—ফাইল চিত্র
বাংলার সিনিয়র দলের নির্বাচক নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে প্রশ্ন উঠেছে প্রবাল দত্তকে নিয়ে। মাত্র একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। মাত্র একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার সুবাদে রাজ্য দলের নির্বাচক হওয়ার ঘটনায় কী করে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা হইহই করে অনুমোদন করে দিল, তা চরম বিস্ময়ের।
একা প্রবাল দত্ত নন, সিএবি-র ঘোষণা করা বাংলার নতুন নির্বাচকমণ্ডলীতে রয়েছেন আরও একজন প্রাক্তন ক্রিকেটার, যাঁর মাত্র একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি জিতেন্দ্র সিংহ। তিনি অবশ্য আগে থেকেই নির্বাচকমণ্ডলীতে ছিলেন।
বুধবার সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভায় দুই নতুন নির্বাচককে বেছে নেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে একজন প্রবাল। দ্বিতীয়জন অলোকেন্দু লাহিড়ী। তাঁরা কাজ করবেন নির্বাচক প্রধান শুভময় দাস, অজয় দাস ও জিতেন্দ্র সিংহের সঙ্গে। নির্বাচক হিসেবে জিতেন্দ্রকে বেছে নেওয়া হয় এ বছরই বিশেষ সাধারণ সভায়।
আরও পড়ুন: অনুশীলন শুরু রোহিতের, ফিল্ডিংয়ের ছবি সাড়া ফেলল নেটদুনিয়ায়
আরও পড়ুন: নতুন বছরের উপহার, এবার থেকে ‘স্যর’ লুইস হ্যামিল্টন
যদিও লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নির্বাচক হতে তাঁদের সমস্যা নেই। সুপারিশে বলা আছে, প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেই রাজ্য দলের নির্বাচক হতে পারবেন। তা বলে নিয়মে আটকাচ্ছে না বলে মাত্র একটি ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতা থাকা প্রাক্তনকে কী করে নির্বাচকের পদে বসিয়ে দিতে পারে সিএবি? এমন প্রশ্ন উঠছে। সাম্প্রতিক অতীতে বাংলার নির্বাচক হিসেবে কাজ করে গিয়েছেন সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অশোক মলহোত্র, রাজু মুখোপাধ্যায়, পলাশ নন্দীর মতো ব্যক্তিত্বেরা। ১৫৬টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছিলেন অশোক মলহোত্র। সঙ্গে ৭টি টেস্ট, ২০টি ওয়ান ডে। ৭৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে সম্বরণের। বাংলাকে রঞ্জি ট্রফিও দেন তিনি। রাজু মুখোপাধ্যায় খেলেছেন ৫০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। ৫৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন পলাশ। এই যেখানে ইতিহাস, মাত্র এক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দুই ক্রিকেটারকে কী করে নির্বাচক করা হল? হালফিলে কয়েক জন নির্বাচক কমিটিতে এসেছেন, যাঁরা খুব কম খেলেছেন। এমনকি জাতীয় নির্বাচক কমিটিতেও কম টেস্ট বা ওয়ান ডে খেলা প্রাক্তদনের স্থান হওয়া নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু এক ম্যাচ খেলা কাউকে নিয়ে আসাটা সম্ভবত অ্যাডিলেডের ৩৬-এর মতোই সর্বকালীন ‘রেকর্ড’।
যে দু’জন মেয়াদ শেষ হওয়ায় সরে গেলেন, তাঁরা বাংলার ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য নাম— পলাশ নন্দী ও সাগরময় সেনশর্মা। এ বারে যে কমিটি হয়েছে, তাতে খুব প্রতিষ্ঠিত নাম কেউ নেই। অভিজ্ঞ, প্রবীণ কেউ যাঁকে অগ্রজ এবং আদর্শ বলে বর্তমান দলের সদস্যরা মানবেন।
কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, মনোজ তিওয়ারি, অনুষ্টুপ মজুমদারের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের নির্বাচন কী করে এক ম্যাচ খেলা প্রাক্তনরা করবেন?
সিএবি সূত্রে দাবি, সিনিয়র ক্রিকেটারদের অনেকেই লোঢা নিয়মে আটকে গিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচক তাঁরাই হতে পারেন, যাঁরা শেষ পাঁচ বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেননি। আরও বলা হচ্ছে, নির্বাচক হওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার দায়িত্ব অনেকে নিতে চান না। কারণ, দল খারাপ খেললে দোষারোপ করা হয় নির্বাচকদের। কিন্তু দল ভাল পারফর্ম করলে তাঁদের নিয়ে কোনও চর্চা হয় না। তা বলে এক ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার নির্বাচক? প্রহসন!