SC East Bengal

ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি নিয়ে চরম বার্তা লগ্নিকারী প্রধানের

আইএসএলে যদি না খেলে তা হলে কী হবে লাল-হলুদের ভবিষ্যৎ?

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২১ ০৬:৫৩
Share:

ফাইল চিত্র।

ইস্টবেঙ্গল কর্তারা চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর না করলে অষ্টম আইএসএলে দল না নামানোর মতো কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন লগ্নিকারী সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর হরিমোহন বাঙুর! দু’-এক দিনের মধ্যে তা আইএসএল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও দিতে চান তিনি।

Advertisement

রবিবার দুবাই থেকে ফোনে লগ্নিকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্টের প্রধান আনন্দবাজারকে বলে দিলেন, “চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে ওরা(ক্লাব কর্তারা) স্বাক্ষর না করলে কোনও অবস্থাতেই আমরা এ বার আইএসএলে খেলব না। বিষয়টা এখন এমন জায়গায় চলে গিয়েছে, আর আবেগ দিয়ে ভাবলে চলবে না। বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” আইএসএলে খেলার জন্য প্রায় ১৮ কোটি টাকা প্রবেশ মূল্য (এন্ট্রি ফি) দিতে হবে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে। ক্ষুব্ধ লগ্নিকারী সংস্থার প্রধান বলে দিলেন, “ইস্টবেঙ্গল ক্লাব যদি চুক্তিকে সম্মান না করে, তা হলে কেন আমরা অর্থ খরচ করব? আগামী সোম অথবা মঙ্গলবারই আইএসএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার কথা বলার পরিকল্পনা রয়েছে। ওঁদের পরিষ্কার জানিয়ে দেব, চুক্তি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান না হলে কিছুই করা সম্ভব নয় আমাদের পক্ষে।’’ যোগ করলেন, ‘‘আমরা এ বার আর একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি নই। অনেক দিন হয়ে গিয়েছে। চূড়ান্ত একটা সিদ্ধান্ত তো আমাদের নিতেই হবে। বেশি দিন এ ভাবে চলতে পারে না।”

আইএসএলে যদি না খেলে তা হলে কী হবে লাল-হলুদের ভবিষ্যৎ? ইস্টবেঙ্গল কর্তারা এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন। প্রশ্ন উঠছে তা হলে কি ফের আই লিগে খেলতে দেখা যাবে লাল-হলুদকে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সেই সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এগারোটি দলকে নিয়েই আই লিগ আয়োজনের রূপরেখা চূড়ান্ত করে ফেলেছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। তার উপরে করোনার কারণে এ বার আই লিগ অবনমন স্থগিত রেখেছে এআইএফএফ। নেরোকা এফসি-কেও মূল পর্বে খেলার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ফলে দল বাড়ানোর সম্ভাবনা কার্যত নেই।

Advertisement

গত বছর লক্ষ লক্ষ সমর্থকদের উৎকণ্ঠা দূর করে নতুন লগ্নিকারী সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে শেষ লগ্নে আইএসএলে যোগ দিয়েছিল লাল-হলুদ। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই লগ্নিকারী সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তিতে সই করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা। কিন্তু তার পর থেকেই নানা রকম আপত্তি জানাতে শুরু করেন তাঁরা। অভিযোগ করেন, নতুন লগ্নিকারী সংস্থার মূল লক্ষ্য, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ক্ষমতা দখল করা। এই কারণেই প্রাথমিক ও চূড়ান্ত চুক্তির মধ্যে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। এই কর্তাদের দাবি, চুক্তি স্বাক্ষর করলে ক্লাবের সদস্যদের স্বার্থ খর্ব হবে।

ইস্টবেঙ্গলের লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা শুরু থেকেই এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষরিত প্রাথমিক চুক্তিকেই মান্যতা দিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেন, সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে নতুন মরসুমের দল গঠনের প্রক্রিয়াও। বারবার লগ্নিকারী সংস্থার পক্ষ থেকে কর্তাদের বলা হয়েছে, কোথায় তফাত রয়েছে প্রাথমিক ও অন্তিম চুক্তিতে, তা জানান। কিন্তু কর্তারা কিছুই জানাননি। শুধু বলে চলেছেন, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে চিঠর উত্তর দেব। অথচ, এক মাসের উপর চলে গেলেও সেই চিঠির জবাব আজ পর্যন্ত দেননি তাঁরা। কোনও পেশাদারি কাঠামোতে এ ধরনের মনোভাব বিরল।

অনিশ্চয়তার কারণেই গত বার আইএসএলে কোচিং করানো কিংবদন্তি রবি ফাওলার অন্য ক্লাবের প্রস্তাব পেয়ে তা গ্রহণ করার কথা ভাবছেন। মাঠি স্টেনম্যান ইতিমধ্যেই ক্লাব ছেড়েছেন। ভারতীয় ফুটবলারেরাও অন্যান্য ক্লাবের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেছেন। লগ্নিকারী সংস্থার পক্ষ থেকে দু’বার চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, চুক্তি নিয়ে কী সমস্যা রয়েছে জানান। এখনও তার জবাব দিয়ে উঠতে পারেননি কর্তারা। এমনিতেই শতবর্যে লাল-হলুদের মাঠের ফলাফল হতশ্রী। তার উপরে কর্তারা চুক্তি সই নিয়ে গোঁ ধরে বসে থাকায় ক্লাবের ভবিষ্যৎও বিশ বাঁও জলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement