কার্তিক-মর্গ্যান
কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে এক বার আইপিএল জেতার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ২০১২ সালে গৌতম গম্ভীরের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্য ছিলেন তিনি। তখন উঠতি ক্রিকেটার। তাঁর রিভার্স সুইপ ও সুইপ নজর কেড়েছিল ক্রিকেটবিশ্বের। এখন তিনি বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক। নিলামে ৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে তাঁকে নিয়েছে নাইট শিবির। কিন্তু নেতৃত্বের দায়িত্ব থাকবে দীনেশ কার্তিকের উপরেই। তিনি, অইন মর্গ্যান মুখিয়ে ‘ডিকে’ (কার্তিক)-এর সঙ্গে বোঝাপড়া গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে।
শনিবার নাইটদের ওয়েবসাইট কেকেআর ডট ইন-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা করেন মর্গ্যান। প্রথম বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্ত তুলে ধরলেন মর্গ্যান। লন্ডনে গৃহবন্দি তিনি। স্ত্রী ও সদ্যজাত সন্তানকে নিয়ে দিন কাটছে। নিজেই রান্নার দায়িত্ব নিয়েছেন। সময় পেলেই চলে যান বারবিকিউ মেশিনে। বিভিন্ন ধরনের স্যালাড তৈরি করেও স্ত্রী টারাকে চমকে দিচ্ছেন। বলেছেন, ‘‘কোয়রান্টিন দারুণ উপভোগ করছি। পরিবারের সঙ্গে আছি। নিজের পছন্দের কাজগুলো করার সময় পাচ্ছি। বেশির ভাগ দিনই রান্না করছি। বারবিকিউ মেশিন বাড়িতেই আছে। মাংস ম্যারিনেড করে বসিয়ে দিলেই তৈরি।’’ যোগ করেন, ‘‘ওয়ার্কআউট করতেও ভুলছি না। অনেকে একাকিত্ব কাটাতে অতিরিক্ত ব্যায়াম করছে। আমি কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ীই সব করছি।’’
এ বারের আইপিএল নিয়ে কতটা উত্তেজিত তিনি? মর্গ্যান বলেছেন, ‘‘প্রচণ্ড উত্তেজিত ছিলাম। তিন বছর নাইটদের জার্সিতে খেলেছি। ২০১২-তে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে কলকাতা ফেরার পরে খুব ভাল লেগেছিল। দর্শক ঠাসা ইডেন আমাদের স্বাগত জানিয়েছিল। সেই মুহূর্ত কখনও ভুলব না।’’
বর্তমান নাইট কোচ তাঁর অন্যতম প্রিয় বন্ধু। তিনি ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের সঙ্গেও নিয়মিত কথা হত মর্গ্যানের। বন্ধু কোচ হওয়ায় কতটা সুবিধা হল? মর্গ্যানের কথায়, ‘‘আমার বিয়েতেও আমন্ত্রিত ছিল বাজ় (ম্যাকালামকে এই নামেই ডাকা হয়)। ও কিন্তু খুব মজা করতে পছন্দ করে। ক্রিকেটার হিসেবে নিউজ়িল্যান্ডের পাশাপাশি ক্রিকেটবিশ্বকেও অনেক কিছু দিয়েছে। এ ধরনের একজন ব্যক্তিত্ব কোচ থাকলে আর চিন্তা কীসের।’’ যোগ করেন, ‘‘কার্তিকের সঙ্গেও নিয়মিত কথা হত। বড়দিনের আগে মুম্বইয়ে ওর সঙ্গে দেখাও হয়েছিল। খুব ভাল ছেলে। মাঠে ওকে সব রকম সাহায্য করতে তৈরি। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া আরও ভাল করে তোলার জন্য মুখিয়ে আছি।’’
বিশ্বকাপ জেতার অনুভূতি কেমন ছিল? ২০১৫-এ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হেরে ছিটকে যাওয়ার পরে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন? মর্গ্যানের উত্তর, ‘‘চার বছর ধরে ক্রিকেটার তুলে আনার চেষ্টা করেছি। ২০১৫-তে লজ্জাজনক হারের পরে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। ২০১৯-এ ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জেতার অনুভূতি তাই বিশেষ। ফাইনালটা কিন্তু আমার জীবনে খেলা সেরা ম্যাচ। এ রকম উত্তেজনা আগে অনুভব করিনি।’’
আগে পাওয়ার হিটার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এখন তিনি অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। বাড়তি ঝুঁকি না নিয়ে ইনিংস গড়তে পছন্দ করেন। কী ভাবে এল এই পরিবর্তন? মর্গ্যান বলেন, ‘‘শেষ দু’বছরে এটাই সব চেয়ে ভাল পরিবর্তন এসেছে আমার মধ্যে। হয়তো অভিজ্ঞতা বাড়ার ফল। কঠিন সময়ে ব্যাট করতে বেশ পছন্দ করি।’’