নেপালের বিরুদ্ধে শতরানের পর পাক অধিনায়ক বাবর। ছবি: আইসিসি।
নেপালের বিরুদ্ধে বড় জয় দিয়ে এশিয়া কাপ অভিযান শুরু করল পাকিস্তান। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন পাক অধিনায়ক বাবর আজ়ম। তাঁর এবং ইফতিকার আহমেদের জোড়া শতরানের সুবাদে ৬ উইকেটে ৩৪২ রান করে পাকিস্তান। জবাবে নেপালের ইনিংস শেষ হল ২৩.৪ ওভারে ১০৪ রানে। পাকিস্তান জিতল ২৩৮ রানে।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই শতরান করলেন বাবর। এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাক অধিনায়ক ১৯তম শতরান করলেন নেপালের বিরুদ্ধে। বুধবার মুলতানে ১০৯ বলে শতরান পূর্ণ করলেন বাবর। পাশাপাশি, প্রথম অধিনায়ক হিসাবে এশিয়া কাপে ১৫০ রানের ইনিংসও খেললেন বাবর। এক দিনের ক্রিকেটে শতরানের সংখ্যায় ডেভিড ওয়ার্নার, ব্রায়ান লারা এবং মাহেলা জয়বর্ধনের পাশে চলে এলেন তিনি। পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের মধ্যে এক দিনের শতরানের ক্ষেত্রে বাবর আছেন দ্বিতীয় স্থানে। তাঁর আগে রয়েছেন শুধু প্রাক্তন ওপেনিং ব্যাটার সইদ আনোয়ার।
বুধবার নেপালের বিরুদ্ধে দ্রুত দু’উইকেট হারায় পাকিস্তান। এর পর দলের ইনিংসের হাল ধরেন বাবর। উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে ঠান্ডা মাথায় শতরান করলেন তিনি। প্রতিপক্ষ নেপাল হলেও মুলতানের মন্থর ২২ গজে ব্যাট করা সহজ ছিল না। পাকিস্তানের অন্য ব্যাটারদের মধ্যে অস্বস্তি দেখা গেলেও বাবর খেললেন স্বচ্ছন্দে। শতরান করার আগে একটিও ছয় মারার চেষ্টা করেননি তিনি। মাটিতে বল রেখে খেলার চেষ্টা করেছেন। তবে মেরেছেন ১০টি চার। শতরান পূর্ণ হওয়ার পর আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত বাবর খেললেন ১৩০ বলে ১৫১ রানের ইনিংস। মারলেন ১৪টি চার এবং চারটি ছক্কা। মন্থর উইকেটের কথা মাথায় রেখে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাবর। দুই ওপেনার ফখর জামান (১৪) এবং ইমাম উল হক (৫) ব্যর্থ হওয়ার পর দলের হাল ধরেন পাক অধিনায়ক। নিয়মিত তিন নম্বরেই ব্যাট করতে নামেন তিনি।
বাবরের পাশাপাশি শতরান পেলেন ইফতিকারও। তিনি করলেন ৭১ বলে অপরাজিত ১০৯ রান। মারলেন ১১টি চার এবং চারটি ছয়। তাঁকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটর জুটিতে বাবর তুললেন ২১৪ রান। পাকিস্তানের ইনিংশ শেষ হল ৬ উইকেটে ৩৪২ রানে। রান পেলেন মহম্মদ রিজওয়ানও। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ছ’টি চারের সাহায্যে করেন ৫০ বলে ৪৪ রান।
নেপালের সফলতম বোলার সোমপাল কামি। তিনি ৮৫ রানে ২ উইকেট নিলেন। সন্দীপ লামিছানে ৬৯ রান খরচ করে ১ উইকেটে নিলেন। নেপালের কোনও বোলারই শেষ দিকে পাকিস্তানের রান তোলার গতি রুখতে পারেননি।
জয়ের জন্য ৩৪৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নেপালের ব্যাটারেরা ধরে খেলার চেষ্টা করেন। অযথা ঝুঁকি নেননি রোহিত পাউডেলেরা। তবু নেপালের প্রথম তিন ব্যাটার সাফল্য পেলেন না। দ্রুত সাজঘরে ফিরলেন কুশল ভুরতেল (৮), আসিফ শেখ (৫) এবং রোহিত (শূন্য)। কিছুটা লড়াই করলেন চার নম্বরে নামা আরিফ শেখ এবং সোমপাল। আরিফের ব্যাট থেকে এল ৩৮ বলে ২৬ রান। মারলেন পাঁচটি চার। চারটি চারের সাহায্যে সোমপাল করলেন ৪৬ বলে ২৮ রান।
পাকিস্তানের জোরে বোলারদের সামনে নেপালের ব্যাটারেরা কখনও স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। প্রতিপক্ষ তুলনায় দুর্বল হওয়ায় শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহেরাও পেশাদারি মানসিকতার পরিচয় দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের জন্য শক্তি বাঁচিয়ে রাখলেন। ছ’নম্বরে নেমে কিছুটা রান করার চেষ্টা করলেন গুলশন ঝা। ২৩ বল খেলে ১৩ রান করলেন তিনি। নেপালের আর কোনও ব্যাটার বলার মতো কিছু করতে পারেননি।
পাকিস্তানের হ্যারিস রউফ ১৬ রানে ২ উইকেট নিলেন। শাহিন ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। ২৭ রানে ৪ উইকেট শাদাব খানের। ১৭ রানে ১ উইকেট নাসিমের। ১৩ রানে ১ উইকেট মহম্মদ নওয়াজের।
বুধবারের জয় এক দিনের ক্রিকেটে রানের হিসাবে পাকিস্তানের তৃতীয় বৃহত্তম জয়। ২০১৬ সালে আয়ারল্যান্ডকে ২৫৫ রানে হারিয়েছিল পাকিস্তান। ২০১৮ সালে জ়িম্বাবোয়েকে ২৪৪ রানে হারায় তারা। এত দিন তৃতীয় স্থানে ছিল ২০০০ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২৩৩ রানে জয়।