(বাঁ দিকে) বিনোদ কাম্বলি এবং আন্দ্রেয়া হিউইট (ডান দিকে)। ছবি: এক্স (টুইটার)।
অসুস্থতা-সহ একাধিক কারণে সম্প্রতি খবরে উঠে এসেছেন বিনোদ কাম্বলি। ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটারের শারীরিক পরিস্থিতি স্তম্ভিত করে দিয়েছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের। দুই সন্তান এবং স্ত্রী আন্দ্রেয়া হিউইটকে নিয়ে সংসার প্রাক্তন ব্যাটারের। তাঁর সংসার এক সময় ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আন্দ্রেয়া। আদালতে আবেদনও করেন। কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
ক্রিকেট ছাড়ার পর প্রায় সব সময় নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতেন কাম্বলি। একাধিক বার নেশামুক্তি কেন্দ্রেও যেতে হয়েছে তাঁকে। অসুস্থতার জন্য হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়েছে কয়েক বার। বাল্যবন্ধু সচিন তেন্ডুলকর-সব বহু মানুষ অনেকে বুঝিয়েও কাম্বলিকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে পারেননি। স্বামীর সুস্থ জীবনের জন্য কম চেষ্টা করেননি আন্দ্রেয়াও। কিন্তু তাঁর সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। শুধু বেহিসাবি জীবনযাপনই নয়, কাম্বলি বিতর্কেও জড়িয়েছেন বিভিন্ন সময়। সব মিলিয়ে তিতিবিরক্ত আন্দ্রেয়া বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। যদিও পরে পিছিয়ে আসেন।
আন্দ্রেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘এক বার আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু পরে মনে হল, আমি কাম্বলিকে ছেড়ে চলে গেলে ও ভীষণ অসহায় হয়ে পড়বে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘কাম্বলি আসলে শিশুর মতো। সেটাই আমাকে ভাবিয়েছিল। সিদ্ধান্ত নিলেও উদ্বিগ্ন থাকতাম। মনে হয়েছিল, আমি শুধু বন্ধুকে ছেড়ে চলে যাব না। ও আসলে আমার কাছে তার থেকেও বেশি কিছু। এক বার রেগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। সেই মুহূর্তটা এখনও মনে আছে। কিছু ক্ষণ পরই মনে হয়েছিল, ও কি খেয়েছে? না কি না খেয়েই বসে রয়েছে? ও কি ঠিক মতো শুতে পারবে? ও কি ঠিক আছে? আসলে কাম্বলিকে পরীক্ষা করতে চেয়েছিলাম। ফিরে এসে বুঝেছিলাম, ওর আমাকে প্রয়োজন। সব সময় প্রয়োজন।’’
প্রেম করে ২০০৬ সালে বিয়ে করেছিলেন কাম্বলি এবং আন্দ্রেয়া। তাঁদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। জেসাস ক্রিশ্চিয়ানো কাম্বলি এবং জোহানা কাম্বলি। স্বামীর বেহিসাবি জীবনযাপনের জন্য পরিবারের মধ্যেও নানা বিদ্রুপ, কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। আন্দ্রেয়া বলেছেন, ‘‘নিজেই নিজেকে বোঝাতাম। কেন বার বার কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে, উত্তর খুঁজতাম। সন্তানদের বাবা, মা— দু’জনের দায়িত্বই আমাকে পালন করতে হত। ছেলে ছোট থেকেই বুঝদার। আমাকে কখনও জ্বালাতন করত না। ভিতরে কী ঝড় বইছে, সেটা ক্রিশ্চিয়ানো আমার মুখ দেখে বুঝতে পারত।’’
সাক্ষাৎকারের সময় মায়ের পাশে ছিল ক্রিশ্চিয়ানোও। সে বলেছে, ‘‘আমি বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করতাম। মায়ের মানসিক অবস্থা নিয়ে খুব চিন্তা হত। মাকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করতাম। একই সঙ্গে বাবাকেও আগলে রাখার চেষ্টা করতাম।’’ মায়ের মতো সেও বাবাকে ছেড়ে থাকার কথা ভাবতে পারে না।