(বাঁ দিক থেকে) অ্যাশেজ়ের পঞ্চম ম্যাচের শেষ ইনিংসে ব্যবহার হওয়া পুরনো এবং নতুন বল। ছবি: রয়টার্স।
অ্যাশেজ়ের পঞ্চম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার অপ্রত্যাশিত হার। মানতে পারছেন না দলের ক্রিকেটারেরা। এর পিছনে ‘নতুন’ বলকে দায়ী করছেন উসমান খোয়াজা। তাঁর মতে আইসিসি-র এই বিষয়টা দেখা উচিত। প্রায় একই কথা বলেছিলেন রিকি পন্টিং। রবিবার বৃষ্টির কারণে বেশি ওভার খেলা হয়নি। কিন্তু সে দিন যে বলে খেলা হচ্ছিল, সেটির আকৃতি নষ্ট হওয়ায় তা পাল্টানো হয়। সোমবার সেই বলই ঘাতক হয়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়ার জন্য।
ম্যাচ শেষে বিরক্ত খোয়াজা বলেন, “বল পাল্টানোর সময় আমি আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনার সঙ্গে কথা বলি। যে বলটা নেওয়া হল তাতে লেখাগুলো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। অথচ পুরনো বলে সে সব ছিল না। একেবারেই আলাদা দুটো বল। যে বলটা নেওয়া হয়েছিল, সেটা একেবারে নতুন বলের মতো শক্ত ছিল। আমি গোটা অ্যাশেজ়ে ওপেন করেছি। জানি, নতুন বল ব্যাটে এসে লাগলে কেমন আওয়াজ হয়। এটাতেও ঠিক সে রকমই আওয়াজ হচ্ছিল। মার্ক উডকে আমি আগেও খেলেছি। আমি ওকে বলি যে, তুমি তো রিভার্স সুইং করা পুরনো বল বদলে একেবারে নতুন বল পেয়ে গেলে। বলটা দেখে মনে হচ্ছিল খুব বেশি হলে আট ওভার পুরনো।”
রবিবার অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭তম ওভারে উডের বাউন্সার খোয়াজার হেলমেটে গিয়ে লেগেছিল। মাঠের দুই আম্পায়ার জোয়েল উইলসন এবং ধর্মসেনা মনে করেছিলেন, হেলমেটে লেগে বলের আকৃতি পাল্টে গিয়েছে। তাই তাঁরা বলটিকে বদলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এর পরে বৃষ্টির জন্য চতুর্থ দিনে খুব বেশি ওভার খেলা হয়নি। সোমবার সেই বলে যখন খেলা শুরু হয়, তখন মেঘলা আকাশ। অনেকের মতে পাল্টে দেওয়া বলটি শক্ত হওয়ায় ইংল্যান্ড বাড়তি সুবিধা পেয়ে যায়।
বল পাল্টে যাওয়ায় খোয়াজা দুই আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলেন। অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার বলেন, “আম্পায়ার জোয়েল বলেন যে, বাক্সে আর তেমন কোনও পুরনো বল ছিল না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, যদি পুরনো বল না থাকে তা হলে ম্যাচের বলটি না পাল্টানোই ভাল। ব্যাটার হিসাবে এটা খুবই খারাপ। আমরা ৩৫-৩৬ ওভার ব্যাট করে ফেলেছি। এর পর হঠাৎ বল পাল্টে গেল। ওপেনার হিসাবে আমাদের কাজটার দাম রইল না। এত ক্ষণের পরিশ্রমের পর আবার নতুন বল খেলতে হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া যখন ৯৫ ওভারে ব্যাট করছে, তখনও সেই বল সুইং করেছে, বাউন্স পেয়েছে। তবে ক্রিকেটে এমন হতেই পারে। আশা করব আইসিসি বল পরিবর্তনের নিয়ম নিয়ে কিছু ভাববে।”
একই মত অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক পন্টিংয়ের। তিনি মনে করেন, হয় আম্পায়ারেরা বল বদলে ঠিক কাজ করেননি, অথবা তাঁদের কাছে উপযুক্ত বিকল্প বলের বাক্স পাঠানো হয়নি। ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে পন্টিং বলেন, ‘‘আমার সব চেয়ে বড় আপত্তি হচ্ছে, দুটো বলের মধ্যে অনেক তফাত ছিল। যে বলটা সরানো হল আর যেটা আনা হল, দুটো পাশাপাশি রাখলে কেউ বলবে না একই রকম বল।’’ তাঁর আরও সওয়াল, ‘‘বল যদি পাল্টাতেই হয়, তা হলে নিশ্চিত করা দরকার যেন পুরনোটার মতো অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু বাক্সটার মধ্যে যদি ভাল করে তাকিয়ে দেখে কেউ, তা হলে দেখতে পাবে খুব বেশি পুরনো অবস্থায় থাকা বল ছিল না। কয়েকটা পুরনো বল ছিল। কিন্তু আম্পায়ারেরা সেগুলো নেড়েচেড়ে দেখে বাক্সেই রেখে দিয়েছিলেন।’’