ঋদ্ধিমান সাহা এবং সুদীপ ঘরামি। ছবি: সিএবি।
রঞ্জি ট্রফিতে কর্নাটকের বিরুদ্ধে বাংলার লক্ষ্য ছিল সরাসরি জয়। কিন্তু খেলার মধ্যে সেই ছাপ দেখা গেল না। শনিবার ইনিংস ডিক্লেয়ার করতে এত বেশি সময় নিলেন অনুষ্টুপ মজুমদারেরা, যে সরাসরি জয় পাওয়া এক প্রকার অসম্ভব হয়ে যায়। ফলে তিন পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাকে। সেই সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার রাস্তাও কঠিন হয়ে গেল।
স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে সুদীপ ঘরামির শতরানের জন্য অপেক্ষা করছিল বাংলা। ১৯৩ বলে শতরানে পৌঁছন সুদীপ। স্ট্রাইক রেট ৫২.৩৩। ইনিংসে ১২টি চার, ২টি ছক্কা থাকলেও সুদীপ অনেক বল নষ্ট করেছেন। ফলে শতরান করতেও অনেক সময় নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলার বোলারেরা মাত্র ২৮ ওভার বল করার সুযোগ পান। আর একটু বেশি ওভার হাতে পেলে বাংলা সরাসরি জিততেও পারত।
গ্রুপ পর্বে বাংলা চারটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। এর মধ্যে দু’টিতে পেয়েছে তিন পয়েন্ট। আর বাকি দু’টিতে এক পয়েন্ট করে। ফলে চার ম্যাচে আট পয়েন্ট পেয়েছে তারা। মাঠ ভেজা থাকার কারণে কল্যাণীতে বিহারের বিরুদ্ধে খেলা হয়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেকের মাঠে কেরলের ম্যাচ হলেও তা থেকে এক পয়েন্টের বেশি পায়নি বাংলা। এই দু’টি ম্যাচ কম পয়েন্ট পাওয়ায় ভুগতে হচ্ছে দলকে। গ্রুপে এখনও তিনটি ম্যাচ বাকি। মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা এবং পঞ্জাবের বিরুদ্ধে খেলতে হবে বাংলাকে।
বাংলা ৮ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে পঞ্চম স্থানে। গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে হরিয়ানা। ৪ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট পেয়েছে তারা। কেরল ৪ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ এবং কর্নাটক চার ম্যাচে ৯ পয়েন্ট করে পেয়েছে। তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে তারা। গ্রুপ থেকে প্রথম দু’টি দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে। বাংলার পক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা অসম্ভব নয়, তবে রাস্তাটা কঠিন হয়ে গেল।
কর্নাটকের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে ৩০১ রান করে বাংলা। শতরান করেন অধিনায়ক অনুষ্টুপ। কিন্তু প্রথম দিনে ৫ উইকেটে ২৪৯ রান করার পর বাংলা দ্বিতীয় দিনের সকালে মাত্র ৫২ রান যোগ করে বাকি ৫ উইকেট। যে পরিমাণ রান তোলার সম্ভাবনা ছিল বাংলা তা পারেনি। যদিও বোলারেরা বাংলাকে লড়াইয়ে রেখে দেয়। ২২১ রানে শেষ হয়ে যায় কর্নাটক। ঈশান পোড়েল নেন ৪ উইকেট। ৩ উইকেট নেন সূরজ সিন্ধু জয়সওয়াল। দু’টি উইকেট নেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ঋষভ বিবেক। বাংলা ৮০ রানে লিড পায়।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলা ২৮৩ রান তুলে ডিক্লেয়ার করে। গত কয়েক ম্যাচে রান পাচ্ছিলেন না সুদীপ। অনেক সময় নিলেও তাঁর রানে ফেরা স্বস্তি দেবে বাংলাকে। ১০১ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি। ঋদ্ধিমান সাহা করেন ৬৩ রান। তাঁদের ব্যাটের দাপটে কর্নাটকের সামনে ৩৬৪ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলা। কিন্তু শেষ দিনে এত রানের লক্ষ্য না দিয়ে আরও আগে ডিক্লেয়ার করার সুযোগ ছিল। তাতে কর্নাটকের উপর চাপ তৈরি করে অল আউট করার সুযোগ থাকত। কিন্তু বাংলা সে পথে হাঁটেনি। তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করার দিকেই নজর দেয় তারা। কর্নাটক ২৮ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ১১০ রান তোলে। সেখানেই ম্যাচে শেষ করে দেওয়া হয় দুই দলের সম্মতিতে। তিনটি উইকেটই নেন সূরজ। এই ম্যাচে পুরো পয়েন্ট পাওয়ার চেষ্টা না করা আগামী দিনে বাংলার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়।