রোহিত শর্মা। ছবি: পিটিআই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ভারত ইনিংসে হারতেই সমালোচনা শুরু করেছেন কয়েক জন প্রাক্তন ক্রিকেটার। বিদেশে গেলেই ভারতের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়, এটাই বক্তব্য সুনীল গাওস্কর, রবি শাস্ত্রীদের। তবে এই সমালোচনা শুনতে রাজিই নন রোহিত শর্মা। ভারতের অধিনায়ক একহাত নিয়েছেন সমালোচকদের। সঙ্গে পরামর্শ দিয়েছেন, বিদেশে ভারতের সাম্প্রতিক রেকর্ড এক বার দেখে নিতে।
সমালোচনার প্রশ্নের উত্তরে আগাগোড়া সোজা ব্যাটে খেলেছেন রোহিত। গাওস্কর-শাস্ত্রীদের বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “মানছি এখানে আমাদের পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে। কিন্তু ভুলে যাবেন না ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে আমরা কী করেছি। অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ় জিতেছি ব্যাটারদের দৌলতে। ইংল্যান্ডে সিরিজ় ড্র করেছি, যেখানে ব্যাটার এবং বোলার দুটো বিভাগই ভাল খেলেছিল।”
রোহিতের সংযোজন, “এ ধরনের পারফরম্যান্স হতেই পারে। কিন্তু এমন নয় যে দেশের বাইরে আমরা ব্যাট করতে পারি না। কখনও কখনও বিপক্ষ আমাদের থেকে ভাল খেলে ম্যাচ জেতে। এই ম্যাচেও সেটাই হয়েছে। এমন নয় যে বিপক্ষ ১১০ ওভার ব্যাট করেছে আর আমরা দুটো ইনিংস মিলিয়েও তত ওভার ব্যাট করতে পারিনি। ভারতের বাইরে গত চারটে সফর দেখুন। রেকর্ড দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
প্রসঙ্গত, ভারতের হারের পর প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন সুনীল গাওস্কর। তিনি জানিয়েছিলেন, প্রস্তুতি না খেলে নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়ুল মেরেছে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকায় যথেষ্ট প্রস্তুতি না থাকায় হারতে হয়েছে তাদের। অন্য দিকে, রোহিতের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন শাস্ত্রী। দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরে শার্দূল ঠাকুর এবং প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে নিয়ে আসেন রোহিত। দুই প্রধান বোলার যশপ্রীত বুমরা এবং মহম্মদ সিরাজকে আনেননি। তাতেই ক্ষিপ্ত শাস্ত্রী। বলেছেন, “যে কোনও ম্যাচে ওরা (শার্দূল এবং প্রসিদ্ধ) বোলিং অর্ডারে শেষের দিকে আসবে। কেন ওদের লাঞ্চের পরে আনা হল বুঝলাম না। আমি কোচ থাকার সময় এ ব্যাপারে অনেক বার আলোচনা হয়েছে। কোনও সেশন শুরুর সময় আমরা প্রায় প্রতি বারই দলের সেরা বোলারদের নিয়ে আসতাম। এ বার সেটা দেখলাম না।”
রোহিতের সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি আর এক প্রাক্তন সঞ্জয় মঞ্জরেকরও। তিনি বলেছিলেন, “বুদ্ধির খেলায় ভারত হেরে গিয়েছে। বিরতির সময় রাহুল এবং রোহিত নিশ্চয়ই ভাল করে আলোচনা করে তার পরেই প্রসিদ্ধ এবং শার্দূলকে এনেছিল। কিন্তু সেটা কাজে লাগেনি বোঝাই যাচ্ছে।”
এ দিকে, রোহিত জানিয়েছেন, সেঞ্চুরিয়নে হারের ধাক্কা ভুলে সামনে তাকাতে চাইছেন তাঁরা। নতুন বছরে নতুন লক্ষ্য নিয়ে শুরু করতে চান। সেখানে অতীতের কথা মাথায় রাখবেন না। বলেছেন, “চাপ নেওয়াই অধিনায়কের কাজ। তার কাছে কখনও সব দিন খুশির হতে পারে। এ রকম দিনও আসবে, যখন অধিনায়ককে এগিয়ে এসে বাকিদের সামলাতে হবে। এই ম্যাচ নিয়ে খুব বেশি ভাবতে চাই না। হ্যাঁ, নিজেদের ভুলগুলো অবশ্যই বিশ্লেষণ করে দেখব যে কোথায় ভাল হতে পারত। কিন্তু হারের ভাবনা এই মাঠেই ফেলে রেখে যেতে চাই। কেপ টাউনে তা বয়ে বেড়াতে চাই না।”