জয় শাহ। —ফাইল চিত্র
বিশ্বকাপের মাঝে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ আনলেন শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুন রণতুঙ্গ। তাঁর অভিযোগ, জয়ের নির্দেশেই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডে এত দুর্নীতি হচ্ছে। তাতে আখেরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে দেশের ক্রিকেট।
শ্রীলঙ্কার একটি সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রণতুঙ্গ বলেন, ‘‘শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে জয়ের ভাল যোগাযোগ রয়েছে। সেই কারণে কর্তারা মনে করছেন, তাঁরা যা ইচ্ছা করতে পারেন। আদতে জয় শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট চালাচ্ছে। ওর নির্দেশেই সব চলছে। ভারত থেকে একটা লোকের চাপে ধীরে ধীরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’’
রণতুঙ্গের মতে, বাবা অমিত শাহের ক্ষমতা ব্যবহার করেন জয়। নইলে তাঁর নিজের কোনও ক্ষমতা নেই। শ্রীলঙ্কার ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক বলেন, ‘‘বাবার জন্যই শুধু জয়ের এত ক্ষমতা। ওর বাবা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নইলে জয়ের কিছু করার ক্ষমতা থাকত না।’’
বিশ্বকাপে বিপর্যয় এবং ভারতের কাছে লজ্জাজনক হারের জন্য শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড ভেঙে দিয়েছিল সে দেশের সরকার। বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক রণতুঙ্গের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তিকালীন একটি কমিটি তৈরি করা হয়। সেই কমিটিকে ক্রিকেট বোর্ডের কাজকর্ম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের অপসারিত সভাপতি শাম্মি সিলভা। শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্ট দু’সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকারের নির্দেশের উপর।
এই ডামাডোলের মধ্যেই ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনায় সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে তাদের নিলম্বিত করে আইসিসি। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে শাস্তি ঘোষণা করা হয়। শাস্তি না উঠলে আইসিসি-র কোনও প্রতিযোগিতায় খেলতে পারবে না শ্রীলঙ্কা। অথচ আগামী বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আয়োজক তারাই। এই পরিস্থিতিতে আইসিসির দেওয়া শাস্তি নিয়ে হেস্তনেস্ত করতে চাইছে শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রক। আগামী ২১ নভেম্বর আবার আইসিসি-র বৈঠক রয়েছে। সে দিন শ্রীলঙ্কার বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা রয়েছে। পাল্টা পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কাও। শনিবার এ কথা জানিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী রোশন রণসিংঘে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা কোনও পদ্ধতি নয়। আইসিসি বা অন্য কোনও সংস্থা যখন কোনও নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করে, তখন তার একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া থাকে। এ ভাবে শাস্তি ঘোষণা করা বেশ আশ্চর্যজনক। নীতিগত ভাবে এটা ঠিক নয়। তারা আর কী ভাবে আমাদের দেশকে অপমান করতে পারে!’’ আইসিসির কাছে শাস্তি মকুবের আবেদন করার কথা জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী। তাতে কাজ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ভাববেন তাঁরা।