খেলার আগে সাংবাদিক বৈঠকে প্রতিদ্বন্দ্বী জেক পলের (ডান দিকে) সামনে মাইক টাইসন (বাঁ দিকে)। ছবি: রয়টার্স।
২০ জুলাই হওয়ার কথা ছিল এই ম্যাচ। কিন্তু আলসারের কারণে তখন নামতে পারেননি মাইক টাইসন। এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন এই বক্সার। শনিবার রিংয়ে নামতে চলেছেন তিনি। ৫৮ বছরের টাইসনের প্রতিদ্বন্দ্বী ২৭ বছরের জেক পল।
২০০৫ সালে শেষ বার বক্সিংয়ের কোনও প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন টাইসন। আবার ১৯ বছর পরে দেখা যাবে তাঁকে। খেলা হবে টেক্সাসে। এই খেলার অনুমতি দিয়েছে টেক্সাসের লাইসেন্সিং ও রেগুলেশনস দফতর।
টাইসন ও পলের এই ম্যাচের নিয়মে কিছু বদল করা হয়েছে। দু’জনের মধ্যে আট রাউন্ডের খেলা হবে। প্রতিটি রাউন্ড হবে ২ মিনিটের। দু’জনের বক্সিং গ্লাভসের ওজন বাড়ানো হয়েছে। বক্সারেরা সাধারণত ১০ আউন্স ওজনের গ্লাভস পরেন। শনিবার টাইসনেরা পরবেন ১৪ আউন্স ওজনের গ্লাভস।
টাইসন কী বলছেন?
১৯ বছর পরে রিংয়ে নামলেও তিনি এই লড়াই হারবেন না বলেই জানিয়েছেন। টাইসন বলেন, “এই ম্যাচ আমি হারব না। নিজের উপর ভরসা আছে। আমি জানি আমি কী করতে পারি। বয়স হলেও আমার হাতের জোর একই আছে। আমি কোনও ভাবেই এই ম্যাচ হারব না।”
পল কী বলছেন?
সম্ভবত তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ম্যাচে নামতে চলেছেন পল। তবে আত্মবিশ্বাসী তিনি। পুরনো টাইসনকে দেখতে চাইছেন পল। তিনি মনে করেন, পুরো ১৬ মিনিট ধরে এই ম্যাচ চলবে না। পল বলেন, “আমি পুরো টাইসনকে দেখতে চাই। আমি ওই টাইসনকে চাই যে প্রতিপক্ষকে মেরে ফেলার ক্ষমতা রাখে। জানি আমার সামনে কঠিন লড়াই। তবে আমি আগে থেকেই সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কারণ, আমি টাইসনকে নকআউট করে দেব। একটা যুদ্ধ হবে। এই ম্যাচ পুরো ১৬ মিনিট হবে না।”
কোথায় হবে খেলা?
শনিবার, ১৬ নভেম্বর টেক্সাসের আর্লিংটনের এটি অ্যান্ড টি স্টেডিয়ামে হবে এই ম্যাচ।
কোথায় সরাসরি দেখা যাবে খেলা?
ওটিটি মাধ্যম নেটফ্লিক্সে সরাসরি এই খেলা দেখা যাবে।
ভারতে কখন দেখা যাবে খেলা?
আমেরিকায় শুক্রবার রাতে খেলা হলেও ভারতে শনিবার ভোর সাড়ে ৬টা থেকে দেখা যাবে এই ম্যাচ। প্রথমে দেখানো হবে দুই বক্সারের প্রস্তুতি। তার পরে মূল খেলা শুরু হবে।
টাইসনের কেরিয়ার
১৯৮৫ সাল থেকে পেশাদার বক্সিং শুরু করেছিলেন টাইসন। সেই হিসাবে তাঁর কেরিয়ার ৩৯ বছরের। মাঝে ১৯ বছর খেলেননি তিনি। রিংয়ে তাঁর দাপটের জন্য তাঁকে বক্সিংয়ের ‘লৌহমানব’ বলা হয়। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন ছিলেন তিনি। মাত্র ২০ বছর ৪ মাস ২২ দিন বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তিনি। কেরিয়ারে মোট ৫৮টি পেশাদার ম্যাচ খেলেছেন টাইসন। জিতেছেন ৫০টি। তার মধ্যে ৪৪টি ম্যাচ নকআউটে জিতেছেন টাইসন। তিনি কেরিয়ারের প্রথম ১৯টি ম্যাচই নকআউটে জিতেছিলেন। তার মধ্যে ১২টি ম্যাচ শেষ হয়েছিল প্রথম রাউন্ডেই।
১৯৯২ সালে ধর্ষণে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ছ’বছরের জেল হয়েছিল টাইসনের। জেল থেকে ফিরে আবার বক্সিং শুরু করেন টাইসন। ১৯৯৭ সালে একটি ম্যাচ চলাকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী ইভান্ডার হোলিফিল্ডের কান কামড়ে ছিঁড়ে নিয়েছিলেন টাইসন। ফলে তাঁকে সেই ম্যাচ থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়। রিংয়ে আক্রমণাত্মক খেলার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনে বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন টাইসন। সেই তাঁকেই আরও এক বার দেখা যাবে রিংয়ে।