সাহায্য: সৌরভদের বোর্ডের অনুদান কেন্দ্রকে। ফাইল চিত্র
২৮ মার্চ: দেশ-জুড়ে করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। ক্রীড়াজগতের বিভিন্ন ব্যক্তিত্বেরা আর্থিক সহায়তা করছেন। শনিবার এগিয়ে এল ভারতীয় বোর্ড। কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রাণ তহবিলে ৫১ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় বোর্ড।
শনিবার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সচিব জয় শাহ ও বোর্ডের বাকি পদাধিকারীরা আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রাণ তহবিলে ৫১ কোটি টাকা দান করা হবে। দেশের এই জরুরি পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও করোনা সংক্রান্ত গবেষণায় সাহায্য করার উদ্দেশ্য নিয়ে।’’
বিবৃতিতে আরও লেখা হয়েছে, ‘‘করোনা সংক্রমণের মাত্রা যে ভাবে বাড়তে শুরু করেছে, তাতে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যেকের পাশে দাঁড়ানোই মূল উদ্দেশ্য আমাদের। বিভিন্ন রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার সঙ্গেই দেশের সুরক্ষার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে তৈরি ভারতীয় বোর্ড।’’
আর্থিক সাহায্য করছেন সুরেশ রায়নাও। কেন্দ্রীয় তহবিল ও রাজ্যের ত্রাণ তহবিল মিলিয়ে মোট ৫২ লক্ষ টাকা দান করার প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটসম্যান।
কেন্দ্রীয় ত্রাণ তহবিলে ৩১ লক্ষ টাকা দান করছেন রায়না। উত্তর প্রদেশ রাজ্য ত্রাণ তহবিলে ২১ লক্ষ টাকা দান করবেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত রায়নাই সর্বাধিক অর্থ দান করতে চলেছেন। এখানেই শেষ নয়, দেশের বিভিন্ন মানুষদেরও সাহায্য করার আর্জি জানিয়ে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেছেন তিনি। রায়নার টুইট, ‘‘করোনা সংক্রমণকে হারাতে এগিয়ে আসতে হবে আমাদের। ক্ষমতা অনুযায়ী সাহায্য করা উচিত প্রত্যেকের। আমি ৫২ লক্ষ টাকা করোনার ত্রাণ তহবিলে দান করছি। আপনারাও এগিয়ে আসুন।’’
ক্রীড়াজগতের অনেকেই ইতিমধ্যে আর্থিক সাহায্য করেছেন। শুক্রবারই ৫০ লক্ষ টাকা দান করেছেন সচিন তেন্ডুলকর। সমান অঙ্কের আর্থিক সাহায্য করেছেন প্রাক্তন ব্যাটসম্যান গৌতম গম্ভীর। ১০ লক্ষ টাকা দান করেছেন মহিলা ব্যাডমিন্টন তারকা পি ভি সিন্ধু।
একই দিনে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানোর বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলেন রোহিত শর্মা। তিনি বরাবরই দূষণ-মুক্ত পৃথিবীর জন্য সরব হয়েছেন। করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর ফলে লকডাউন করা হয়েছে ইটালি। তার কয়েক দিন পরেই ভেনিসের বন্দরে দেখা গিয়েছে ডলফিন। ভেনিসের হ্রদে সাঁতার কাটতে দেখা গিয়েছে রাজহাঁসকে। রোহিত লিখেছিলেন, ‘‘জনজীবনের প্রভাব কমতেই হাসতে শুরু করেছে আমার পৃথিবী। এই দৃশ্যের চেয়ে মধুর আর কী-ই বা হতে পারে?’’ চার দিন আগে ফের টুইটারে এসেছিলেন রোহিত। মুম্বইয়ের সমুদ্রসৈকতে ডলফিনের একটি ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা দেখে রোহিতের টুইট, ‘‘মুম্বইয়ের সমুদ্রসৈকতে ডলফিনকে সাঁতার কাটতে দেখে মন ভাল হয়ে গেল। এখানেই বোঝা যায়, আমরা যদি কিছুটা সচেতন হই, তা হলে অনেকটা দূষণ কমে যায়।’’
শনিবারও পরিবেশ সচেতনতার বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলেন রোহিত। ২৮ মার্চ রাত সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ন’টা পর্যন্ত বাড়ির প্রত্যেকটি আলো বন্ধ করে রাখার অনুরোধ করেন তিনি। রোহিত লেখেন, ‘‘প্রত্যেকে বড় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। বাড়িতে থাকতে হচ্ছে আমাদের। কিন্তু বাড়িতে থেকেও পৃথিবীকে দূষণ-মুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া যায়।’’ যোগ করেন, ‘‘এই ২৮ মার্চ, আসুম আমরা বাড়ির রাত সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ন’টার মধ্যে বাড়ির প্রত্যেকটি আলো বন্ধ করে দিই। যদি সফল ভাবেই এই পদক্ষেপ নিতে পারেন, তা হলে ডব্লিউডব্লিউএফকে ট্যাগ করে জানান আপনি কী করলেন।’’
আতঙ্কের মাঝে রোহিতও গৃহবন্দি। কোয়রান্টিনে থেকে ঘর পরিষ্কার থেকে জামাকাপড় কাচার দায়িত্বও নিতে হয়েছে তাঁকে। কেভিন পিটারসেনকে ভিডিয়ো চ্যাটে রোহিত বলেন, ‘‘কত দিন পরে ঘর পরিষ্কার করেছি মনে করতে পারছি না। ঘর পরিষ্কার করতে মোট দু’ঘণ্টা লেগেছে।’’