অর্ধশতরানের পর দর্শকদের অভিবাদন গ্রহণ করছেন উসমান খোয়াজা। ছবি: রয়টার্স
প্রথম সেশনে ইংল্যান্ডের পেসাররা দাপট দেখালেও দ্বিতীয় সেশনে ম্যাচে ফিরল অস্ট্রেলিয়া। নেপথ্যে দলের দুই ব্যাটার উসমান খোয়াজা ও ট্রাভিস হেড। দ্বিতীয় সেশনে মাত্র একটিই উইকেট পড়ল। রান উঠল ১১০। তবে এখনও ইংল্যান্ডের থেকে ২০৫ রান পিছিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম সেশনে ডেভিড ওয়ার্নার, মার্নাশ লাবুশেন ও স্টিভ স্মিথকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। দলের ইনিংসকে ধরার দায়িত্ব ছিল খোয়াজা ও হেডের উপর। দ্বিতীয় সেশনে সেই কাজটাই করলেন তাঁরা। অযথা তাড়াহুড়ো না করে ঠান্ডা মাথায় খেললেন। বল অনুযায়ী শট মারলেন। তার ফল পেল অস্ট্রেলিয়া।
খোয়াজা নিজের পরিচিত ছন্দে খেলছিলেন। সময় নিয়ে, ধৈর্য ধরে রান করছিলেন তিনি। অন্য দিকে হেডও নিজের পরিচিত ছন্দে খেলছিলেন। কয়েক দিন আগেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শতরান করেছেন তিনি। তাই আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি রয়েছে এই বাঁ হাতি ব্যাটারের। ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের নীতিতে খেললেন তিনি। যেমনটা করেছিলেন ভারতের বিরুদ্ধে। দ্রুত রান করছিলেন হেড। অন্য দিকে ইনিংসকে ধরে রাখার কাজ করছিলেন খোয়াজা। ১০৬ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি। ভারতের বিরুদ্ধে রান না পেলেও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর ইনিংস ভরসা দেবে অস্ট্রেলিয়াকে।
অন্য দিকে মাত্র ৬২ বলে ৫০ রান করেন হেড। ৮টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। কিন্তু তার পরেই ছন্দপতন। মইন আলির বল উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন তিনি। সেই ওভারেই নিজের দ্বিতীয় উইকেট পেতে পারতেন মইন। ব্যাট করতে নেমেই উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে শট মারতে যান ক্যামেরন গ্রিন। বলের লাইন মিস করেন তিনি। উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোর কাছে সুযোগ ছিল স্টাম্প আউট করার। কিন্তু তিনি বল ধরতে পারেননি। ফলে বেঁচে যান গ্রিন।
তার পরে অবশ্য ইংল্যান্ডকে কোনও সুযোগ দেননি গ্রিন। খোয়াজার সঙ্গে মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। বাকি সময়ে অনেক চেষ্টা করেও উইকেট পায়নি ইংল্যান্ড। চা বিরতির সময় অস্ট্রেলিয়ার রান ৪ উইকেটে ১৮৮। খোয়াজা ৮৪ ও গ্রিন ২১ রানে ব্যাট করছেন।
দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকে বার্মিংহ্যামের আকাশে ছিল মেঘ। আবহাওয়া সুইং বোলিংয়ের উপযুক্ত ছিল। তাকে কাজে লাগান ইংল্যান্ডের পেসাররা। শুরু থেকেই গুড লেংথে বল করছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড, ওলি রবিনসন, জেমস অ্যান্ডারসনরা। ফলে অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খোয়াজা স্বচ্ছন্দে খেলতে পারছিলেন না।
অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ধাক্কা দেন ব্রড। ওয়ার্নারকে বোল্ড করেন তিনি। তবে ওয়ার্নারকে আউট করার ক্ষেত্রে ব্রডের কৃতিত্ব খুব একটা বেশি নয়। টেস্ট ক্রিকেটের অনুপযুক্ত শট খেলে আউট হন ওয়ার্নার। রান করতে না পারার চাপের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের বল মারতে যান তিনি। বল ব্যাটে লেগে উইকেটে লাগে। পরের বলেই মার্নাশ লাবুশেনকে আউট করেন ব্রড। সে ক্ষেত্রে অবশ্য পুরো কৃতিত্ব ব্রডেরই। প্রথম বলেই লাবুশেনকে ব্যাট ছোঁয়াতে বাধ্য করেন তিনি। বল ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক জনি বোয়ারস্টোর দস্তানায় যায়। শূন্য রানে ফেরেন টেস্ট ক্রমতালিকায় বিশ্বের সেরা ব্যাটার।
দুই উইকেট পড়ার পরে খোয়াজার সঙ্গে জুটি বাঁধেন স্টিভ স্মিথ। ধীরে ধীরে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা। প্রথম সেশনেই সাত বোলারকে ব্যবহার করেন অধিনায়ক বেন স্টোকস। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির ঠিক আগেই স্মিথকে ফেরান স্টোকস। তাঁর বল গুড লেংথে পড়ে ভিতরের দিকে ঢুকে স্মিথের প্যাডে গিয়ে লাগে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেন। স্মিথ রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।