প্রথমে নিউজিল্যান্ডের হয়েই খেলতে চেয়েছিলেন স্টোকস। ফাইল ছবি।
ইংল্যান্ড টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেওয়াই হয়তো হত না বেন স্টোকসের। কারণ, তাঁকে নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন রস টেলর। স্টোকসও আগ্রহী ছিলেন ‘নিজের দেশে’-র হয়ে খেলতে। তবু ইংল্যান্ডকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কেন? জানিয়েছেন টেলর।
২০১০ সালে ডারহামের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গিয়ে স্টোকসের সঙ্গে আলাপ হয় টেলরের। স্টোকসের প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হন। জানতে পারেন, স্টোকসের জন্ম নিউজিল্যান্ডে। তখনই তাঁকে নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলানোর উদ্যোগ নেন টেলর। যদিও তাঁর সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
কিছু দিন আগে প্রকাশ পেয়েছে টেলরের আত্মজীবনী ‘রস টেলর ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট’। আত্মজীবনীতে নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক ২০১০ সালের সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। টেলর লিখেছেন, ‘তখন স্টোকসের বয়স ১৮ বা ১৯। ওর সব কিছুই ছিল কিউয়িদের মতো। বেশ প্রতিভাবান ছিল। ওকে বলেছিলাম, তুমি নিউজিল্যান্ডে চলে এস। নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলবে। আমার প্রস্তাব শুনে স্টোকসও আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। বিষয়টা জানিয়েছিলাম নিউডিল্যান্ড ক্রিকেটের তৎকালীন সিইও জাস্টিন ভনকে। বলেছিলাম, স্টোকস খুব প্রতিভাবান তরুণ ক্রিকেটার। ও নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলতে আগ্রহী।’
কাউন্টি ক্রিকেটের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে স্টোকসকে সরাসরি নিউজিল্যান্ডের জাতীয় দলে সুযোগ দিতে রাজি হননি ভন। তিনি জানান, স্টোকসকে আগে নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে হবে। সাফল্য পেলে তবেই জাতীয় দলে নেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। স্টোকসকে দেখে নিতে চেয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের অন্য ক্রিকেট কর্তারাও।
বিষয়টা পছন্দ হয়নি টেলরের। তিনি লিখেছেন, ‘সিইও-কে তখনই বলেছিলাম, এটা হয়তো স্টোকস মানবে না। ও কেন আবার প্রথম থেকে শুরু করবে? স্টোকস নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলার বিষয়টা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছিল। কিন্তু নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের কর্তারা ওকে সময় মতো কোনও আশ্বাস দিতে পারেননি। ভন নিজেও ভরসা দেননি।’
নিউজিল্যান্ডের তরফে আশ্বাস না পেয়ে মত পরিবর্তন করেন স্টোকস। নিজের জন্মভূমির হয়ে খেলার আগ্রহ হারান। তাঁর বাবা নিউজিল্যান্ডের হলেও মা ছিলেন ইংল্যান্ডের। ১২ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে ক্রাইস্টচার্চ থেকে ইংল্যান্ডে চলে আসেন স্টোকস। তাঁর বাবা জেরার্ড স্টোকস ছিলেন রাগবি খেলোয়াড়। অবসর নেওয়ার পর কোচিং করাতেন। ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের একটি ক্লাবে কোচ হিসাবে যোগ দেন। পরে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি নিউজিল্যান্ডে ফিরে গেলেও স্টোকস থেকে যান ইংল্যান্ডেই। কারণ, তত দিনে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার হিসাবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পরিচিত স্টোকস।