্ড জিতেছে মাত্র একবার। এবং অ্যাশেজে শোচনীয় বিপর্যয়ের পরে ইংল্যান্ড ক্রিকেটে সার্বিক ভাবে বিপুল সংস্কার হয়েছে। জো রুট নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। প্রাক্তন কোচ সিলভারউডকে পর্যন্ত উড়ে যেতে হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। তবে সেই বিবর্ণ অতীত নিয়ে মথা ঘামাতে রাজি নন ম্যাকালাম। তিনি বরং নতুন অধিনায়ক বেন স্টোকসকে সামনে রেখে আনতে চান বদল। তিনি বলেছেন, ‘‘স্টোকস খুব শক্ত মনের অধিনায়ক। আমি বলব, ও এই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সেরা মুখ। সত্যি বলতে, ও আমার মতোই ইতিবাচক মনের অধিনায়ক। ফলে আমার প্রধান কাজই হবে ওকে সঙ্গে নিয়েই দলকে ধারাবাহিক ভাবে ভাল ক্রিকেট খেলার সরণিতে ফিরিয়ে আনা। আমাদের কিন্তু মাঠে এবং মাঠের বাইরে অনেক ধরনের স্বাস্থ্যকর বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কাজটা সহজ নয়।’’
আগামী সপ্তাহে লর্ডসে তাঁর প্রথম প্রতিপক্ষ হতে চলেছে নিজের দেশ নিউজ়িল্যান্ড। যা নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক থাকছেন কেকেআর কোচ। তিনি বলে দিয়েছেন, ‘‘ক্রিকেটারদের মধ্যে একটা গতি নিয়ে আসতে হবে। এটা মানতেই হবে, ইংল্যান্ড ক্রিকেটে সেই গতির অভাবটা সাম্প্রতিক সময়ে প্রকট হয়ে উঠেছিল। সেই অর্থে দেখতে গেলে, সেটা আমার কাছে বেশ কঠিন পরীক্ষা বলেই মনে হচ্ছে।’’
ম্যাকালাম মনে করিয়ে দিয়েছেন, লাল বলের ক্রিকেটে উন্নতি না করতে পারলে কোনও জায়গায় সফল হওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেছেন, ‘‘ইংল্যান্ডে টেস্ট ক্রিকেটের একটা গৌরবময় ঐতিহ্যের ইতিহাস রয়েছে। সেটাতে উন্নতি না করতে পারলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আমি নিজেও টেস্ট ক্রিকেটের এক বড় ভক্ত। ইংল্যান্ডকে আবার তার জায়গায় ফিরিয়ে আনতে হবে।’’