সেই বিস্ময় ইনিংসের বার্ষিকীতে স্মৃতিচারণ
Brendon McCullum

ম্যাকালামকে সৌরভ: জীবনই পাল্টে যাবে

১৮ এপ্রিল ম্যাকালামের সেই বিধ্বংসী ইনিংসের বারো বছর পূর্ণ হল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২০ ০৩:০৬
Share:

স্মরণীয়: প্রথম বার আইপিএলে কেকেআরের সেই জুটি। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। ফাইল চিত্র

ফিরে যাওয়া যাক ১২ বছর আগে। ভারতীয় ক্রিকেটের বৈপ্লবিক সেই রাতে। আইপিএল শুরুর প্রথম দিনেই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নিয়েছিল ব্রেন্ডন ম্যাকালামের বিধ্বংসী ইনিংস। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গলোরের বিরুদ্ধে ৭৩ বলে ১৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন ম্যাকালাম। অবশ্যই নাইট রাইডার্সের হয়ে। দশটি চার ও ১৩ ছয়ের সৌজন্যে ক্রিকেটবিশ্বকে বুঝিয়ে দেন, নতুন প্রতিযোগিতার সূচনার দিনেই নতুন তারকার আবির্ভাবও ঘটে গিয়েছে।

Advertisement

আজ, ১৮ এপ্রিল ম্যাকালামের সেই বিধ্বংসী ইনিংসের বারো বছর পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষে কেকেআর ডট ইন-এ 'নাইটস আনপ্লাগ্ড' চ্যাট শো’-এ একান্ত আলাপচারিতায় খোলামেলা মেজাজে ছিলেন নাইট কোচ। বলতে দ্বিধাবোধ করলেন না, “সেই রাত আমার জীবন বদলে দিয়েছে।” কিন্তু অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে এ ধরনের একটি ইনিংস উপহার দেবেন, কল্পনাও করতে পারেননি। ম্যাচের রাতে সৌরভই তাঁকে ডেকে বলেন, “তোমার জীবন পুরোপুরি বদলে গিয়েছে।” সেই স্মৃতিচারণায় মগ্ন ম্যাকালাম বলেন, “সত্যি বুঝিনি, সৌরভ ঠিক কী বলতে চেয়েছিল। কিন্তু এখন উপলব্ধি করতে পারি, একশো শতাংশ ঠিক বলেছিল ও। শাহরুখ খানের মতো মেগাস্টারকেও আমি খুব সম্মান করতাম। সে-ও আমাকে বলে যায়, সারাজীবন নাইট রাইডার হয়ে থাকবে তুমি। ১৮ এপ্রিল এলে, এই কথা গুলো আরও বেশি করে মনে পড়ে আমার।”

ম্যাকালামের সেই ইনিংস শুধুমাত্র তাঁকেই তারকা করে তোলেনি, জনপ্রিয় হতে সাহায্য করেছে আইপিএল-কেও। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কোনও ধারণাই ছিল না, আইপিএল কী হতে পারে? ম্যাকালামের সেই ইনিংস ধারণা তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিল। সৌরভের সঙ্গে যখন ওপেন করতে যাচ্ছেন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইশ গজে, কী রকম অনুভূতি হচ্ছিল? ম্যাকালাম বলেন, “সে দিন যতটা স্নায়ুর চাপে পড়েছি, সারা জীবনে কখনও পড়িনি। আইপিএল কী, কেউ জানত না। কিন্তু সারা বিশ্বের নজর ছিল, বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে।” যোগ করেন, ”ব্যাট করতে যাওয়ার সময় বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল মাথার মধ্যে। কেন আমাকেই ওপেন করার জন্য বেছে নিল সৌরভ? ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় প্রতিযোগিতায় কী করে প্রথম বল খেলার সুযোগ আমিই পেলাম? আমি আদৌ এই সুযোগের যোগ্য তো? কিন্তু সেই দেড় ঘণ্টা আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত হয়ে থাকবে। এমনকি আমার পরিবারের কাছেও সেই দিনটি বিশেষ।”

Advertisement

আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় আইপিএল? আলোচনাই নেই, বলছে বোর্ড

ম্যাচ শেষে ম্যাকালামের মনে হয়েছিল, অবিশ্বাস্য কিছু করে ফেলেছেন। তাঁর কথায়,“দলের প্রত্যেকে যদি আমার পাশে না থাকত, তা হলে এই ইনিংস খেলা সম্ভব হত না। মাঝে মধ্যে সেই দিনের কথা মনে পড়ে। তখন নিজেকে প্রশ্ন করি, কতটা ভাগ্যবান আমি?”

করোনা আতঙ্কে সারা বিশ্ব এখন গৃহবন্দি। ম্যাকালামও নিজের পরিবারের সঙ্গেই রয়েছেন। সারা দিন কী ভাবে কাটাবেন, তা লিখে রাখছেন সকালেই। সেই সূচি অনুযায়ী চলছে তাঁর জীবনযাপন। নিয়মিত ওয়ার্কআউট করছেন। তা ছাড়া, গান শোনা, বই পড়া তো রয়েইছে। নাইট কোচও সচিন তেন্ডুলকরের দেখানো পথে হাঁটছেন। টেস্ট ক্রিকেটের চোখে দেখতে শুরু করেছেন এই লকডাউন। যেখানে একটি করে সেশন কামড়ে পড়ে থাকা খুব জরুরি। লকডাউনের মধ্যে একটি করে দিনই যেন একটি করে সেশন ম্যাকালামের কাছে। বলছিলেন, “সচিনের সঙ্গে আমি একমত। এই মুহূর্তে প্রত্যেক দিনই একটি করে সেশনের মতো। এই অতিমারির বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে হলে বাড়ি থেকে বেরোনো চলবে না। বাড়ির কাজ করা যাক। সারা বছর যা করা হয় না আমাদের। একদিন ওয়ার্ডরোব পরিষ্কার করলাম, তো অন্য দিন জামাকাপড় ধুলাম। রান্না করলাম এক দিন। এ ভাবেই চলুক না আস্তে আস্তে।”

আরও পড়ুন: ট্রেনিং করছেন, রান্না করছেন, কাপড় কাচছেন... রোহিতের রোজনামচার ভিডিয়ো ভাইরাল

নাইটদের স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং ট্রেনার ক্রিস ডোনাল্ডসনের দেওয়া সূচি ও মেনেই নাকি ওয়ার্কআউট করেন ম্যাকালাম। বলেছেন, “আমি নিজেই যদি ট্রেনারের দেওয়া সূচি মেনে না চলি, তা হলে ক্রিকোটারদের কী ভাবে বলব? তাই ট্রেনিং থামানোর কোনও পরিকল্পনাই নেই।”

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement