জয় শাহ আইসিসির চেয়ারম্যান হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনন্দন জানালেন অমিত শাহকে। —ফাইল চিত্র।
গত মঙ্গলবার বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার শীর্ষপদে গিয়েছেন জয় শাহ। সেই কারণে বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে তাঁর বাবা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অভিনন্দন জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “অভিনন্দন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আপনার পুত্র রাজনীতিবিদ হননি। তার বদলে আইসিসির চেয়ারম্যান হয়েছেন। এই পদটি অধিকাংশ রাজনৈতিক পদের থেকে অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পুত্র সত্যিই অত্যন্ত শক্তিশালী হয়েছেন। ওঁর এই সাফল্যের জন্য আপনাকে অভিনন্দন।’
রাজনীতির লোকজন মমতার অভিনন্দনবার্তার মধ্যে অন্য রকম ‘তাৎপর্য’ খুঁজে পাচ্ছেন। অনেকেই মনে করছেন, সাদা চোখে না-ধরা পড়লেও মমতার বার্তার মধ্যে কটাক্ষের উপাদানও রয়েছে। কারণ, মমতা ‘পুত্র’ শাহকে অভিনন্দন জানাননি (মমতার বার্তায় জয় শাহের নাম পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়নি)। মমতা অভিনন্দন জানিয়েছেন ‘পিতা’ শাহকে। অথচ, আইসিসির চেয়ারম্যান হয়েছেন ‘পুত্র’ শাহ।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তার পরে লোকজনের মনে পড়ে যাচ্ছে, এক সভায় অমিত শাহের উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, “আপনার ছেলের এত টাকা হল কী করে? এই প্রশ্নের উত্তরটা আগে দিন!”
বস্তুত, জয় শাহকে সামনে রেখে বহু বার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ অমিত শাহের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা। ক্রিকেট জনতার স্মৃতিতে রয়েছে যে, ২০২২ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে সুযোগ এসেছিল আইসিসির চেয়ারম্যান হওয়ার। কিন্তু তা হয়নি। তার জন্য তখন অমিত শাহদের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন মমতা। বলেছিলেন, “সৌরভ আইসিসিতে যাওয়ার যোগ্য। ওকে বঞ্চিত করা হল! বিজেপি সরকারের অনেককে আমি অনুরোধ করেছিলাম। সকলের সামনেও (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে) অনুরোধ করেছিলাম। সৌরভকে পাঠালে দেশের গৌরব বাড়ত। জগমোহন ডালমিয়া, শরদ পওয়ার আইসিসিতে গিয়েছিলেন। তা হলে কোন অজ্ঞাত কারণে সৌরভকে বঞ্চিত করা হল?”
এর পরেই মমতা নাম না করে অমিত-তনয় জয়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “অন্য কারও জন্য এই জায়গা রেখে দেওয়া হল। আমি কারও নাম বলব না। নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য সত্যিকারের ক্রীড়াপ্রেমীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। সৌরভের জায়গায় সচিন (তেন্ডুলকর), (মহম্মদ) আজহারউদ্দিন থাকলে আমি ওদেরও সমর্থন করতাম। সৌরভ বিশ্ব জুড়ে ক্রিকেট খেলেছে। ও ভদ্র ছেলে বলে কিছু বলেনি। নিশ্চয়ই ওর খারাপ লেগেছে! সেটা নিজের মধ্যে চেপে রেখেছে। এটাকে আমরা সহজ ভাবে নিচ্ছি না। এর মধ্যে রাজনীতি রয়েছে। এক জন মানুষকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার জন্য এটা করা হয়েছে।”