অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার উসমান খোয়াজা। —ফাইল চিত্র।
উসমান খোয়াজার জুতোয় লেখা, “স্বাধীনতা মানুষের অধিকার” এবং “সব মানুষের জীবনের দাম সমান।” গাজ়া হামলার কথা মাথায় রেখেই এই বার্তা দিতে চেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ় শুরু বৃহস্পতিবার থেকে। সেখানেই এই জুতো পরার কথা ভেবেছিলেন খোয়াজা। কিন্তু আইসিসি-র নিয়মের বাধায় তা সম্ভব হচ্ছে না। আইসিসি-র উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন অসি ক্রিকেটার।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অনুশীলন করতে নেমেও জুতোয় এই বার্তা লিখেছিলেন খোয়াজা। টেস্টেও এই জুতো পরার ভাবনা ছিল তাঁর। কিন্তু জানতে পারেন সেই কাজ করলে আইসিসি তাঁকে নির্বাসিত করতে পারে। খোয়াজা বলেন, “আমার জুতোয় লেখা বার্তা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। তবে এই নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। প্রয়োজনও নেই। কিন্তু যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন আমার এই লেখা নিয়ে, তাঁদের আমি বলব নিজেদের প্রশ্ন করুন। সত্যিই কি স্বাধীনতা সকলের জন্য নয়? সকলের জীবনের দাম কি সমান নয়? আমি কারও ধর্ম, জাতি বা সংস্কৃতি নিয়ে ভাবি না। কিন্তু যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা নিশ্চয়ই আমার কথার সঙ্গে সহমত নন, সেই কারণেই প্রশ্ন তুলছেন।”
আইসিসি-র নিয়ম অনুযায়ী কোনও রকম রাজনৈতিক বার্তা ক্রিকেটারেরা মাঠের মধ্যে কোথাও ব্যবহার করতে পারবেন না। খোয়াজা বলেন, “আমি কোনও রাজনৈতিক বার্তা লিখিনি। আমি কারও পক্ষ নিয়েও কথা বলিনি। আমার কাছে সকলেই সমান। মুসলিম হোক বা জিহু বা হিন্দু সকলেই এক। আমি তাঁদের হয়ে কথা বলছি, যাঁরা নিজেদের কথা বলতে পারছে না। অবলা শিশুদের কাঁদতে দেখলে আমার কষ্ট হয়। আমার দুই মেয়ের যদি এমন অবস্থা হত? জন্মের সময় তো আর কেউ ঠিক করতে পারে না, সে কোথায় জন্ম নেবে। কিন্তু যখন দেখি পৃথিবী কারও কারও থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তখন কষ্ট হয়। আইসিসি আমাকে বলেছে যে, এই জুতো পরতে পারব না। ওদের মনে হয়েছে এটা রাজনৈতিক বার্তা। আমি যদিও সেটা বিশ্বাস করি না। তবে আইসিসি যখন বলেছে, আমি সেই নির্দেশ মেনে চলব। ওই জুতো পরব না।”
খোয়াজা ওই জুতো না পরলেও জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁর বিশ্বাস বদলাবে না। খোয়াজা বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, স্বাধীনতা মানুষের অধিকার এবং সব মানুষের জীবনের দাম সমান। আমার এই বিশ্বাস বদলাবে না। সে কেউ আমার সঙ্গে সহমত হোক বা না হোক।”
আইসিসি-র নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ক্রিকেটার এমন জিনিস পরে মাঠে নামতে পারবেন না যেখানে রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা বর্ণবিদ্বেষী বার্তা রয়েছে। এমন কোনও জিনিস পরতে হলে আইসিসি-র অনুমতি প্রয়োজন। তবে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের সময় হাঁটু মুড়ে বসে প্রতিবাদ জানানোর ক্ষেত্রে সম্মতি দিয়েছিল আইসিসি।