অভিনব: টয়লেট পেপার রোল নিয়েই ফুটবল-চর্চা রিকির। টুইটার
করোনাভাইরাসের আক্রমণে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে স্পেনের জনজীবন। পুরো দেশকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে। গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন হাজার, হাজার মানুষ। থেমে গিয়েছে স্পেনের ফুটবলও। লা লিগার তারকা ফুটবলাররা এখন গৃহবন্দি। লিয়োনেল মেসি বার্তা পাঠিয়েছেন, বাড়িতে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। স্পেনের বাকি নামী দামি ফুটবল তারকারা এখন কী ভাবে সময় কাটাচ্ছেন? লা লিগা থেকে পাঠানো এক ই-মেল বার্তায় স্পেনের ফুটবল সংস্থা তুলে ধরেছে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা তাদের ফুটবলারদের ছবি। কী ভাবে সময় কাটাচ্ছেন আলভারো মোরাতা থেকে আর্তুরো ভিদালরা— তারই ঝলক দেখা গিয়েছে সেই ই-মেলে।
আতলেতিকো দে মাদ্রিদের আলভারো মোরাতা যেমন এই সুযোগে পুরো সময়টা কাটাচ্ছেন তাঁর পরিবারের সঙ্গে। স্ত্রী ও দুই সন্তানের সঙ্গে নিজের ছবি দিয়ে মোরাতা সবাইকে অনুরোধ করেছেন, ঘরে থাকুন, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। আর করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচান।
কেউ, কেউ আবার ফুটবল ছেড়ে দূরে থাকতে পারছেন না। কিন্তু ঘরে ফুটবল খেলাটা তো একটু সমস্যা। তা হলে কী হবে? অভিনব রাস্তা বার করে ফেলেছেন বার্সেলোনার রিকি পুইগ এবং রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাহিম দিয়াজ। একটা ‘টয়লেট পেপার’ রোল করে সেটাকেই ফুটবল বানিয়ে চলছে দুই তারকার কসরত। এবং, দু’জনেই চ্যালেঞ্জ করেছেন তাঁদের সতীর্থদের— আমাদের মতো খেলে দেখাও দেখি।
বার্সেলোনার আর্তুরো ভিদাল আবার ফুটবল ছাড়াও একটা বিশেষ খেলা ভালবাসেন। সেটা হল বাস্কেটবল। কিন্তু এই ‘লকডাউন’-এর বাজারে কোনও সঙ্গী পাচ্ছেন না খেলার জন্য। কিন্তু তাতে দমছেন না বার্সার এই মিডফিল্ডার। নিজের বাড়িতেই রয়েছে বাস্কেটবল কোর্ট। এবং সেখানেই একা, একা নেমে পড়েছেন ভিদাল। এবং, অনায়াস দক্ষতায় একটার পর একটা বল বাস্কেটে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
কোনও, কোনও ফুটবলারের কাছে এর মধ্যেও নিজেকে চূড়ান্ত ফিট রাখাটা সব চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। ক্লাব বন্ধ হয়ে গিয়েছে, জিমও বন্ধ। কিন্তু লা লিগার ফিটনেস কোচেরা প্রত্যেক ফুটবলারের জন্য আলাদা, আলাদা ফিটনেস রুটিন বানিয়ে দিয়েছেন। যে রুটিন বাড়িতে বসে মেনে চলা যাবে। রিয়াল মাদ্রিদের অধিনায়ক সের্খিয়ো র্যামোস বা আতলেতিকো দে মাদ্রিদের মিডফিল্ডার মার্কোস লোরেন্তে— ডুবে আছেন সেই রুটিনে। র্যামোসকে দেখা গিয়েছে ট্রেডমিলে নিয়ম করে দৌড়চ্ছেন। নিজের সহ্যক্ষমতা বাড়াতে ডুবে আছেন ‘কার্ডিয়ো এক্সারসাইজ’-এ। লোরেন্তে আবার এই সুযোগে নিজের পায়ের পেশির জোর বাড়ানোর উপরে নজর দিয়েছেন। তাঁকে দেখা গিয়েছে বারবেল কাঁধে চাপিয়ে ‘স্কোয়াট’ (ওঠাবসা) করতে।
মাঠে ফুটবল বন্ধ তো কী! ইন্ডোরেও যে ফুটবল খেলা যায়। যার জন্য রয়েছে ‘ফিফা ২০’-র মতো ভিডিয়ো গেমস। সেই ‘অনলাইন ফুটবল’ গেমস খেলতে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছেন লা লিগার বেশ কয়েক জন তরুণ ফুটবলার। যেমন সেভিয়া এফ সি-র সের্গিয়ো রেগুইলন বা রিয়াল বেতিসের স্ট্রাইকার বোরখা ইগলেসিয়াস। এই সপ্তাহে হওয়ার কথা ছিল সেভিয়া ডার্বির। সেই বাতিল হওয়া ডার্বি ম্যাচ অনলাইনে খেলেছেন এই ফুটবলাররা।
লা লিগার তারকারা একটা কথা বুঝিয়ে দিচ্ছেন— আমাদের সবাইকে ফুটবল থেকে দূরে সরাতে পারো, কিন্তু ফুটবলকে আমাদের থেকে দূরে সরাতে পারবে না!