অর্শদীপ এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’টি ম্যাচ খেলেছেন ভারতের হয়ে। —ফাইল চিত্র
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আর তিন মাসও বাকি নেই। দলগঠনের ভাবনা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটে। প্রতিটি সিরিজে দেখে নেওয়া হচ্ছে একাধিক ক্রিকেটারকে। অভিজ্ঞ দীনেশ কার্তিককে যেমন দেখা হচ্ছে, তেমনই দেখা হচ্ছে তরুণ অর্শদীপ সিংহকেও। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে পেসার হিসাবে জায়গা করে নেবেন তিনি?
অর্শদীপ এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’টি ম্যাচ খেলেছেন ভারতের হয়ে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অভিষেক হয় তরুণ বাঁহাতি পেসারের। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩.৩ ওভার বল করে ১৮ রান দিয়ে দু’টি উইকেট নেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ফের সুযোগ দেওয়া হয় তাঁকে। হতাশ করেননি অর্শদীপ। চার ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে দু’টি উইকেট নেন তিনি।
শুরু এবং শেষে বল করার ক্ষমতা
নতুন বলে আক্রমণ হোক বা শেষের দিকে এসে রান আটকে দেওয়া, অর্শদীপ দু’টি কাজই করতে পারেন। আইপিএলে পঞ্জাব কিংসের হয়ে তাঁকে দু’টি কাজই করতে দেখা গিয়েছে। সাফল্যও পেয়েছেন। ভারতের হয়ে দু’টি ম্যাচ খেললেও তাঁর এই গুণ দেখা গিয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও। প্রথম ওভার বল করতে এসে জেসন রয়ের উইকেট ভেঙেছিলেন। একটিও রান দেননি সেই ওভারে। ইংল্যান্ডের ইনিংসের শেষে এসেও উইকেট নেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একই জিনিস করে দেখিয়েছেন তিনি। মাত্র দু’টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা রয়েছে অর্শদীপের। সেটা দিয়ে বিচার করা কঠিন হলেও তিনি নিজের ক্ষমতা বুঝিয়ে দিয়েছেন।
বয়স কম হলেও পরিণত
ব্যাটাররা আক্রমণ করলেও ভয় পান না অর্শদীপ। আইপিএল হোক বা আন্তর্জাতিক ম্যাচ, দু’জায়গাতেই পরিণত বোধ দেখিয়েছেন তিনি। কখনও চাপের মুখে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেননি। তিনি আত্মবিশ্বাসী থাকেন ফিরে আসার ব্যাপারে। তরুণ অর্শদীপের লড়াই দেখা গিয়েছে ক্যারিবিয়ান সফরে। প্রথম ম্যাচে কাইল মেয়ার্স তাঁকে এক ওভারে একটি ছয় এবং পরের বলে চার মারেন। সেই ওভারেই একটি স্লোয়ার দেন অর্শদীপ। সেই বলে আউট হন মেয়ার্স। সেই উইকেট নেওয়ার পর ভারতীয় পেসার যে ভাবে তাকিয়ে ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারের দিকে, তাতেই বুঝিয়ে দেন যে তিনি লড়াই জিততে জানেন।
ভারতীয় দলে বৈচিত্র্য আনতে পারেন
জাহির খান অবসর নেওয়ার পর ভারতীয় দলে বাঁহাতি পেসারের অভাব দেখা গিয়েছে। এত দিন পরেও কোনও বাঁহাতি পেসার ভারতীয় দলে নিয়মিত জায়গা করে নিতে পারেননি। আশিস নেহরা এবং আরপি সিংহ ছিলেন একটা সময় পর্যন্ত। তাঁদের পর একাধিক বাঁহাতি পেসার এসেছেন এবং জায়গা হারিয়েছেন। ভারতের পেস আক্রমণ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামিদের দাপটে। দু’জনেই ডানহাতি বোলার। ভারতীয় ব্যাটারদেরও বাঁহাতি বোলারদের বিরুদ্ধে বার বার অসহায় দেখিয়েছে। অর্শদীপ সেই সব চিন্তার উত্তর হয়ে উঠতে পারেন। ভারতের বোলিং আক্রমণে বাঁহাতি অর্শদীপ যেমন বৈচিত্র্য আনতে পারেন, তেমনই রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলীদের অনুশীলনে সাহায্য করতে পারেন। অর্শদীপ হয়তো মিচেল স্টার্ক, শাহিন আফ্রিদি, ট্রেন্ট বোল্ট নন, কিন্তু তাঁর যে প্রতিভা রয়েছে তা মেনে নিয়েছেন সকলেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পরীক্ষাও করে নেওয়া যাবে অর্শদীপকে।