বাবা-মায়ের সঙ্গে নীতু ফাইল চিত্র
কমনওয়েলথ গেমসে বক্সিংয়ে সোনা জিতেছেন নীতু ঘাঙ্ঘাস। ৪৮ কেজি বিভাগে ইংল্যান্ডের ডেমিস-জেড রেজস্তানকে ৫-০ পয়েন্টে হারিয়েছেন তিনি। সোনা জয়ের পরে নীতুর মুখে বাবার কথা। মেয়ের প্রশিক্ষণের যাতে কোনও খামতি না হয় তার জন্য তিন বছর অবেতন ছুটি নিয়েছিলেন হরিয়ানার সচিবালয়ে কর্মরত জয় ভগবান।
নীতু এর আগে যুব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে দু’বার সোনা জিতেছেন। এ বারই প্রথম কমনওয়েলথ গেমসে নেমে সোনা জিতেছেন তিনি। তবে বাবা পাশে না থাকলে বক্সিংয়ে সাফল্য কোনও দিনই পাওয়া হত না তাঁর। তিন বছর কাজ থেকে অবেতন ছুটি নিয়ে মেয়েকে বক্সার বানাবেন বলে উঠে পড়ে লেগেছিলেন তাঁর বাবা। সেই পরিশ্রম অবশেষে সফল হল কমনওয়েলথে সোনা জিতে।
সোনা জেতার পরে তাই বাবার কথা নীতুর মুখে। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বপ্নপূরণ হয়েছে। কিন্তু এই স্বপ্নপূরণের পিছনে সব থেকে বেশি অবদান আমার বাবার। উনি কোনও ত্রুটি রাখেননি। অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন। কিন্তু আমি যাতে সেরা প্রশিক্ষণ পাই সে দিকে লক্ষ্য রেখেছেন। বাবা না থাকলে এই জায়গায় পৌঁছতে পারতাম না।’’
হরিয়ানার ভিওয়ানি জেলার ধনানা গ্রামে জন্ম নীতুর। প্রথমে একেবারেই বক্সিংয়ে উৎসাহ ছিল না। বাবার ইচ্ছেতেই বক্সিংয়ে আসা। বাবার সঙ্গে স্কুটারে রোজ ৭০ কিমি পাড়ি দিতেন ভিওয়ানি বক্সিং ক্লাবে যাবেন বলে। যে কোনও বক্সারের ক্ষেত্রেই ভাল করে দেখভাল করা প্রয়োজন। ভগবান সিদ্ধান্ত নেন কাজ থেকে অবেতন ছুটি নেওয়ার। তবে ব্যাপারটা সহজ ছিল না একেবারেই। সংসার চালাতে এবং নীতুকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হত। সেই সময় আত্মীয়দের থেকে টাকা ধার নেন ভগবান। পাশাপাশি, নিজের একটি ছোট চাষের জমি রয়েছে। সেখানে চাষ করে সংসার চালান।
বক্সিং রিংয়ে প্রতিপক্ষকে রেয়াত না করলেও রিংয়ের বাইরে লাজুক নীতু। কোচ ভাস্কর চন্দ্র ভট্ট তাঁকে ‘গব্বর শেরনি’ বলে ডাকেন। ছাত্রী সোনা জেতার পরে ভাস্কর বলেন, ‘‘নীতু বরাবরই এ রকম। রিংয়ের বাইরে ওর গলা শুনতে পাওয়া যায় না। কিন্তু রিংয়ের ভিতরে ও সিংহীর মতো খেলে।’’