মরিয়া: ফাঁকা মাঠেও আইপিএল খেলতে রাজি ঋদ্ধিমান। ফাইল চিত্র
লকডাউন হলেও বাড়িতে বসে সময় নষ্ট করতে পারবেন না ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। নিজেদের ফিটনেসের মাপকাঠি যে পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন, শারীরচর্চা বন্ধ করে বাড়িতে বসে থাকলে এত দিনের পরিশ্রম বৃথা হয়ে যাবে। তাই অধিনায়ক বিরাট কোহালি বেছে নিয়েছেন নিজের অ্যাপার্টমেন্টে সবুজ গালিচায় ঢাকা মাঠকে। সেখানেই চলছে ফিজিক্যাল ট্রেনিং। ভারতীয় টেস্ট দলের উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহারও প্রস্তুতি চলছে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের ছাদে।
সম্প্রতি ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধর কিছু উইকেটকিপিং ড্রিল আপলোড করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে ভারতীয় উইকেটকিপারের। শ্রীধর আবার সেই বিশেষ ড্রিল করার জন্য মনোনীত করেছিলেন ঋদ্ধি, পার্থিব পটেল, ঋষভ পন্থ, দীনেশ কার্তিকদের। ট্রেনারের কথা অমান্য করেননি ঋদ্ধি। তাঁর নির্দেশ মতোই অনুশীলন চলছে তাঁর।
কিন্তু সেই প্রস্তুতির পদ্ধতি অভিনব। যে কোনও স্তরের উইকেটকিপার সেই প্রস্তুতি নিতে পারেন নিজেদের হাত ও চোখের ভারসাম্য (হ্যান্ড-আই কোঅর্ডিনেশন) বাড়ানোর জন্য। কী সেই পদ্ধতি? হাতে দু’টি প্লাস্টিক বল নিচ্ছেন ঋদ্ধি। তা দিয়ে দেওয়ালের কোণের পিলারের সামনে গিয়ে ছুড়ছেন। পিলারে ধাক্কা খেকে বিভিন্ন দিকে উড়ে যাচ্ছে বল। তা ঝাঁপিয়ে ধরছেন ভারতীয় কিপার। এই প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আনন্দবাজারকে ঋদ্ধির ব্যাখ্যা, ‘‘এই ড্রিল যে কেউ করতে পারে। জুনিয়র থেকে সিনিয়র উইকেটকিপার, সবার জন্যই এই পদ্ধতি কার্যকরী। এমন একটি জায়গা বেছে নিতে হবে, যেখানে বড় থাম আছে। সেখানে প্লাস্টিক বল ছুড়তে হবে। বল ধাক্কা খেয়ে যে দিকে আসবে, সে দিকে ঝাঁপিয়েই ক্যাচ নিতে হবে। বেশ কিছু উপকার আছে। হাত ও চোখের ভারসাম্য তো বাড়েই, তার সঙ্গে কোমরের জোরও বাড়ে।’’
লকডাউনে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। ক্রিকেটকে ছেড়ে থাকতে মন চাইছে না। তিনি চান অন্তত ক্রিকেট যেন শুরু হয়। এমনকি ফাঁকা মাঠে আইপিএল খেলতেও রাজি। তাঁর কথায়, ‘‘সমর্থকদের কথা ভেবে বন্ধ রয়েছে ক্রিকেট। এ রকম বেশি দিন চলতে থাকলে ক্রিকেটারদের সমস্যা হবেই। ফাঁকা মাঠে ম্যাচ খেলতে কোনও অসুবিধা নেই। আইপিএল খেলতেও রাজি। শুধু ক্রিকেট শুরু হোক।’’
করোনা পরবর্তী ক্রিকেটে বেশ কিছু পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। যেমন বল পালিশের ক্ষেত্রে থুতু অথবা ঘামের ব্যবহার করা যাবে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, ক্রিকেটারদের নাম লেখা জলের বোতল থাকবে। কিন্তু উইকেটকিপারদের জন্য বিশেষ কোনও নিয়ম হবে কি? ঋদ্ধির ধারণা, ‘‘আমরা উইকেটকিপিং করার সময় খেয়াল করি না, কখন নিজেদের চোখে, মুখে হাত চলে যায়। মাঠে নামার পরে এ ধরনের কিছু নিষেধাজ্ঞা আদৌ মানতে পারব কি না, জানি না। তবে সচেতনতাই সবার আগে। সে ভাবেই নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে।’’
লকডাউনে বাড়িতে ভালই সময় কাটছে ঋদ্ধির। মেয়ে আনভি, সদ্যোজাত পুত্র অনভয়কে নিয়ে আনন্দে সময় কেটে যাচ্ছে। বলছিলেন, ‘‘এত দিন টানা বাড়িতে থাকার সুযোগ হয়নি। স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গে এতটা সময় কাটাতে পেরে সত্যি খুব ভাল লাগছে। লকডাউন বেশ উপভোগ করছি। ঘরের টুকটাক কাজ করতে হচ্ছে। ছেলেকে ঘুম পাড়াচ্ছি। খেলছি। সুখেই আছি।’’