দশ বছর বয়স হল সুইমিং পুলের। তবুও পোশাক বদলানোর একটা ঘর তৈরি হল না এখনও!
রাজ্য ও জাতীয় স্তরের অনেক শিক্ষার্থীই নিয়মিত সাঁতার কাটেন কোলাঘাট সুইমিং সেন্টারে। তবে তৈরির পর দশ বছর কেটে গেলেও এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি পুলে নেই কোনও চেঞ্জিং রুম! এমনকী পোশাক বা ব্যাগ রাখারও কোনও নির্দিষ্ট জায়গা নেই সেখানে। এর ফলে বেশি অসুবিধেয় পড়ছেন মেয়েরা। মাথার উপর ছাউনি না-থাকায় গ্রীষ্ম ও বর্ষা কালে সমস্যায় পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের।
১৯৮২ সালে এশিয়ান গেমসে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন সাঁতারু সঞ্জীব চক্রবর্তী। তিনি অনুশীলন করতেন কোলাঘাটের এই পুকুরেই। আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁর সাফল্যের পরেই সাঁতার নিয়ে উৎসাহ তৈরি হয় এলাকায়। সঞ্জীববাবুর তত্ত্বাবধানে সেখানে সাঁতারের প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন অনেক যুবক। সাফল্যেও পান বেশ কয়েক জন। এর পরেই পুকুরটি বাঁধানোর জন্য ২৫ কোটি টাকা মঞ্জুর করেন তৎকালীন স্থানীয় সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। সেই টাকাতেই ২১ মিটার লম্বা, ৫০ মিটার চওড়া সুইমিং পুলটি তৈরি হয়। পুল তৈরি হলেও চেঞ্জিং রুম, জিমন্যাসিয়াম ও ছাউনি তৈরি হয়নি সে সময়। সেন্টারের উদ্বোধনে এসে এ সমস্ত কিছুই তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। তবে দশ বছরে পুলের পরিকাঠামোর একটুও উন্নতি হয়নি। ২০১৫ সালে সুইমিং সেন্টারের এক অনুষ্ঠানে এসে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৩৪ লক্ষ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের সভাপতি ও তৎকালীন স্থানীয় সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। সেই টাকার ব্যাপারে আবেদন করেছেন পুল কর্তৃপক্ষ। টাকা পেলে অনেক কাজই সম্পূর্ণ করা যাবে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
এই পুলে স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বাছাই শিবির আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠিত হয় জেলার অধিকাংশ সাঁতার প্রতিযোগিতাও। সেন্টারের সম্পাদক সঞ্জীববাবু বলেন, “ছোটদের কথা ভেবে এ বছরই ১০ মিটার লম্বা ও চওড়া একটি কিড্স পুল বানানো হয়েছে। তবে চেঞ্জিং রুম ও ছাউনি না থাকায় অসুবিধেয় পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।” সহ-সম্পাদক রবিন কাপড়ির কথায়, “বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন। বিডিও অফিসের ভিতরে ব্যবহারের জন্য একটি ঘর পাওয়া গেলেও সুইমিং পুল থেকে তা অনেক দূর। তাই অফিসের কাজ ছাড়া কিছুই হয় না সেখানে।” জেলায় সাঁতারের ক্ষেত্রে পরিকাঠামো উন্নয়নে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (ট্রেজারি) প্রশান্ত অধিকারী। তাঁর কথায়, “সুইমিং সেন্টারের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য জেলাশাসকের মাধ্যমে ক্রীড়া দফতরের কাছে আবেদন করলে দফতরে পাঠিয়ে দেব আমরা।”