প্রস্তুতি: ইডেনে ব্যাট হাতে নামছেন রাসেল। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের অনুশীলন শেষ হওয়ার আগেই ‘ডি’ বক্স গ্যালারির দিকে চলে আসেন আন্দ্রে রাসেল। তাঁর সঙ্গে নিজস্বী নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন ভক্তেরা। বার বার তাঁরা ডাকছিলেন, ‘‘রাসেল স্যর। এক সেলফি হো যায়ে।’’ ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি নিশ্চয়ই ভক্তদের ভাষা বোঝেননি, কিন্তু আবেগ বুঝতে সমস্যা হয়নি।
গ্যালারির সামনে এসে ভক্তদের আবদার মেটাতে শুরু করা মাত্রই সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। রাসেলের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ইডেনে ফিরে তাঁর অনুভূতি কী রকম? ব্যাটে কি আগের মতোই বল লাগছে? রাসেল নির্দ্বিধায় বলে দেন, ‘‘ব্যাটে আগের মতোই বল লাগছে। খুব ভাল অনুভূতি হচ্ছে। এ বার ইডেনের বাইশ গজে ফের দাপট দেখাতে হবে। দেখা যাক, তোমাদের খুশি করতে পারি কি না।’’ একটু থেমে বলে দেন, ‘‘তোমাদের কিন্তু আমার জন্য গলা ফাটাতে হবে।’’ সেই সময় এক সাংবাদিক বলে ওঠেন, ‘‘আমরা তো প্রেসবক্সে থাকব।’’ রাসেল বলে দেন, ‘‘সেখান থেকে বেরিয়ে এসো। আমি কিংবদন্তি। আমার ব্যাটিং দেখবে না?’’
ইডেনে তিন বছর পরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে নামতে আর তর সইছে না রাসেলের। কেকেআর-আরসিবি দ্বৈরথ মানেই ক্যারিবিয়ান বিধ্বংসী অলরাউন্ডারের দাপট। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ১৩ বলে তাঁর অপরাজিত ৪৮ রানের ইনিংস হয়তো ভুলতে পারবেন না কেউই। ইডেনেও আরসিবির বিরুদ্ধে তাঁর ২৫ বলে ৬৫ রানের ইনিংস থেকে যাবে ভক্তদের স্মৃতিতে। তিন বছর আগের রাসেলের সঙ্গে বর্তমান রাসেলের তফাৎ অনেকটাই। চেহারা আরও ভারী হয়েছে। কমেছে ফিটনেস। কিন্তু তাঁর আচরণ ও মানসিকতার সামান্য পরিবর্তনও ঘটেছে বলে আন্দাজ করা গেল না। দীর্ঘ ৫০ মিনিট নেটে টানা ব্যাট করলেন রাসেল। শেষ কবে কোন অনুশীলনে এতক্ষণ ধরে তিনি ব্যাট করেছেন, অনেকেই বলতে পারবেন না। কেকেআর কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত হয়তো বুঝেছেন, রাসেলই দলের মূল স্তম্ভ। রাসেলের জন্যই বেশি সময় ব্যয় করতে দেখা গেল তাঁকে। শরীরের দিকে ধেয়ে আসা বল খেলতে সমস্যায় পড়েন রাসেল। থ্রো-ডাউন বিশেষজ্ঞেরা তাঁর শরীর লক্ষ্য করেই টানা বল করছিলেন। রাসেলকে উপায় বার করতে হচ্ছিল শট খেলার। কয়েকটি বলে তিনি আউট হলেও পরের দিকে উপায় বার করে ফেলেছিলেন সেই বলগুলোও গ্যালারিতে ফেলার।
রাসেল যতটাই ফুরফুরে মেজাজে, ততটাই চাপে দল। শ্রেয়স আয়ারের চোটের খবরের পরে নাইট শিবিরে আরও একটি দুঃসংবাদ। নিউ জ়িল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বাঁ-পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছেন লকি ফার্গুসন। এ বারই গুজরাত টাইটান্স থেকে ‘ড্রাফ্ট’-এর সাহায্যে কেকেআরে নেওয়া হয়েছে এই জোরে বোলারকে। তিনি যদিও ২৬ মার্চ কলকাতায় আসছেন। কিন্তু নাইট জার্সিতে প্রথম কয়েকটি ম্যাচ হয়তো খেলতে পারবেন না।
শনিবার থেকে শুরু হওয়া শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজ়ের প্রথম ম্যাচে খেলার কথা ছিল লকির। সেই ম্যাচ খেলেই টিম সাউদির সঙ্গে কলকাতায় উড়ে আসার কথা তাঁর। কিন্তু ফার্গুসন খেলতে পারবেন না সেই ম্যাচ। কারণ, হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট বেশ গুরুতর। যদিও কেকেআরের সঙ্গে যোগ দিতে তাঁর কোনও সমস্যা নেই। দলের সঙ্গেই রিহ্যাব করার কথা লকির। এ দিকে বৃহস্পতিবার অনুশীলনে বাঁ-পায়ে চোট পেলেন নীতীশ রানা। মাঠ থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে বেরিয়ে এলেন তিনি। চোট পাওয়ার পরে নেটে আর ব্যাট করেননি নীতীশ। বেঙ্কটেশ আয়ার যদিও দু’বার ব্যাট করেন। তাঁর ছন্দ ফেরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে দল। নেটে একাধিক বার আউট হয়েছেন বেঙ্কটেশ। আইপিএল শুরু হওয়ার আগে এই সমস্যা তাঁর মিটে যায় কি না, দেখার।