রোড টু স্পেন: ঘরে ফেরার সফর-ডায়েরি মারিয়ো রিভেরার
Coronavirus

বাসেই ঠিক করে নিলাম সকলে, সোজা দিল্লি চলো

উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠায় সারারাত ভাল করে ঘুমোতে পারিনি। সকাল হওয়ার আগেই বিছানা ত্যাগ করলাম।

Advertisement

মারিয়ো রিভেরা (ইস্টবেঙ্গল কোচ)

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২০ ০৪:৪৬
Share:

ফেরা: অবশেষে দেশের পথে। স্বস্তিতে মারিয়ো। নিজস্ব চিত্র

ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নিয়ে অবশেষে স্পেনের উদ্দেশে রওনা হলাম। আমার বাড়ি স্পেনের মাদ্রিদে। করোনা সংক্রমণে খুব খারাপ অবস্থা আমার প্রিয় শহরের। আমার মা ও স্ত্রী তো প্রাণ বাঁচাতে মাদ্রিদ ছেড়ে গ্রানাদায় চলে গিয়েছেন। তাতেও দুশ্চিন্তা কমেনি। তার উপরে লকডাউনের জেরে গৃহবন্দি হয়ে থাকার যন্ত্রণা।

Advertisement

মাঝেমধ্যে নিজেকেই প্রশ্ন করতাম, আদৌ স্পেনে ফিরতে পারব তো? যদি ফিরতে পারি, তা হলে স্পেন যাত্রার এই অভিনব অভিজ্ঞতা ডায়েরিতে লিখে রাখব ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।

উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠায় সারারাত ভাল করে ঘুমোতে পারিনি। সকাল হওয়ার আগেই বিছানা ত্যাগ করলাম। মনকে শান্ত করতে স্নান সেরে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। আগের দিন রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। সকালের ঠান্ডা হাওয়ায় মনটা একটু শান্ত হল। বার বার ঘড়ির ডায়ালের দিকে তাকাচ্ছিলাম। এখন ভোর পাঁচটা। তার মানে আরও তিন ঘণ্টা পঁয়তাল্লিশ মিনিট বাকি যাত্রা শুরু হতে। আরও এক বার দেখে নিলাম, সব গুছিয়ে নিয়েছি কি না। আটটা নাগাদ লাগেজ নিয়ে নীচে নামলাম। বাস কোথায়? কিবু, বেইতিয়া, ফ্রান, মার্কোসদের সঙ্গে আলোচনা করছিলাম, আমস্টারডাম থেকে কী ভাবে স্পেনে যাব তা নিয়ে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘এঁদের খেলতে সমস্যায় পড়তাম’, রোহিতের মুখে প্রোটিয়া ও অজি পেসারের নাম

প্রতীক্ষার অবসান। পৌনে দশটা নাগাদ আমাদের বাস চলে এল। এতক্ষণ পরে একটু স্বস্তি ফিরল মনে। সকলে এসেছেন কি না তালিকা মিলিয়ে পরীক্ষা করছিলেন বাসকর্মীরা। আমি যেন আর অপেক্ষা করতে পারছিলাম না। বলতে ইচ্ছে করছিল, সকলেই এসেছেন। দেরি না করে এ বার বাসটা ছাড়ুন। দশটা নাগাদ আমাদের যাত্রা শুরু হল। কিন্তু মাঝে মধ্যেই রাস্তায় পুলিশকর্মীরা আমাদের বাস থামালেন। সব মিটিয়ে হাইওয়ে পৌঁছে নিশ্চিন্ত হলাম। এ বার আর কোনও চিন্তা নেই। লকডাউনের জেরে রাস্তায় মানুষ না থাকলেও সার দিয়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে ধীরে ধীরে চলছিল আমাদের বাস।

কতক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম মনে নেই। ঘুম ভেঙে দেখলাম, ফাঁকা রাস্তায় ঝড়ের গতিতে ছুটছে আমাদের বাস। বাংলার সীমানা পেরিয়ে আমরা তখন ঝড়খণ্ডে ঢুকে পড়েছি। লাঞ্চ সেরে ল্যাপটপে একটা সিনেমা দেখলাম। অন্যান্যদের সঙ্গে একটু গল্প করলাম। বারাণসীর হোটেলে বুকিং বাতিল হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের কী করা উচিত তা নিয়ে ছোটখাটো মিটিংও সেরে নিলাম কিবুদের সঙ্গে। সকলেই দেখলাম রাজি সরাসরি দিল্লি পৌঁছনোর ব্যাপারে। কেউ রাস্তায় এক মিনিটও সময় নষ্ট করতে রাজি নন। নিজের সিটে ফিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আবার চোখ বন্ধ করলাম।

(সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক অনুলিখন)

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement