হতাশ মাহমুদুল্লাহ। —ফাইল চিত্র
এ বারের টি২০ বিশ্বকাপে কোনও ম্যাচ জিততে পারল না বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের মতো ফের শূন্য হাতে দেশে ফিরবেন শাকিব আল হাসানরা। বোর্ড কর্তার ক্ষোভের মুখে আগেই পড়েছিলেন ক্রিকেটাররা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হারের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে সেই গৃহযুদ্ধ ঢাকার চেষ্টা করে গেলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার ব্যাট করতে নেমে ৭৩ রানে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশ। ৬.২ ওভার খেলেই সেই রান তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। লজ্জার এই হারের পর সাংবাদিক বৈঠকে মাহমুদুল্লাহ-কে বার বার প্রশ্ন করা হয় বোর্ডের হস্তক্ষেপ নিয়ে। বিতর্ক ঢাকার চেষ্টা করতে গিয়ে মাহমুদুল্লাহ বলেন, “বোর্ডের সঙ্গে কোনও গণ্ডগোল নেই ক্রিকেটারদের। বোর্ড সব সময় চায় দল ভাল খেলুক। আমরা খেলতে না পারলে প্রশ্ন উঠবেই। আমাদের ভাল খেলতে হবে।”
যোগ্যতা অর্জন পর্বে প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের পর প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশ বোর্ডের কর্তা নাজমুল হাসান পাপন। ক্রিকেটাররা আশাপূরণ করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। মাহমুদুল্লাহ বলেন, “উনি দলের ভাল চান। সেই জন্য আবেগের বশে কিছু কথা বলেছেন। পরে আমাদের সঙ্গে কথা বলার সময় যথেষ্ট ইতিবাচক কথাই বলেছেন। বোর্ডের সঙ্গে ক্রিকেটারদের কোনও সমস্যা নেই।”
টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। টি২০ বিশ্বকাপে খারাপ ফলের পর সাদা বলের ক্রিকেট থেকে অধিনায়কত্ব ছাড়বেন তিনি? মাহমুদুল্লাহ বলেন, “আমি এখনই সরে যাওয়ার কথা ভাবছি না। তবে এই ব্যাপারে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।”
সুপার ১২-তে একটিও ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। কোথায় গলদ তাদের? মাহমুদুল্লাহ বলেন, “আমি জানি না কোথায় ভুল করেছি। দেশে ফিরে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করব।” গলদ খুঁজে না পেলেও ব্যাটিংয়ে উন্নতি প্রয়োজন বলেই মনে করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তিনি বলেন, “ঘরের মাঠে আমরা যথেষ্ট সুবিধা পেয়েছি। সেই সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু ম্যাচ জিতেছি। কিন্তু বিদেশে জিততে গেলে ব্যাটিং ভাল করতে হবে। পাওয়ার প্লে-তে খেলতেই পারিনি আমরা। ব্যাটিংয়ে উন্নতি প্রয়োজন।”
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বিশ্বকাপ খেলতে নামার আগে মাত্র চার দিন অনুশীলন করেছিল বাংলাদেশ দল। এত কম অনুশীলনেই ডুবল তারা? মাহমুদুল্লাহ বলেন, “টানা চার-পাঁচ মাস খেলছি আমরা। একের পর এক জৈব বলয়ে সময় কাটাতে হয়েছে। এর ফলে ক্লান্তি আসে। বিশ্বকাপের আগে বেশি অনুশীলন করতে গেলে চোট লাগার সম্ভাবনা থাকে। টিম ম্যানেজমেন্ট সেই জন্যই হয়তো চায়নি বেশি অনুশীলন করুক দল।”
২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্বে রয়েছেন রাসেল ডোমিঙ্গো। শান্ত কোচ বলেই পরিচিত তিনি। তাঁর জন্যই এত খারাপ ফল বাংলাদেশের? মানতে নারাজ মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেন, “হারের দায়ে সকলের। শুধু কোচকে দায়ী করলে চলবে না। ডোমিঙ্গো আগামী দিনে কোচ থাকবেন কি না সেটা বোর্ড ঠিক করবে। তবে কোচের সঙ্গে ক্রিকেটারদের কোনও গণ্ডগোল নেই।”
বিশ্বকাপ শেষ বাংলাদেশের। যোগ্যতা অর্জন পার করলেও সুপার ১২-এ তাদের প্রাপ্তি শূন্য। সব ম্যাচ হারতে হয়েছে। মাহমুদুল্লাহ বলেন, “শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হেরে মনোবল ভেঙে গিয়েছিল। জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারিনি আমরা। বিদেশের মাঠে সেরা দলগুলির বিরুদ্ধে টি২০ খেলতে এখনও সমস্যা রয়েছে আমাদের। উন্নতি প্রয়োজন বিভিন্ন জায়গায়। তবে দলের খোলনলচে পাল্টে যাবে কি না সেটা বোর্ড ঠিক করবে।”