প্রস্তাব: সেরা দ্বৈরথ থেকে টাকা তোলার পরামর্শ শোয়েব আখতারের।
করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ভারত-পাক তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজের প্রস্তাব দিলেন শোয়েব আখতার। রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেরা ক্রিকেট দ্বৈরথ করিয়ে অর্থ তোলা যেতে পারে আক্রান্ত মানুষদের সাহায্যার্থে।
রাজনৈতিক মতবিরোধের জন্য ২০০৭ থেকে বন্ধ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। শুধুমাত্র আইসিসি অনুমোদিত কোনও প্রতিযোগিতা অথবা এশিয়া কাপে দেখা হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের। শোয়েব বলছেন, ভারত-পাকিস্তান দু’দেশেই করোনায় প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে দু’দেশকেই। তাই পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে দু’দলের ম্যাচ করিয়ে যে অর্থ তোলা যাবে, তা দু’দেশের ত্রাণ তহবিলে ভাগ করে জমা করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই সিরিজ দর্শকশূন্য মাঠে করা উচিত বলেও তিনি জানিয়েছেন।
তিনটি এক দিনের ম্যাচ করার প্রস্তাব দিয়েছেন শোয়েব। বলেছেন, সেই ম্যাচগুলি ভারত বা পাকিস্তানে করারও কোনও দরকার নেই। নিরপেক্ষ দেশেই আয়োজন করা হোক দ্বৈরথের। শোয়েবের মতে, টিভি সম্প্রচারের মাধ্যমেই যে অর্থ সংগ্রহ করা যাবে, তা দু’দেশের ত্রাণ তহবিলকে যথেষ্ট পরিমাণে সাহায্য করবে। ভারত বনাম পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ বিশ্বের খেলাধুলোয় সব চেয়ে সম্প্রচারিত দ্বৈরথের অন্যতম। গত বছর বিশ্বকাপে ম্যাঞ্চেস্টারে দু’দলের ম্যাচ টিভি দর্শকের বিচারে রেকর্ড তৈরি করেছিল।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শোয়েবের ঘোষণা, “এই দুঃসময়ে আপনাদের কাছে একটি প্রস্তাব নিয়ে এসেছি। করোনার ত্রাণ তহবিলে দু’দেশকেই সাহায্য করার উদ্দেশে তিন ম্যাচের ভারত-পাক ওয়ান ডে সিরিজ আয়োজন করলে কেমন হয়? এই সিরিজের ফল নিয়ে দু’দেশের মধ্যে রেষারেষি থাকবে না। এখানে কোহালি সেঞ্চুরি করলেও যে রকম আমরা খুশি হব, তেমনই বাবর আজ়ম বড় রান পেলে আপনারাও খুশি হবেন। মাঠে ফল যাই হোক, জিতবে দু’দলই।”
প্রাক্তন পাক ফাস্ট বোলার যোগ করছেন, ‘‘ফাঁকা স্টেডিয়ামে ম্যাচ হবে। শুধুমাত্র টিভির পর্দায় ক্রিকেটভক্তরা উপভোগ করতে পারবেন এই সিরিজ। লকডাউন যদি চালু থাকে, তা হলে প্রত্যেকেই নিজেদের বাড়িতে থাকবেন। তাই সম্প্রচার থেকে অর্থলাভের সুযোগ প্রবল।’’ অনেক দিন ভারত-পাক ম্যাচ দেখতে পাননি সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে শোয়েব বলছেন, ‘‘এত দিন পরে দু’দেশের দ্বৈরথ হলে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে দারুণ আকর্ষণ তৈরি হবে। সম্প্রচার থেকে যে অর্থ উঠে আসবে, তা দু’দেশের মধ্যে সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়া যেতে পারে। তাতে অনেক মানুষই উপকৃত হবেন বলে আমার মনে হয়।”
যদিও করোনা নিয়ে এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে শোয়েবের প্রস্তাব নিয়ে ভাবার মতো জায়গায় কেউ আছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আইপিএল নিয়েই চিন্তাভাবনা করার জায়গায় নেই। পৃথিবী জুড়ে লকডাউন চলছে। কেউ মাঠমুখো হওয়ার মতো মানসিকতাতেও নেই। শোয়েব যদিও চান দ্রুত এই সিরিজ আয়োজন করার বিষয়ে ভাবুক দু’দেশ। কারণ, লকডাউন উঠে গেলে সম্প্রচারের মাত্রাও কিছুটা কমতে পারে বলে তাঁর ধারণা। পাক পেসারের ব্যাখ্যা, “এখন প্রায় সবাই বাড়িতেই সময় কাটাচ্ছেন। দ্রুত এই সিরিজ আয়োজন করা গেলে সম্প্রচারের মাত্রাও থাকবে বেশি।” যোগ করেন, “তবে প্রচণ্ড তাড়াহুড়োর দরকার নেই। আস্তে আস্তে এগোনো যেতে পারে। নিরপেক্ষ স্থানেও আয়োজন করা যেতে পারে সিরিজ। দুবাইয়ে খেলতে পারে ওরা।”
রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসের আরও ধারণা, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হলে দু’দেশের সম্পর্কে উন্নতিও আশা করা যায়। ভারতে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন শোয়েব। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলছেন, ‘‘ভারতে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করে অনেক রোজগার করেছি। তবে অনেক ক্ষেত্রে সেই আয় থেকে ভারতীয় বন্ধুদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। তিরিশ শতাংশ অর্থ সাহায্য হিসেবে তুলে দিতাম ভারতীয় বন্ধুদের। মুম্বইয়ের বস্তি ধারাবি ও সিয়নে গিয়েও বন্ধুদের সাহায্য করেছি।’’ যোগ করছেন, ‘‘ভারতে যে রকম ভালবাসা পেয়েছি, তা কখনও ভুলতে পারব না।’’