মনোজ তিওয়ারি। — ফাইল চিত্র।
রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহূর্তে তাঁর পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক না কেন, রাজ্য ক্রিকেটের ভরসা মনোজ তিওয়ারির উপরেই। শুক্রবার আসন্ন রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার প্রথম দুই ম্যাচে যে ঘোষিত হয়েছে, সেখানে অধিনায়ক হিসেবে রাখা হয়েছে মনোজকেই। গত বারও তিনিই অধিনায়ক ছিলেন। এ বারও সব ঠিকঠাক থাকলে গোটা মরসুমেই দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। বাংলার প্রথম ম্যাচ ৫ জানুয়ারি অন্ধ্রপ্রদেশের বিরুদ্ধে বিশাখাপত্তনমে। দ্বিতীয় ম্যাচ কানপুরে। রিঙ্কু সিংহের উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে।
বাংলার দল ঘোষণায় অবশ্য চমক রয়েছে। জাতীয় দলের সঙ্গে থাকায় প্রথম দুই ম্যাচে পাওয়া যাবে না মুকেশ কুমারকে। গত কয়েক মরসুমের মুকেশের ভূমিকা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে বাংলা দলে। থাকছেন না প্রাক্তন অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণও। তিনি ভারত এ দলের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকাতেই রয়েছেন।
এ ছাড়া চোটের জন্য শাহবাজ় আহমেদকে পাওয়া যাবে না। বিজয় হজারে ট্রফিতে বাংলার হয়ে দাপিয়ে খেলেছেন শাহবাজ়। হরিয়ানার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে শতরান করেছিলেন। গত কয়েক মরসুমে দলের পারফরম্যান্সে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন। তার পরেই চোট পান। আপাতত তিনি রয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। চোট সারিয়ে উঠতে সময় লাগবে বলেই জানা গিয়েছে।
বাংলার দলে রয়েছেন ঈশান পোড়েল। শুক্রবারই সিএবি লিগে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে চারটি উইকেট নিয়েছেন। চলতি মরসুমে সাদা বলের ক্রিকেটে ভাল খেলেছেন। এ বার তাঁর থেকে লাল বলেও কার্যকরী পারফরম্যান্স দেখার অপেক্ষায় বাংলা।
উল্লেখ্য, গত মরসুমে রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে উঠেছিল বাংলা। কিন্তু শেষ ধাপ পেরোতে আরও এক বার ব্যর্থ হয়। ঘরের মাঠ, অর্থাৎ ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাকে হারিয়ে ট্রফি নিয়ে যায় সৌরাষ্ট্র। অধিনায়ক হিসেবে দলকে অধরা রঞ্জি ট্রফি না দিতে পারার পর সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে মনোজ অবসর নিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু বাংলার ক্রিকেট কর্তাদের অনুরোধে আরও এক বছর থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই পরের মরসুমের রঞ্জির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মনোজ।
গত ৮ ডিসেম্বর ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়োতে তিনি স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, পরের মরসুমই তাঁর শেষ। বলেছিলেন, “আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আপনারা জানেন যে এটাই আমার ক্রিকেটযাত্রার শেষ বছর। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে পরের বছরই অবসর নেব। প্রথম অনুশীলন শুরু হল আজ থেকেই। চেয়েছিলাম মাঠে গিয়ে অনুশীলন করতে। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে ইনডোরে অনুশীলন করতে হচ্ছে।”
বাংলার প্রথম দুই ম্যাচের দল: মনোজ তিওয়ারি (অধিনায়ক), অনুষ্টুপ মজুমদার, সুদীপ ঘরামি, অভিষেক পোড়েল (উইকেটকিপার), সৌরভ পাল (উইকেটকিপার), শ্রেয়াংস ঘোষ, রণজ্যোৎ সিংহ খাইরা, শুভম চট্টোপাধ্যায়, আকাশ দীপ, ঈশান পোড়েল, প্রদীপ্ত প্রামাণিক, করণ লাল, কৌশিক মাইতি, মহম্মদ কাইফ, অঙ্কিত মিশ্র, প্রয়াস রায় বর্মন, সূরয সিন্ধু জয়সওয়াল এবং সুমন দাস। কোচ: লক্ষ্মীরতন শুক্ল। সহকারী কোচ: সৌরাশিস লাহিড়ী।