রবিবারের ম্যাচের নায়ক হার্দিক পাণ্ড্য। ফাইল চিত্র
তিন বলে দরকার ছয় রান। উৎকণ্ঠায় দর্শকরা। কিন্তু তিনি শান্ত, পরিণত। অপর প্রান্তে থাকা দীনেশ কার্তিককে অধৈর্য হতে দেখে চোখের চাউনিতে বুঝিয়ে দিলেন, ‘আমি আছি। চিন্তা নেই।’ পরের বলটাই উড়ে গেল বাউন্ডারির বাইরে। ছক্কা মেরে ভারতকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন হার্দিক পাণ্ড্য। ব্যাটে-বলে ম্যাচের রাজা তিনি। ম্যাচ জিতিয়ে কী বলছেন হার্দিক? বলছেন, শেষ ওভারে ১৫ রান দরকার থাকলেও জিততাম।
পাকিস্তান ম্যাচের পরে বিসিসিআই একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে হার্দিকের। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘এই ধরনের ম্যাচে রান তাড়া করার সময় প্রতি ওভার ধরে পরিকল্পনা করতে হয়। আমি জানতাম শেষে নাসিম বা শাহনওয়াজের মধ্যে এক জনকে বল করতে হবে। দু’জনেরই অভিজ্ঞতা কম। তা ছাড়া স্পিনারেরও এক ওভার বাকি ছিল। শেষ ওভারে সাত রান দরকার ছিল। যদি ১৫ রানও দরকার হত আমরা জিততাম। কারণ, শেষ ওভারে বোলারের উপরে চাপ বেশি থাকত।’’
শেষ ওভারের প্রথম বলে জাডেজা আউট হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন হার্দিক। বাকি ইনিংসে ভাবলেশহীন দেখাচ্ছিল তাঁকে। শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে মাত্র এক রান হলেও চাপ নেননি ভারতীয় অলরাউন্ডার। তিনি জানতেন, একটি শটেই খেলা শেষ করতে পারবেন। হার্দিক বলেছেন, ‘‘আমি চাপ নিইনি। কারণ, ৩০ গজের মধ্যে পাঁচ জন ফিল্ডার ছিল। জানতাম, নওয়াজের একটা বল আমি ঠিক বাউন্ডারির বাইরে ফেলতে পারব। তাই ওর ভুলের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।’’
বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়েছে হার্দিকের। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপে এই দুবাইয়ের মাঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই বল করার সময় পিঠে চোট পেয়েছিলেন। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে নিয়ে যেতে হয় তাঁকে। চার বছর পরে সেই মাঠেই রাজকীয় প্রত্যাবর্তন হল তাঁর। বল করার সময় চার ওভারে ২৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন। আবার ব্যাট করার সময় ১৭ বলে ঝোড়ো ৩৩ রান।
ব্যাট করার সময় চার বছর আগের স্মৃতি মনে পড়ছিল হার্দিকের। তিনি বলেছেন, ‘‘সব কিছু মাথার মধ্যে ঘুরছিল। স্ট্রেচারে করে ওই সাজঘরেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে ফিরে এ রকম খেলতে পারলে মনে হয় কিছু করতে পেরেছি।’’ তাঁকে সুস্থ করে তোলার জন্য দলের চিকিৎসক নিতিন পটেল ও সোহম দেশাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হার্দিক। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে আবার সুস্থ করে তোলার জন্য যারা লড়াই করেছে তাদের নাম নিতিন ও সোহম। আমি আজ যা করতে পারছি তার সিংহভাগ কৃতিত্ব ওদের প্রাপ্য।’’