আকাশ দীপ। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট খেলতে চেন্নাই পৌঁছে গিয়েছেন ভারতীয় দলের সদস্যেরা। বৃহস্পতিবারই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির প্রিয় শহরে পা রাখেন আকাশ দীপ, রবীন্দ্র জাডেজা, যশস্বী জয়সওয়াল, ধ্রুব জুরেলরা। শুক্রবার চেন্নাই পৌঁছন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু প্রথম টেস্ট। চেন্নাইয়ে নিঃসন্দেহে ঘূর্ণি পিচই অপেক্ষা করে থাকবে শাকিব আল হাসানদের স্বাগত জানাতে। প্রথম একাদশে সুযোগ কি পাবেন বাংলার আকাশ দীপ?
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে রাঁচীতে অভিষেক ইনিংসে তিন উইকেট নিয়ে চমক দিয়েছিলেন বাংলার পেসার। সম্প্রতি দলীপ ট্রফির ম্যাচে তাঁর সুইংয়ে নাজেহাল অবস্থা হয় ঋষভ পন্থ, সরফরাজ় খানদের। ৯ উইকেট নিয়ে নির্বাচকদের নজরে উঠে আসেন আকাশ। ফের ডাক পান ভারতীয় টেস্ট দলে। এ বার তিনি আরও তৈরি। ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট চলাকালীন স্বয়ং জেমস অ্যান্ডারসনের পরামর্শ পেয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের মূল শক্তি তাদের বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানেরা। মোট ছ’জন বাঁ-হাতি রয়েছেন প্রথম একাদশে। জ়াকির হাসান, শাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোমিনুল হক, শাকিব এবং তাস্কিন আহমেদ। বঙ্গ ব্যাটিং বিভাগকে ভাঙতে গেলে বাঁ-হাতিদের দ্রুত ফেরাতেই হবে। তাঁদের জন্য নতুন কৌশল রপ্ত করেছেন আকাশ। রাউন্ড দ্য উইকেট দিয়ে বল করতে এসে বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের শরীরের কাছ থেকে বাইরের দিকে বল সুইং করানোর প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন তিনি। সম্প্রতি দলীপ ট্রফিতেও সেই কৌশলেই পরাস্ত করেছেন ঋষভ পন্থ, ওয়াশিংটন সুন্দরকে। ভারতীয় দলে যোগ দেওয়ার আগে আকাশ বলছিলেন, ‘‘বাঁ-হাতির বিরুদ্ধে আগে রাউন্ড দ্য উইকেট দিয়ে বল করতাম না। জেমস অ্যান্ডারসন আমাকে বুঝিয়েছিল, সাইড পরিবর্তন করে বল করলে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। অ্যান্ডারসন নিজেও বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে রাউন্ড দ্য উইকেট দিয়ে বল করেন। বাংলাদেশের বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধেও এই কৌশল প্রয়োগ করব।’’
কিন্তু প্রথম একাদশে যশপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ সিরাজের পরে তৃতীয় পেসার হিসেবে কি তিনি জায়গা পাবেন? আকাশ যদিও সুযোগ নিয়ে ভাবছেন না। বুমরা এবং সিরাজকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেও দেখেন না। তাঁর লক্ষ্য, নিজেকে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি রাখা। বলছিলেন, ‘‘সিরাজ আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। বুমরাকে আমি গুরু হিসেবে দেখি। ভাল দল গড়তে হলে যাঁদের প্রয়োজন, তাঁদের খেলাতেই হবে। সুযোগ নিয়ে আমি কখনওই ভাবি না।’’ যোগ করেন, ‘‘সতীর্থদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে কেন? আমাদের লক্ষ্য তো একটাই, ভারতীয় দলকে জেতানো। নিজেকে তৈরি রাখব যাতে সুযোগ পেলে আফসোস না
করতে হয়।’’
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাফল্যের পরে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খুব একটা খেলা হয়নি আকাশ দীপের। আইপিএলে মাত্র একটি ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন। বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগে ডেঙ্গি নিয়ে তিনটি ম্যাচ খেলেন। তার পরে বিশ্রাম নিতে বাধ্য হন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নামার আগে দলীপে সাফল্য আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে তাঁর। আকাশের কথায়, ‘‘দলীপে সকলেই আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার। তাদের বিরুদ্ধে সফল হয়েছি। এই আত্মবিশ্বাস ভবিষ্যতে অবশ্যই কাজে লাগবে।’’
বাংলাদেশ সিরিজ়ের পরেই নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট। তার পরে অস্ট্রেলিয়া সফর। বুমরা, সিরাজ ও মহম্মদ শামির পরে চতুর্থ পেসার হিসেবে কি রিকি পন্টিংয়ের দেশে উড়ে যেতে পারবেন? আকাশ অবশ্য সে সব নিয়ে ভাবছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কখনওই অতিরিক্ত কিছু ভাবি না। ক্লাব ক্রিকেট খেলার সময়ও কখনও ভাবিনি কবে বাংলার হয়ে খেলব। বাংলার হয়ে খেলার সময়ও ভাবতাম না কবে ভারতীয় দলে সুযোগ পাব। অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার কথাও এখন থেকে ভাবছি না। বর্তমানে আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভাল খেলা। তার পরে নিউ জ়িল্যান্ড সিরিজ়ে মনোনিবেশ করব।’’