অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যমে সোমবার এই খবর ফাঁস হয়ে যায়। যার পরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেরই ওই সময় মনে পড়ে যাচ্ছিল, গত বছর নিউজ়িল্যান্ড সিরিজ়ের কথা।
জুটি: অ্যাশটন অ্যাগারের স্ত্রীর কাছে এসেছে হুমকি। ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ ২৪ বছর পরে পাকিস্তান সফরে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। আর সফরের দ্বিতীয় দিনেই সামনে চলে এল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। জানা গিয়েছে, সফরে আসার আগে অস্ট্রেলিয়ার বাঁ-হাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগারকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
তবে ওই হুমকি সরাসরি অ্যাগারকে দেওয়া হয়নি। ইনস্টাগ্রামে পাঠানো হয়েছিল তাঁর স্ত্রী ম্যাডেলিনকে। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, পাকিস্তান সফরে এলে তাঁর স্বামীকে আর বেঁচে ফিরতে হবে না।
অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যমে সোমবার এই খবর ফাঁস হয়ে যায়। যার পরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেরই ওই সময় মনে পড়ে যাচ্ছিল, গত বছর নিউজ়িল্যান্ড সিরিজ়ের কথা। শেষ মুহূর্তে এ রকমই হুমকি পাওয়ার ফলে সফর বাতিল করে দেশে ফিরে যায় নিউজ়িল্যান্ড ক্রিকেট দল।
এই জল্পনার মাঝেই অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে খবরের সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়। জানানো হয়েছে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এবং সে দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থাও এই হুমকি খতিয়ে দেখছে। তবে এখনই নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। অস্ট্রেলীয় বোর্ডের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘গণমাধ্যমে এই ধরনের ঘটনা সামলানোর মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা আছে। এই ঘটনায় এখনও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে বলে কোনও খবর নেই। এই নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করা হবে না।’’
অ্যাগার এখন অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে ইসলামাবাদে আছেন। পাকিস্তানে পৌঁছনোর ছবিও তিনি গণমাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন। কী বার্তা পাঠানো হয়েছিল অ্যাগারের স্ত্রী ম্যাডেলিনকে? গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই বার্তার স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে লেখা হয়েছে— ‘‘আপনার স্বামী অ্যাশটন অ্যাগারকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। ও যদি পাকিস্তান সফরে আসে, তা হলে আর জীবন্ত ফিরে যেতে পারবে না। পাকিস্তানে এলে আপনার সন্তানরা ওদের বাবাকে হারাবে।’’
এই বার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা জানানো হয় অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে। জানা যাচ্ছে, কোনও একটি ভুয়ো ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে এই বার্তা পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তানও এই নিয়ে তদন্ত করছে। তবে এই হুমকিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তারা। পাকিস্তানে পা দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক প্যাট কামিন্স জানিয়েছিলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তাঁরা সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট।
রাওয়ালপিন্ডিতে ৪ মার্চ প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া। কামিন্সদের দলে আছন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার উসমান খোয়াজা। এ দিন তিনি বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানে এসে ক্রিকেট খেলতে পারার অনুভূতিটাই আলাদা।’’ ৩৬ বছর বয়সি খোয়াজার জন্ম হয়েছিল ইসলামাবাদে। তার পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। খোয়াজা বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানের মাটিতে এসে খেলার ইচ্ছে আমার অনেক দিনের। রাওয়ালপিন্ডির পুরনো স্টেডিয়ামে আমি ছোটবেলায় যেতাম। তাই এখানে খেলার একটা আলাদা ইচ্ছে ছিল।’’ অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের খেলা হলে তাঁদের পরিবারের সমর্থন কোন দলের দিকে থাকে? খোয়াজা বলেছেন, ‘‘আমি সব সময় অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে চেয়েছিলাম। আমার বাবা-মা পাকিস্তানকে সমর্থন করে, আমি অস্ট্রেলিয়াকে। তবে আমি পাকিস্তানি সংস্কৃতি মেনে চলি। বাড়িতে মায়ের সঙ্গে উর্দুতেও কথা বলি।’’ মাঠে নামলে তিনি দর্শকদের থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা পাবেন বলেই মনে করেন খোয়াজা। এই বাঁ-হাতি ব্যাটারের কথায়, ‘‘পাকিস্তানিরা ক্রিকেট ভালবাসে।’’