এবার ক্রিকেটে বিনিয়োগ করল আদানি গোষ্ঠী। ছবি: টুইটার।
ভারতীয় ক্রিকেটে পা রাখল আদানি গোষ্ঠী। মুকেশ অম্বানির রিলায়্যান্স এবং টাটা গোষ্ঠীর পর গৌতম আদানির সংস্থাও বিনিয়োগ করল ক্রিকেটে। ভারতের তিন বৃহৎ বেসরকারি শিল্প গোষ্ঠীই যুক্ত হল ক্রিকেটের সঙ্গে। মহিলাদের আইপিএলে সব থেকে বেশি দর দিয়ে আমদাবাদ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির মালিকানা পেয়েছে আদানি স্পোর্টসলাইন প্রাইভেট লিমিটেড।
আইপিএলের সঙ্গে প্রথম থেকেই যুক্ত অম্বানির রিলায়্যান্স গোষ্ঠী। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মালিকানা রয়েছে তাদের কাছে। ভারত ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগেও দল রয়েছে রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর। ভারতের অন্যতম বড় বেসরকারি ব্যবসায়িক গোষ্ঠী হলেও ক্রিকেট থেকে এত দিন দূরেই ছিল তারা। মহিলাদের আইপিএল তাদের ক্রিকেটের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করল।
সব থেকে বেশি দামে দল কিনেছে আদানি স্পোর্টসলাইন প্রাইভেট লিমিটেড। তাদের দল খেলবে আমদাবাদ শহর থেকে। ১২৮৯ কোটি টাকায় মেয়েদের আইপিএলে দল কিনেছে আদানি গোষ্ঠী। তাদের দেওয়া বিপুল দামের সুবাদে মহিলাদের আইপিএল টাকার অঙ্গে প্রথম বছরেই ছাপিয়ে গিয়েছে ছেলেদের ২০০৮ সালের আইপিএলকে। যে কথা টুইট করে জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি জয় শাহও। উল্লেখ্য, মহিলাদের আইপিএলে পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি বিক্রি করে বিসিসিআইয়ের ঘরে এসেছে মোট ৪৬৬৯ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা।
আদানি গোষ্ঠীও ক্রিকেটে বিনিয়োগ করায় আগামী দিনে ভারতীয় ক্রিকেটের অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ রিলায়্যান্স গোষ্ঠী ছাড়া টাটা গোষ্ঠীও আগেই ক্রিকেটে বিনিয়োগ করেছে। মহিলাদের আইপিএলের সম্প্রচার সত্ত্ব ৯৫১ কোটি টাকার বিনিময়ে পেয়েছে রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর ভায়াকম ১৮। এখনও পর্যন্ত মহিলাদের আইপিএল থেকে বোর্ডের কোষাগারে এসেছে ৫৬৫০ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। মহিলাদের আইপিএলের টাকার অঙ্ক ছাপিয়ে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ, ইংল্যান্ডের দ্য হান্ড্রেডের মতো টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগকেও। মহিলাদের আইপিএল এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বিত্তশালী ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। আগে রয়েছে শুধু পুরুষদের আইপিএল।
আদানি গোষ্ঠীর পর ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি নিলামে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর দিয়েছে ইন্ডিয়াউইন স্পোর্টস প্রাইভেট লিমিটেড। তারা ৯১২ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকায় মুম্বই দল কিনেছে। অর্থাৎ, প্রথমে থাকা আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে শুরুতেই তাদের বিনিয়োগের পার্থক্য ৩৭৬ কোটি ১ লক্ষ টাকার। বাজার বিশেষজ্ঞদের অনেকেও মনে করছেন, আদানি গোষ্ঠীর বিনিয়োগ বদলে দিতে পারে ক্রিকেট বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ।
বাজার বিশেষজ্ঞ এন সন্তোষ বলেছেন, ‘‘যে পরিমাণ অর্থ আদানি গোষ্ঠী প্রথম পা রেখেই বিনিয়োগ করল, তা বিস্ময়কর। গড়ে প্রতিটি দলের জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড প্রায় ১০০০ কোটি টাকা পেল। এই পরিমাণটা বিরাট। আইপিএলের বাণিজ্যিক মূল্যের সুফল পেয়েছে নতুন এই প্রতিযোগিতা। সংস্থাগুলি বিপুল বিনিয়োগের পর কত টাকা বাজার থেকে তুলতে পারবে, সে দিকে নজর রাখতে হবে। লাভের মুখ না দেখলে কিন্তু আগ্রহ হারাতে পারে সংস্থাগুলি। এখন বিষয়টা দুর্দান্ত মনে হলেও ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য সেটা ভাল হবে না।’’