— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
অলিম্পিক্সে ছেলেদের ফুটবল শুরুর দিনেই আর্জেন্টিনার ম্যাচ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মেয়েদের ফুটবলেও ব্যতিক্রম হল না। অলিম্পিক্সে শুরু হয়ে গেল ড্রোন-বিতর্ক। নিউ জ়িল্যান্ডের অনুশীলনে ড্রোন নিয়ে চরগিরি করার অপরাধে দলের সহকারী কোচ এবং বিশ্লেষককে বাড়ি পাঠিয়ে দিল কানাডা ফুটবল সংস্থা। সে দেশের কোচ নিজেই নিজেকে এক ম্যাচের জন্য নির্বাসিত করলেন।
কানাডার মহিলা দলের কোচ বেভ প্রিস্টমান জানিয়েছেন, নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে থাকবেন না তিনি। প্রশিক্ষণ দেবেন সহকারী কোচ অ্যান্ডি স্পেন্স। স্বেচ্ছায় তিনি এই কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রিস্টমান। সহকারী কোচ জেসমিন মান্ডার এবং যিনি ড্রোন নিয়ে বিপক্ষের অনুশীলন রেকর্ড করছিলেন, সেই জোসেফ লম্বার্ডিকে দেশে ফেরানো হয়েছে।
এক বিবৃতিতে প্রিস্টমান বলেছেন, “দু’দলের স্বার্থে এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নিউ জ়িল্যান্ড ম্যাচে আমি কোচিং না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গোটা দলের পক্ষ থেকে নিউ জ়িল্যান্ড এবং কানাডার ফুটবলারদের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। আমাদের দলের মূল্যবোধের সঙ্গে এই ঘটনা খাপ খায় না।”
পরে সাংবাদিকদের সামনে প্রিস্টমান বলেছেন, “কোনও ব্যক্তিবিশেষের উপরে দোষ চাপাতে চাই না। গোটা ঘটনা এখনও পুরোপুরি জানার চেষ্টা করছি। ধীরে ধীরে সব প্রকাশ্যে আসছে। আপাতত সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।”
ফিফা জানিয়েছে, তাদের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কানাডাও জানিয়েছে, তারা স্বাধীন ভাবে এই ঘটনার তদন্ত করছে।
অতীতে ড্রোন-বিতর্কে জড়িয়েছিল কানাডার পুরুষ দলও। ২০২১ সালে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনকারী ম্যাচের আগে মাঠের উপরে একটি ড্রোন দেখে অনুশীলন থামিয়ে দিয়েছিল হন্ডুরাস। ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে নিউ জ়িল্যান্ড এবং কানাডার মহিলা ফুটবল দল। এক সপ্তাহ আগে প্যারিস পৌঁছে গিয়েছিল দু’দলই। গত সোমবার নিউ জ়িল্যান্ডের মহিলা দলের অনুশীলনের সময় মাঠের উপর একটি ড্রোন উড়তে দেখা গিয়েছিল।
মাঝেমাঝে ড্রোনটি মাটির কাছাকাছিও নেমে এসেছিল। ড্রোনের উৎপাতে বিঘ্নিত হয়েছিল নিউ জ়িল্যান্ডের অনুশীলন। ফুটবলারেরা ঠিক মতো অনুশীলন করতে না পারায় বিরক্ত নিউ জ়িল্যান্ড শিবির প্রথমে প্যারিসের অয়োজক কমিটি এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল।
নিউ জ়িল্যান্ডের অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল প্যারিস পুলিশ। অনুমতি না নিয়ে ড্রোন ব্যবহারের জন্য আটক করা হয়েছিল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে। জানা গিয়েছিল, নিউ জ়িল্যান্ডের অনুশীলনে বিঘ্ন ঘটানো ড্রোনটি ওড়াচ্ছিলেন কানাডার মহিলা ফুটবল দলের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি। পরে তাঁর নাম প্রকাশ্যে আসে। তিনি প্রতিপক্ষ শিবিরের গোপন তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছিলেন। কানাডার মহিলা ফুটবল দলের পক্ষ থেকে তাঁকে গুপ্তচরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কি না, জানা যায়নি। নিরাপত্তাকর্মীদের নজর এড়িয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কী ভাবে ড্রোন ব্যবহার করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর প্রতিযোগিতার প্রথম প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে আইওএ-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল নিউ জ়িল্যান্ড। অনুশীলনে বিঘ্ন ঘটানোর পাশাপাশি অনৈতিক নজরদারির অভিযোগ তোলা হয়েছিল। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে। চিঠি দেওয়া হয়েছিল ফিফাকেও।