মানবিক: বন্ধ ফুটবল। জোসে স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকায়। টুইটার
২৪ মার্চ: করোনাভাইরাসের জন্য বন্ধ সমস্ত ধরনের খেলা। ফুটবলার এবং ম্যানেজারদের কাছে এখন অখণ্ড অবসর। তবে নিছক বিশ্রামের মেজাজে সেই সময় নষ্ট করতে রাজি নন জোসে মোরিনহো। টটেনহ্যাম ম্যানেজার সেই সময়কে কাজে লাগাচ্ছেন সাধারণ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে।
এই মুহূর্তে হ্যারি কেনদের দলের ম্যানেজারকে দেখা যাচ্ছে উত্তর লন্ডনের এনফিল্ডে। যেখানে তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার বিতরণ করছেন। ‘লাভ ইয়োর ডোরস্টেপ’ এবং ‘এজইউকে’ নামে দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে তিনি এই কাজে যুক্ত হয়েছেন। মুখাবরণ পরা প্রাক্তন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ম্যানেজারের সেই ছবি সাড়া ফেলেছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। এই সংস্থা একটি ভিডিয়োও পোস্ট করেছে, যেখানে মোরিনহো বলেছেন, ‘‘আমি এখানে দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে সাধারণ, বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজে যুক্ত হয়েছে। এক জন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের খাবার সরবরাহ করা অথবা অর্থস সংগ্রহ করছি। বিষয়টা খুবই আকর্ষণীয় বলে মনে হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত এজইউকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত মানুষদের সাহায্যার্থে ১০ মিলিয়ন পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৯ কোটি) সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে এই সংস্থার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মোরিনহো। সোমবারই গ্রেট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পরিস্থিতি সামাল দিতে আগামী তিন সপ্তাহ সাধারণ মানুষদের বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করেছেন।
শুধু মোরিনহো বলেই নয়। তাঁর দলেরই ডিফেন্ডার টোবি অ্যাল্ডারওয়াইল্ড বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন করোনায় আক্রান্তস মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। তিনি কোয়রান্টিনে যাওয়া মানুষদের তাঁদের বন্ধু এবং আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ইলেকট্রনিক ট্যাব দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টুইটারে পোস্ট করা এক ভিডিয়ো-বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘‘কোয়রান্টিনে থাকা মানুষদের পক্ষে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে তাঁরা মানসিক ভাবে আরও হতাশ হয়ে পড়ছেন। তাঁদের চাঙ্গা রাখতে আমি তুলে দিতে চাই এই ইলেকট্রনিক ট্যাব, যার মাধ্যমে তাঁরা আত্মীয় এবং বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে থাকা অসুস্থ লোকজনদের সেই ট্যাব দেবেন।
এ দিকে, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন ডিফেন্ডার গ্যারি নেভিল তাঁর দুটি হোটেল চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিখরচায় ব্যবহার করার জন্য তুলে দিয়েছেন। ম্যাঞ্চেস্টারের এই দুটি হোটেলের যৌথ মালিকানা রয়েছে নেভিল এবং রায়ান গিগ্সের। তিনিও এই সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছেন। টুইটার বার্তায় নেভিল বলেছেন, ‘‘আমাদের দুটি হোটেল মিলিয়ে ১৭৬টি ঘর রয়েছে। তার সমস্তটাই ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে চিকিৎসক এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর্মীদের। এই পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত লাভের কথা ভুলে গিয়ে সকলের পাশে দাঁড়িয়ে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’’ একই বক্তব্য গিগ্সের। তিনি বলেছেন, ‘‘করোনাকে রুখতে গেলে সকলে মিলে লড়াই করতে হবে। চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক কর্তব্য।’’