বেন স্টোকস। —ফাইল চিত্র।
অ্যাশেজ সিরিজ়ের চতুর্থ টেস্টের প্রথম একাদশ ঘোষণা করল ইংল্যান্ড। ১৯ জুলাই থেকে শুরু হবে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ টেস্ট। তার দু’দিন আগেই ১১ জনের নাম জানিয়ে দিলেন বেন স্টোকস, ব্র্যান্ডন ম্যাকালামেরা। পরিবর্তন হয়েছে তৃতীয় টেস্ট জয়ী একাদশে।
প্রত্যাশা মতোই ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেবেন স্টোকস। চতুর্থ টেস্টের প্রথম একাদশে ফেরানো হয়েছে অভিজ্ঞ জোরে বোলার জেমস অ্যান্ডারসনকে। প্রথম দু’টি টেস্টে ভাল পারফরম্যান্স করতে না পারায় তৃতীয় টেস্টের প্রথম একাদশে অ্যান্ডারসনকে রাখেননি স্টোকসেরা। অলি রবিনসনের জায়গায় তাঁকে প্রথম একাদশে ফেরানো হয়েছে। রয়েছেন উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোও। ইংল্যান্ডের ঘোষিত একাদশে রয়েছেন বেন ডাকেট, জ্যাক ক্রলি, মইন আলি, জো রুট, হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস, জনি বেয়ারস্টো, ক্রিস ওকস, মার্ক উড, স্টুয়ার্ট ব্রড এবং জেমস অ্যান্ডারসন।
অ্যাশেজ সিরিজ়ের প্রথম দু’টি টেস্টে হারের পর তৃতীয় টেস্টে জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। ম্যাঞ্চেস্টারের চতুর্থ টেস্ট তাই স্টোকসদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সিরিজ় জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে এই ম্যাচে প্যাট কামিন্সদের হারাতেই হবে তাঁদের। অন্তত ড্র রাখতে হবে ম্যাচ। তা হলেও পঞ্চম টেস্ট জিতে ঘরের মাঠে সিরিজ় পরাজয় এড়াতে পারবেন তাঁরা। আর চতুর্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া জিতে গেলে ইংল্যান্ডের সিরিজ় পরাজয় ম্যাঞ্চেস্টারেই নিশ্চিত হয়ে যাবে। তবু টেস্ট শুরুর দু’দিন আগেই প্রথম একাদশ ঘোষণা করে ইংল্যান্ড হয়তো প্রতিপক্ষ শিবিরকে বুঝিয়ে দিতে চাইল, পিছিয়ে থাকলেও তারা চিন্তিত নয়। বাজ়বল ক্রিকেটের (ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলাচ্ছেন দলকে। যেহেতু তাঁর ডাকনাম ‘বাজ়’, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটকে বাজ়বল বলা হচ্ছে।) মেজাজেই খেলবেন স্টোকসেরা।
অ্যাশেজ সিরিজ়ে হারতে চায় না কোনও দল। কারণ ঐতিহ্যবাহী এই সিরিজ় ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের মর্যাদার সঙ্গে জড়িত।
অ্যাশেজ সিরিজ়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। যা কিছুটা ব্যাঙ্গাত্মক। খানিকটা শোকেরও। ১৮৮২ সালে ওভালে আয়োজিত টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম হেরেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেড স্পফোর্থের অনবদ্য বোলিংয়ের কাছে হারতে হয়েছিল ইংরেজদের। চতুর্থ ইনিংসে ৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। স্পফোর্থ ৪৪ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। ০-১ ব্যবধানে সিরিজ় হেরে গিয়েছিল। পরের দিন ইংল্যান্ডের সংবাদপত্র ‘দ্য স্পোর্টিং টাইমস্’ তাদের প্রতিবেদনে ক্রিকেট দলের তীব্র সমালোচনা করেছিল। লেখা হয়েছিল, ইংরেজ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রাখল ওভালের ২৯ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সঙ্গে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংরেজ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া হয়েছে। এর পরের বছর সিরিজ় পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় যায় ইংল্যান্ড। সংবাদমাধ্যমের ব্যঙ্গ মনে রেখে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আইভো ব্লাই বলেছিলেন, তাঁরা অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন।
সে সময় কয়েক জন অস্ট্রেলীয় মহিলা ব্লাইকে আগের সিরিজ়ে পরাজয় নিয়ে পাল্টা ব্যঙ্গ করে ছাইভর্তি একটি পাত্র দিয়েছিলেন। যাতে ছিল উইকেটের উপরে থাকা বেলের ছাই। তার পর থেকে দু’দেশের টেস্ট সিরিজ় ‘অ্যাশেজ’ বলে পরিচিত হয়। ব্লাই অবশ্য ছাইয়ের সেই আধারটি ব্যক্তিগত উপহার হিসাবে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। বিজয়ী দলকে ট্রফি হিসাবে তা দেওয়া হত না তখন। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী লর্ডসের এমসিসি জাদুঘরে সেই পাত্রটি দান করে দিয়েছিলেন।