ভারতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচক কমিটি বরখাস্ত। ফাইল ছবি
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছে ভারতীয় দল। তার পরেই গোটা নির্বাচক কমিটিকে ছেঁটে ফেলল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। শুক্রবার বিকেলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরাসরি ছেঁটে ফেলার কথা বলা হয়নি। তবে নিজেদের ওয়েবসাইটে নতুন নির্বাচক হওয়ার জন্যে আবেদন চাওয়া হয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট সময় পূরণ করার আগেই চেতন শর্মাদের ছেঁটে ফেলল বোর্ড।
সাম্প্রতিক ঘটনার বিচারে এই জিনিস ভারতীয় ক্রিকেটে বিরাট অর্থবহ। আগে কবে গোটা নির্বাচক কমিটিকে এ ভাবে ছেঁটে ফেলা হয়েছে, তা কেউই মনে করতে পারছেন না। অতীতে বার বার নির্বাচক কমিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিতর্কিত দল নির্বাচিন করা হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে পারফরম্যান্সে। এ বারও বিশ্বকাপে শুভমন গিল, সঞ্জু স্যামসনদের মতো তরুণ ক্রিকেটারদের না নেওয়ায় নির্বাচকদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
এ দিন বিকেলে বোর্ডের ওয়েবসাইটে জাতীয় নির্বাচক চেয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে লেখা হয়েছে, পুরুষ ক্রিকেট দলের জন্যে পাঁচ জন জাতীয় নির্বাচক আহ্বান করা হচ্ছে। যোগ্যতা হিসাবে ভারতের হয়ে কমপক্ষে সাতটি টেস্ট ম্যাচ খেলা, বা ৩০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা ১০টি এক দিনের ম্যাচ এবং ২০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা প্রাক্তন ক্রিকেটারদের থেকে আবেদন চাওয়া হয়েছে। অন্তত পাঁচ বছর আগে অবসর নিয়েছেন এমন প্রার্থীরাই আবেদন করতে পারবেন। বোর্ডের কোনও ক্রিকেট কমিটিতে পাঁচ বছর কাটিয়েছেন, এ রকম কেউ আবেদন করতে পারবেন না। ২৮ নভেম্বর সন্ধে ৬টা পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।
বিশ্বকাপের পরই যে নির্বাচক কমিটিতে বদল হতে চলেছে, এ কথা আগেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু পুরো নির্বাচক কমিটিকে যে এ ভাবে ছেঁটে ফেলা হবে, এটা কেউই ভাবতে পারেননি। বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে প্রশ্ন উঠে গেল ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের মেয়াদ নিয়েও। তাঁকে ইদানীং ঘন ঘন ছুটিতে পাঠানো হচ্ছে, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রীও। দ্রাবিড়ের ভূমিকাও আতসকাচের তলায়।
নির্বাচকদের দিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, তাঁরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার মতো দলই তৈরি করতে পারেননি। দলে প্রচুর বেশি বয়সী ক্রিকেটার নিয়েছেন। চেতনের আমলে ভারতীয় দলে চোট-আঘাতের পরিমাণও অনেক বেড়েছিল, যার কোনও যুৎসই জবাব কারওর থেকে পাওয়া যায়নি। কোনও ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়া হলে কেন তিনি বাদ পড়লেন, তার কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তেমনই কাউকে দলে নেওয়া হলে তার কারণও জানা যায়নি।
আবে কুরুভিল্লার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় চার নির্বাচকই এত দিন দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। বিশ্বকাপের পরেই দেবাশিস মোহান্তিরও মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। বাকিদের মেয়াদ শেষের আগে বরখাস্ত করা হল।